• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৫
  • " />

     

    স্ট্রিক বললেন, কোয়ার্টার ফাইনাল সম্ভব যদি...

    স্ট্রিক বললেন, কোয়ার্টার ফাইনাল সম্ভব যদি...    

    হিথ স্ট্রিক মে ২০১৪ থেকে বাংলাদেশ দলের বোলিং কোচের দায়িত্বে আছেন। খোলা চোখে তাঁর সময়ে বাংলাদেশের বোলিং উল্লেখযোগ্য উন্নতির পথেই আছে। চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচ নিয়ে ৪০ বছর বয়সী এই জিম্বাবুইয়ান কথা বলেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের প্রতিনিধির সাথে।

     

     

    আল-আমিনকে ফেরত পাঠানোর প্রসঙ্গে...

     

     

    স্ট্রিকঃ ব্যাপারটা দুঃখজনক। কিন্তু আমার মনে হয় আমরা খুব বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হব না। শফিউল আসছে, সে-ও একজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। সামনের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোর মধ্যেই আমরা এখন আমাদের মনোযোগ সীমাবদ্ধ রাখতে চাই।

     

     

    মাশরাফি সেদিনও বলছিলেন যে লেগ কাটারটা আল-আমিন ভালো পারে। শ্রীলংকার বিপক্ষে একাদশে তাঁকে দেখা যেতে পারে। আপনার কি মনে হয় তাঁর অনুপস্থিতিতে বোলিং আক্রমণে কোন ভারসাম্যহীনতা তৈরি হবে?

     

     

    স্ট্রিকঃ অবশ্যই বাঁহাতিদের বিপক্ষে তাঁর রেকর্ড যথেষ্ট ভালো। কিন্তু যেমনটা আমি বললাম বাকিরাও কেউ খারাপ করছে না। রুবেল, তাসকিন, অধিনায়ক মাশরাফি সবাই খুব দুর্দান্ত খেলছে। আমি আত্মবিশ্বাসী যে তাঁরা আমাদের জন্য আবারও দারুণ কিছু এনে দেবে।

     

     

    মেলবোর্নে সর্বশেষ ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ বাংলাদেশের পরিকল্পনায় কোনভাবে ভূমিকা রাখছে?

     

     

    স্ট্রিকঃ সময়ের সাথে উইকেটের গতি বেড়েছে। আরেকটা উল্লেখযোগ্য দিক বড় মাঠ, বড় সীমানা। এসবের সাথে অভ্যস্ত হতেই আমাদের এতো আগে অস্ট্রেলিয়ায় আসা। মেলবোর্ন তো সবচেয়ে বড় মাঠগুলোরই একটি। এখানে চার-ছয় মারাটা কঠিন, তবে দুই-তিন রান নেয়ার প্রচুর সুযোগ থাকে। সেদিনের খেলা দেখে মনে হয়েছে শেষদিকে হাতে কিছু উইকেট রাখাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকা ২০ থেকে ৩০ রান অতিরিক্ত দিয়ছে যেটা তাঁদের জন্য ম্যাচটা খুব কঠিন করে তুলেছিল।  এসব বিবেচনা করেই আমরা আমাদের পরিকল্পনা সাজাচ্ছি।  সবাই উন্মুখ হয়ে আছি। এই উইকেটে সবার জন্যই কিছু আছে। জমজমাট একটা লড়াইয়ের প্রত্যাশাই করছি।

     

     

    মেলবোর্ন রেনেগেডসের হয়ে সাকিবের খেলা বাংলাদেশ দলের জন্য কতোটা কাজে দেবে?

     

     

    স্ট্রিকঃ এটা আমাদের জন্য ইতিবাচক দুটো দৃষ্টিকোণ থেকে। সাকিব নিজে যেমন রেনেগেডসে খেলে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পেরেছে, পাশাপাশি সে অভিজ্ঞতাটুকু দলের অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে পারছে। এটা আমাদের কাছে যথেষ্টই মূল্যবান। আশা করছি ওই অভিজ্ঞতা তাঁকে সাহায্য করবে এবং সে আমাদেরকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটা জিততে সাহায্য করবে।

     

     

    শ্রীলংকা ম্যাচের জন্য বাংলাদেশের প্রস্তুতি কি সন্তোষজনক?

     

     

    স্ট্রিকঃ অনুশীলন তো আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে সেটা মূলত ইনডোর প্র্যাক্টিস। ব্রিসবেনের ইনডোর উইকেটগুলোও কিন্তু দারুণ গতিময়, বাউন্সি ছিল। আমরা সেখানে আমাদের সময়টার সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করত সচেষ্ট ছিলাম। আগেও বলেছি যে আমরা এখানে অনেক আগে এসেছি, প্রচুর ক্রিকেট খেলেছি, অনুশীলনে ঘাম ঝরিয়েছি। প্রস্তুতিতে তাই কোন ঘাটতি আছে বলে আমার মনে হয় না। তাছাড়া আফগানিস্তান ম্যাচে তাসকিন ১৪৫ কিমি/ঘন্টা বেগে বল করেছে, রুবেল ধারাবাহিকভাবে ১৪০ কিমি/ঘণ্টার উপর গতি তুলেছে, মাশরাফিও ধারাবাহিক পারফর্ম করে গেছে। সামনের ম্যাচে তাঁদের কাছ থেকে আমাদের প্রত্যাশাটা আরও অনেক বেশী থাকবে। তবে এই ম্যাচে স্পিনাররাও সুবিধে পাবে বলেই আমার বিশ্বাস।

     

     

    বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা?

     

     

    স্ট্রিকঃ সম্ভাবনা তো আছেই। কিন্তু আপনাকে মাথায় রাখতে হবে যে তাঁরা এই বিশ্বকাপের সবচেয়ে অভিজ্ঞ দুটো দলের একটি। টপ অর্ডারে সাঙ্গাকারা, দিলশানের মতো তারকা ব্যাটসম্যানরা আছেন। আমরা যদি খুব দ্রুত কিছু উইকেট তুলে ফেলতে পারি তাহলে চেপে বসতে পারবো। ইনিংসজুড়ে এমন কিছু ব্রেক থ্রু’র পরিকল্পনা আমাদের কাছে। পরিকল্পনা, পাল্টা-পরিকল্পনা থাকবেই এবং এসবই ক্রিকেটের অংশ।

     

     

    অভিজ্ঞ লঙ্কান ব্যাটিং লাইন আপ তাহলে হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে?

     

     

    স্ট্রিকঃ তাঁদের অবশ্যই খুব ভালো মানের কিছু ব্যাটসম্যান আছে। কিন্তু এই পর্যায়ের তারকারা শুরু থেকেই ভয়ঙ্কর হতে পারেন না। আমাদের পরিকল্পনাটা তাই হবে যত দ্রুত সম্ভব তাঁদের ফেরানো যাতে তাঁরা কোনভাবেই জেঁকে বসতে না পারে। এজন্য আমরা তাঁদের নিয়ে প্রচুর সময়ও ব্যয় করছি।

     

     

    কোয়ার্টার ফাইনালের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়া...দলীয় কৌশলে এমন কোন উদ্দীপনা কাজে লাগানো হচ্ছে কি?

     

     

    স্ট্রিকঃ অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে এক পয়েন্ট আর আফগানিস্তানের সাথে জয়ের পর আমরা জানি যে কোয়ার্টার ফাইনালে যেতে সামনের ম্যাচটা আমাদের জন্য কতোটা গুরুত্বপূর্ণ। ছেলেরা মুখিয়ে আছে খেলার জন্য। তাঁরা খুব ভালো করেই জানে দেশে ষোল কোটি বাংলাদেশী তাঁদের জয়ের প্রার্থনায় মগ্ন আছে। জনগণের এই আবেগটুকু প্রতি তাঁরা শ্রদ্ধাশীল। তাঁরা এখন ভালো খেলার দিকেই সম্পূর্ণ মনোযোগী হতে চায়।