ট্রিপল সেঞ্চুরিও যখন যথেষ্ট নয়...
সেঞ্চুরি করে দল থেকে বাদ পড়াটা দুঃখজনক। ডাবল সেঞ্চুরি করে পরবর্তী ম্যাচে সুযোগ না পাওয়া ভীষণ কষ্টের। কিন্তু আগের ম্যাচে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেও যখন পরেরবার একাদশের বাইরে থাকতে হয়, সেই অনুভূতি কীভাবে ব্যাখ্যা করবেন? ভারতের করুণ নাইর জানেন সেই অনুভূতি কেমন। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০৩ রানে অপরাজিত থাকার পরেও আজকের ম্যাচে একাদশে জায়গা হয়নি তাঁর।
ট্রিপল সেঞ্চুরি করে দল থেকে বাদ পড়ার ঘটনা অবশ্য এটাই প্রথম নয়। নাইরের আগে আরও তিনজন এরকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন। অ্যান্ডি স্যান্ডহ্যাম, স্যার লেন হাটন ও ইনজামাম-উল-হক ট্রিপল সেঞ্চুরি করেও পরবর্তী ম্যাচে খেলতে পারেনি। ১৯৩০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩২৫ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন ইংল্যান্ডের স্যান্ডহ্যাম। পরের ম্যাচে দলের নিয়মিত ব্যাটসম্যানরা ইনজুরি কাটিয়ে ফিরলে জায়গা হারাতে হয় স্যান্ডহ্যামকে। তবে দুর্ভাগ্যক্রমে সেটাই ছিল তাঁর জীবনের শেষ টেস্ট।
অ্যান্ডি স্যান্ডহ্যাম
ইনজামামের ব্যাপারটা একটু ভিন্ন। ২০০২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লাহোরে ৩২৯ রানের অনবদ্য এক ইনিংস খেলেছিলেন। কিন্তু পরের টেস্টটি মাঠে গড়াতে পারেনি, করাচি স্টেডিয়ামের বাইরে বোমা বিস্ফোরণের কারণে ম্যাচটি বাতিল ঘোষণা করা হয়। এরপর অস্ট্রেলিয়া সফরে দলের সাথে গেলেও শেষ পর্যন্ত ইনজুরির কারণে সিরিজ থেকে সরে দাঁড়ান।
লেন হাটনও ইনজুরির কারণে ট্রিপল সেঞ্চুরি করার পরের ম্যাচে একাদশে ঢুকতে পারেননি। ১৯৩৮ সালের ওভালে অনুষ্ঠিত অ্যাশেজের শেষ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩৬৪ রান করেছিলেন তিনি। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচে এরিক ডেভিসের বলে আঘাত পান হাটন। এই কারণেই সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলতে পারেননি। পরে অবশ্য ওই সিরিজেই আরও দুটি সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি।
লেন হাটন
তবে ইনজামাম কিংবা হাটন নয়, নাইরের দল থেকে বাদ পড়ার ব্যাপারটি হুবহু মিলে গিয়েছে স্যান্ডহ্যামের সাথে। অজিঙ্কা রাহানের ইনজুরির কারণেই ইংল্যান্ড সিরিজের শেষের দিকে টেস্ট দলে ডাক পেয়েছিলেন নাইর। রাহানে সুস্থ হয়ে ফিরলে জায়গাটা ছেড়ে দিতে হবে, সেটা আগেই জানতেন নাইর। গতকাল দলের অধিনায়ক কোহলিও বলেছেন একই কথা, “মাত্র একটা ম্যাচে আপনার পারফরম্যান্স অন্য একজনের দুই বছরের কঠিন পরিশ্রমকে আড়াল করতে পারে না। রাহানে দলের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান। সে দলের জন্য যা করেছে সেটা আমরা সবাই জানি। আশা করি নাইর আবারো দলে ফিরবে।”
বড় স্কোর করে দল থেকে বাদ পড়ার ঘটনা কিন্তু আরও আছে। ১৯৬৭ সালে ভারতের বিপক্ষে হেডিংলি টেস্টে জিওফ বয়কট করেছিলেন ক্যারিয়ার সেরা ২৪৬ রান। তবে অতিরিক্ত ‘ধীরগতি ব্যাটিংয়ের’ অভিযোগ এনে পরের ম্যাচে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়। ২০০৬ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নেমে ২০১ রানে অপরাজিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার জেসন গিলেস্পি। কিন্তু পরের ম্যাচেই তাঁকে বাদ দেওয়া হয় বোলিংয়ে খারাপ ফর্মের কারণে। এছাড়াও কেভিন পিটারসন ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলেছিলেন ১৪৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। তবে দলের অধিনায়ক ও কোচকে নিয়ে মেসেজ কেলেঙ্কারির কারণে পরের টেস্টে তাঁকে দলে নেওয়া হয়নি।