হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হাসি পাকিস্তানের
মিসবাহ উল হক আজ রাতটা কিছুটা হলেও শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন। প্রথম দুটো ম্যাচে হেরে যাওয়ার পর চারদিক থেকে ধেয়ে আসা সমালোচনার তীর আর দল থেকে সরে যাওয়ার ধমকি গত কয়েকটা রাত তাঁকে শান্তিতে ঘুমাতে দিয়েছে কিনা সন্দেহ। জিম্বাবুয়ের সাথে আসা কষ্টসাধ্য এই জয়টা শুধু তাঁর জন্যেই নয়, দলের আরও বেশ কিছু খেলোয়াড়ের জন্য স্বস্তির কারণ।
স্কোরবোর্ডের দিকে তাকালে জিম্বাবুয়ের ২০ রানের এই পরাজয়টা হয়তো আলাদা কোন তাৎপর্য তুলে ধরবে না ম্যাচটার। তবে খেলাটা যারা দেখেছেন, তাঁরা জানেন কি পরিমাণ লড়াই করে ম্যাচটা তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে পাকিস্তান।
জিম্বাবুয়ের ইনিংসের বেশিরভাগ সময় জুড়ে পাকিস্তানের জয়টাকে বহুদূরের কোন বস্তু মনে হচ্ছিল, সুস্পষ্ট আধিপত্য বিস্তার করে ম্যাচটা নিজেদের হাতে রেখেই এগুচ্ছিলেন ব্রেন্ডন টেলর(৫০), শন উইলিয়ামসরা(৩৩)। ৩০ থেকে ৪০ ওভার- এ পর্যায়টুকু কাল হয়ে দাঁড়ায় তাঁদের জন্য, এ সময়ের মধ্যে দ্রুত ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর কঠিন হয়ে পড়ে ম্যাচটা। তবুও লড়াই চালিয়ে গেছেন তাঁদের অধিনায়ক এল্টন চিগুম্বুরা(৩৫), তাও কিনা ফিল্ডিংয়ের সময় মচকে যাওয়া পা নিয়ে। পানিয়াঙ্গারাকে সঙ্গী করে একেবারে শেষ ওভার পর্যন্ত চেষ্টা করেছেন তিনি, পানিয়াঙ্গারার খেলা ডট বলগুলোই(১৯) শেষমেশ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। মোহাম্মদ ইরফান ও ওয়াহাব রিয়াজ চারটি করে উইকেট নেন।
পাকিস্তানের ইনিংসের প্রায় পুরোটাই মিসবাহময়। চার ওভারের ভেতরেই দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান বিদায় নেওয়ার পর এসেছিলেন উইকেটে, প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন ৪৭তম ওভারে। ১২১ বলে ৭৩ রানের ইনিংসটা হয়তো বিরক্তি ছড়িয়েছে অনেকের মাঝেই, তবে সতীর্থদের নিয়মিত বিরতিতে উইকেট বিলিয়ে আসার সময়টায় পাকিস্তানের ইনিংসটাকে দাঁড় করিয়ে রাখার পুরো কৃতিত্বটাই কিন্তু পাকিস্তান অধিনায়কের। তাঁর গড়া ঐ ভিত্তির উপর দাঁড়িয়েই কিন্তু শেষদিকে ৪৬ বলে ৫৪ রানের ঝড়ো ইনিংসটা খেলেছেন ওয়াহাব রিয়াজ, যাতে করে ২৩৫ রানের লড়াই করার মত পুঁজিটা পায় তাঁর দল। আগের ম্যাচ তিনটার তুলনায় যথেষ্ট ভালো বোলিং পারফরমেন্স দেখা গেছে জিম্বাবুয়ান বোলারদের কাছ থেকে, বিশেষ করে টেন্ডাই চাতারা তো ছিলেন অসাধারন। ১০ ওভার বল করে মাত্র ৩৫ রান খরচায় তিন-তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন তিনি।
ব্যাটে-বলে অসাধারন পারফর্ম করায় ম্যাচসেরার পুরষ্কারটা ওয়াহাব রিয়াজের হাতেই গেছে। তবে পাকিস্তান দলে ‘এক্স-ফ্যাক্টর’-এর ভূমিকাটা পালন করেছেন নিঃসন্দেহে মোহাম্মদ ইরফান। শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গুরুত্বপূর্ণ উইকেটগুলো তুলে নেওয়াই নয়, প্রথম থেকে জিম্বাবুয়ান ব্যাটসম্যানদের উপর আধিপত্য বিস্তার করা একমাত্র বোলার তিনি। ছবি-সৌজন্যঃএএফপি