রানিয়েরিকে ছাড়াই বদলে গেল লেস্টার
২ মে, ২০১৬। ফুটবলবিশ্বকে চমকে দিয়ে নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মত প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা ঘরে তোলে লেস্টার সিটি। ৭ মাস পর যেই ক্লদিও রানিয়েরিতে বাস্তবায়িত হয়েছিল রূপকথা, সেই রানিয়েরিকেই বরখাস্ত করলো লেস্টার বোর্ড। কিন্তু নতুন যুগের প্রথম ম্যাচেই লেস্টার সিটি যেন বদলে যাওয়া এক দল। রানিয়েরিকে ছাড়া প্রথম ম্যাচে ভার্ডির জোড়া গোলে লিভারপুলকে ৩-১ গোলে হারিয়ে জানিয়ে রাখলো, এত সহজে হাল ছাড়বে না তারা।
রানিয়েরির বিদায়ে হাত ছিল দলের চার তারকার- গুঞ্জনটা ডালপালা ছড়াচ্ছিল গত কয়েক দিন ধরেই। স্মেইকেল, ভার্ডি, মরগান, অলব্রাইটনরা অস্বীকার করলেও সামাজিক মাধ্যমে তাদের রীতিমত ধুয়ে দিয়েছেন সমর্থকেরা। তাই আজকের ম্যাচটা স্মেইকেলদের জন্য ছিল তিন পয়েন্টের চেয়েও বেশি কিছু। অনেক প্রশ্নের ম্যাচে লেস্টার যেন ফিরিয়ে আনলো রানিয়েরির লেস্টারকেই। চ্যাম্পিয়নদের মতই খেলতে থাকা লেস্টারকে লিড এনে দেন গত মৌসুমের মূল নায়ক ভার্ডি। অলব্রাইটনের পাস থেকে ২৮ মিনিটে মিনিওলেকে পরাস্ত করেন শুরু থেকেই লিভারপুল রক্ষণকে তটস্থ রাখা ভার্ডি। নতুন বছরে এটিই ছিল লেস্টারের প্রথম লিগ গোল। এর মিনিট দশেক পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ড্রিঙ্কওয়াটার। ৩৯ মিনিটে ২৫ গজ দূর থেকে দুর্দান্ত এক ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন এই মিডফিল্ডার। কিং পাওয়ার স্টেডিয়ামে ততক্ষণে ফিরে আসে হারিয়ে যাওয়া প্রাণের সঞ্জীবনী শক্তি। সমর্থকদের উৎসাহে উদ্দীপ্ত হয়ে লিভারপুলকে রীতিমত নাচিয়েছেন ভার্ডি, মাহরেজরা। অবশ্য কিপার ক্যাসপার স্মেইকেলের কথা আলাদা করে বলতেই হয়। রানিয়েরির বহিষ্কারের মূল নাটের গুরু ধরা হয়েছিল তাকেই। একের পর এক দারুণ সেভ করে অন্তত পারফরম্যান্স দিয়ে কুলুপ এটে দিয়েছেন নিন্দুকদের মুখে।
ঘড়ির কাঁটা ঘন্টা পেরুতেই লিভারপুলের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন ভার্ডিই। ফুকসের ক্রস থেকে হেড দিয়ে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন এই ইংলিশ তারকা। 'অল রেড'দের বিপক্ষে এটি ছিল ভার্ডির পঞ্চম গোল। দল ফর্মে ফিরলেও প্রিয় গুরুকে ভুলে যায়নি লেস্টার সমর্থকেরা। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে (রানিয়েরির বয়স) সমর্থকদের "রানিয়েরি! রানিয়েরি!!" চিৎকারে ভারী হয়ে ওঠে লেস্টারের আকাশ বাতাস। মোবাইলে ফ্ল্যাশলাইটের আলোয় সমগ্র স্টেডিয়াম আলোকিত করে তোলেন সমর্থকেরা। ৬৮ মিনিটে কৌতিনহো গোল করলেও তা ছিল নিতান্তই সান্ত্বনাসূচক।
চলতি মৌসুমে লিভারপুলের শেষ ৫ হারের ৪টিই এসেছে অবনমনের আশঙ্কায় থাকা দলগুলোর বিপক্ষে। আজকের হারে পরবর্তী মৌসুমে ইউসিএল খেলা নিয়ে শঙ্কার মেঘটা আরো ঘনীভূত হল লিভারপুলের। ২৬ ম্যাচে লিভারপুলের পয়েন্ট ৪৯। ওদিকে নতুন বছরে লিগে নিজেদের প্রথম জয়ে অবনমন থেকে নিরাপদ দূরত্বে সরে আসলো লেস্টার। সমানসংখ্যক ম্যাচে 'নীল শেয়াল' দের সংগ্রহ ২৪ পয়েন্ট।