• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    আলাদা করা গেল না আর্সেনাল-সিটিকে

    আলাদা করা গেল না আর্সেনাল-সিটিকে    

    এমিরেটসে আলাদা করা গেল না আর্সেনাল, ম্যানচেস্টার সিটিকে। ২-২ এ ড্র হয়েছে দুই দলের খেলা। পয়েন্ট ভাগাভাগি হলেও প্রাণবন্ত এক লড়াই দেখেছে প্রিমিয়ার লিগ। গার্দিওলার সিটি দু'বার এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেনি লিড। ঘরের মাঠে দুবার পেছন থেকে ফিরে এসে এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে আর্সেনাল।

    এই ড্র অবশ্য খুশি করতে পারেনি কোনো ম্যানেজারকেই। পয়েন্ট তালিকায় লিভারপুলকে টপকে যাওয়া হল না গার্দিওলার। অন্যদিকে গতকাল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পয়েন্ট হারানোর সুযোগটাও কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়ে আর্সেনাল আছে ছয় নম্বরেই।

    ম্যাচের আগেই আর্সেনাল সমর্থক একটি দলের ওয়েঙ্গার বিরোধী মিছিলে এমিরেটসের পরিবেশটা বেশ অস্বস্তিকর হয়েই উঠেছিল। আর্সেন ওয়েঙ্গারের থাকা না থাকা নিয়ে আর্সেনালের দুই পক্ষের সমর্থকদের বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে। এমন অবস্থায় ম্যাচ শুরুর পাঁচ মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে আর্সেনালের জন্যে পরীক্ষাটা আরও কঠিন হয়ে পড়ে।

    কেভিন ডি ব্রুইনার বাড়ানো লং বল নিজের আয়ত্তে নিয়ে পাঁচ মিনিটের মধ্যেই দলকে এগিয়ে দেন সিটি ফরোয়ার্ড লিরয় সানে। আর্সেনালের জন্য তখন জয় তো দূরেই থাক ম্যাচে ফিরে আসাই কঠিন মনে হচ্ছিল। কিন্তু সব কিছুর বিপরীতে প্রথমার্ধেই ফিরে আসে আর্সেনাল। ওয়েঙ্গারের দলকে সমতায় ফেরান থিও ওয়ালকট। একই ফিকশ্চারে ইতিহাদ স্টেডিয়ামেও আর্সেনালের হয়ে গোল করেছিলেন ওয়ালকট। ডিসেম্বরের সেই ম্যাচের পর প্রিমিয়ার লিগে প্রথম গোলের দেখা পেলেন আজ। 



    'লাইফলাইন' পেয়ে কিছুটা উজ্জীবিতও মনে হয়েছিল আর্সেনালকে। কিন্তু তাও স্থায়ী হয়েছিল মাত্র দুই মিনিট! গোল খেয়ে কিক অফের পর সিটির প্রথম আক্রমণই বারপোস্টে বাধা পেয়ে ফেরত আসলে হাফ ছেড়েই বেঁচেছিলেন আর্সেনাল সমর্থকেরা। কিন্তু লাভ হয়নি! ঠিক মতো বল ক্লিয়ার করতে না পারার মাসুল গুণতে হয়ে গানারদের। সার্জিও আগুয়েরো গোল করে যেন সেই ভুলের শাস্তিটাই বুঝিয়ে দেন আর্সেনালকে। প্রথমার্ধ শেষ হয় ২-১ গোলে।

    প্রথমার্ধেই আরও একবার নিজের দলকে সমতায় ফিরিয়ে আনতে পারতেন ওয়ালকট। সানচেজের ক্রস বক্সের ভেরত খুঁজে পায় ইংলিশ উইঙ্গারকে। দারুণ দক্ষতায় বল নিজের নিয়ন্ত্রণেও নিয়েছিল, তবে ওয়ালকটের করা ভলি চলে যায় ক্যাবিয়ারোর জালের উপর দিয়ে।

    বিরতির পর আর্সেনালকে ম্যাচে ফেরান মুস্তাফি। আর্সেনালের এই গোলটি অবশ্য পুরোটাই 'জার্মান কানেকশন'। ওযিলের কর্নারে মুস্তাফির করা শক্তিশালী হেড ম্যানসিটির জালে প্রবেশ করলে চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আর কোনো উপায়ই ছিল না গোলরক্ষক ক্যাবিয়ারোর। ৫৩ মিনিটে মুস্তাফির ওই গেডের পর অবশ্য মনে হচ্ছিল আরও গোলের দেখা মিলবে বাকি ম্যাচে। কিন্তু দুই দলেরই দূর্ভেদ্য রক্ষণ দেয়াল আর কোনো গোল হতে দেয়নি ম্যাচে। ফার্নান্দিনহো, আগুয়েরোদের গোলমুখী শটগুলো বাধা পেয়েছে আর্সেনাল গোলরক্ষক ওস্পিনার হাতে। অন্যদিকে সিটির রক্ষণও দারুণভাবেই সামলেছে আর্সেনালের আক্রমণগুলো। তাই দিনশেষে ম্যাচ শেষ হয় পয়েন্ট ভাগাভাগিতেই।

    দ্বিতীয়ার্ধে অনুমিতভাবেই অলিভিয়ের জিরুকে মাঠে নামিয়েছিলেন আর্সেন ওয়েঙ্গার। ৬৮ মিনিটে মাঠে নামার পর তিনিও আলাদা করতে পারেননি দুই দলের ভাগ্য। তবে আক্রমণের ধার বেড়েছিল আর্সেনালের। শেষ দিকে এসে ফরোয়ার্ড সিলভাকে তুলে রাইটব্যাক জাবালেতাকে নামাতে তাই একরকম বাধ্যই হয়েছিলেন গার্দিওলা।

    ম্যাচের শেষ দিকে অবশ্য ম্যানসিটির একটি পেনাল্টি আবেদন ড্র হতে যাওয়া ম্যাচে উত্তাপ ছড়িয়েছিল। নাচো মনরিয়েলের বিরুদ্ধে করা সিটির সেই পেনাল্টি আবেদনে সাড়া দেননি রেফারি। পরে অবশ্য টিভি রিপ্লেতে দেখে হ্যান্ডবলই মনে হয়েছে। ম্যাচ শেষে তাই আফসোসটা একটু বেশিই ভোগাবে গার্দিওলাকে!