টটেনহামের ফিরে আসার রাতে শিরোপার আরও কাছে চেলসি
ডেভিড সিলভার কর্নার থেকে গোল করতে না পারাটাই হয়তো বেশি বিস্ময়ের। কিন্তু কীভাবে যেন পোস্টের দুই হাত দূরত্ব থেকে জন স্টোনস বলটা উড়িয়ে মারলেন বাইরে। তাতেই নিশ্চিত হয়ে গেল, পেপ গার্দিওলার সঙ্গে দুইবারই শেষ হাসি হাসলেন আন্তোনিও কন্তে। শিরোপার আরেকটু কাছাকাছিও চলে গেল চেলসি, তবে কাল প্রিমিয়ার লিগে সবচেয়ে বড় শিরোনাম লিখেছে টটেনহামই। ৮৭ মিনিট পর্যন্ত পিছিয়ে থেকেও সোয়ানসিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে এখনো বাঁচিয়ে রেখেছে শিরোপার আশা। বোর্নমাউথের সাথে ২-২ গোলে ড্র করে বড় ধাক্কা খেয়েছে লিভারপুল, ওয়েস্ট হামকে ৩-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে আর্সেনাল।
স্টামফোর্ড ব্রিজে প্রথমার্ধটাই ছিল দারুণ জমজমাট। কদিন থেকেই শোনা যাচ্ছে, এই মৌসুম শেষেই রিয়াল মাদ্রিদে পাড়ি জমাবেন এডেন হ্যাজার্ড। রিয়াল কেন তাঁকে নিতে চায়, আরেকবার দেখিয়েছেন বেলজিয়ান উইঙ্গার। অবশ্য ম্যাচের প্রথম গোলে তাঁর কৃতিত্বের সঙ্গে উইলি কাবেয়ারোর ব্যর্তথাও দায়ী। দারুণ এক প্রতি আক্রমণ থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর থেকে জোরালো শট করেছিলেন হ্যাজার্ড। সেটা সিটি গোলরক্ষক কাবেয়ারোর সোজাসুজিই এসেছিল, কিন্তু তাঁর হাতে লেগে বলটা ঢুকে যায় জালে।
১০ মিনিটে হ্যাজার্ডের গোলের ১৬ মিনিট পর সমতা ফেরায় সিটি। এবারও গোলরক্ষকের ভুলের মাশুল দিতে হয়, এবার 'অপরাধীর' নাম থিবো কোর্তোয়া। দুর্বল ক্লিয়ারেন্স থেকে বল পেয়ে জোরালো শট করেছিলেন সিলভা। কোর্তোয়া ফিরিয়ে দিলেও সেটা এসে পড়ে আগুয়েরোর পায়ে। গোল না করে উপায় ছিল না সিটি স্ট্রাইকারের।
তবে ৩৫ মিনিটে আবার দৃশ্যপটে হ্যাজার্ড। এবার ফ্যাব্রিগাসকে ফার্নান্দিনহো বক্সে ফেলে দেওয়ার পর পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। আগের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করে কাবায়েরো পেনাল্টি ঠেকিয়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি, ফিরতি শটটা জালে জড়িয়ে দিয়েছেন হ্যাজার্ড। শেষ পর্যন্ত ওই গোলই জিতিয়েছে চেলসিকে, এই প্রথম গার্দিওলার সঙ্গে লিগে হোম-অ্যাওয়ে দুজায়গাতেই জিতল কোনো দল। সেই সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে গেল, প্রতিপক্ষের মাঠে প্রথমার্ধে পিছিয়ে থাকার পর কখনো জয় পাওয়া হয়নি সিটির।
তবে টটেনহাম অমন নাটকীয় জয় না পেলে চেলসির রাতটা আরও মধুর হতে পারত। ৮৭ মিনিট পর্যন্ত সোয়ানসির মাঠে পিছিয়ে, আরেকটি পরাজয় মনে হচ্ছিল নিয়তি। কিন্তু এরপরেই শুরু ফিরে আসার। ৮৮ মিনিটে ডেলে আলি সমতা ফেরালেন। অতিরিক্ত সময়ে হিউং মিং সন ও ক্রিস্টিয়ান এরিকসেনের আরও দুই গোলে নিশ্চির হয়ে গেল জয়। ৭২ পয়েন্ট নিয়ে চেলসি আছে ওপরে, ৬৫ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে টটেনহাম।
বড় জয় পেয়েছে আর্সেনালও, দ্বিতীয়ার্ধে গোল করেছেন মেসুত ওজিল, থিও ওয়ালকট ও অলিভিয়ের জিরু। আবারও ছোট ক্লাবের সঙ্গে পয়েন্ট হারানো অব্যাহত রেখেছে লিভারপুল। বোর্নমাউথের সঙ্গে জিতেই যাচ্ছিল রেডরা, কিন্তু শেষ মুহূর্তে অ্যান্ডি কিংয়ের গোলে অ্যানফিল্ডে সমতা ফিরিয়েছে বোর্নমাউথ। ৩১ ম্যাচে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে লিভারপুল আছে তিনে, ৩০ ম্যাচে ৫৮ পয়েন্ট নিয়ে চারে সিটি। ২৯ ম্যাচে ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে আর্সেনাল, সমান পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে ম্যান ইউনাইটেড।