'মাশরাফি জানে কখন বিদায় বলতে হয়'
টি-টোয়েন্টি থেকে মাশরাফি বিন মর্তুজার আচমকা অবসরের জন্য তাঁকে দায়ী করছেন অনেকেই। মাশরাফিসহ একাধিক সিনিয়র খেলোয়াড়কে তিনি দলে চান না- এমন অভিযোগও উঠছে আজকাল। দলের ওপর একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন বলেও শোনা যায়। তবে এ সব অভিযোগই নাকচ করে দিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলছেন, তিনি যা-ই করছেন সেটা এ দেশের ক্রিকেটের মঙ্গলের জন্যই। ক্রিকইনফোর সাথে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।
মাশরাফির হুট করে অবসর নেয়াতে অবাক হন নি জানিয়ে হাথুরুসিংহে বলছেন মাশরাফি সঠিক সময়েই সঠিক সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন, “আমি অবাক হই নি। খেলোয়াড় আর কোচিং স্টাফদের কাছ থেকে মাশরাফি সবসময়ই অনেক শ্রদ্ধা পেয়ে এসেছেন। এটা সে আদায় করে নিয়েছে। তাঁর মতো খেলোয়াড়রা জানে কখন বিদায় বলতে হয়। আমি মনে করি সেটাই হয়েছে। মাশরাফি চিন্তা করে দেখেছে যে টি-টোয়েন্টিতে তাঁর সামনে করার মতো খুব বেশি কিছু আর অবশিষ্ট ছিল না। সে এই সিরিজটাকেই অবসর ঘোষণার জন্য সেরা বলে মনে করেছিল। হ্যাঁ এটা ঠিক যে টসের সময় সে এই ঘোষণা দেবে এটা আমি আশা করি নি। কিন্তু আমি মনে করি সে সঠিক সময়েই কাজটা করেছে। কারণ একজন ভালো খেলোয়াড় যে কোনো একটি কারণে বিদায় নেবে- যখন তাঁদের পারফরম্যান্স আর ভালো হচ্ছে না অথবা যখন তাঁরা সামনে করার মতো আর কিছু দেখে না।”
কোচ হিসেবে তাঁকে অতিরিক্ত ক্ষমতাবান ও কর্তৃত্বপরায়ণ বলছেন অনেকেই। হাথুরুসিংহে ব্যাপারটা কীভাবে নিচ্ছেন? নাকি তিনি নিজেও মনে করেন ভালোমত কাজ করার জন্য একজন কোচের অনেক ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন? হাথুরু জবাবটা দিচ্ছেন হাসিমুখেই, “আমি কখনই নিজেকে ক্ষমতাবান বা কর্তৃত্বপরায়ণ মনে করি না। আমি জানি না লোকে কীভাবে এসব বলে...আমি বাংলাদেশের মানুষকে প্রাণবন্ত আর বন্ধুভাবাপন্ন হিসেবেই পাই। আমার কথাবার্তা কখনও কখনও কর্তৃত্বসুলভ মনে হতে পারে। কিন্তু এটা আমার কাজের মধ্যেই চলে আসে। আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হয় এবং সেসব সিদ্ধান্তের দায়ও আমার। কিন্তু ক্রিকেটের বাইরে যদি আপনি আমাকে দেখেন, আমি আরেকজন সাধারণ মানুষই।”
কোচ বলছেন তিনি যা করছেন সেটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের কল্যাণের জন্যই, “আমি মনে করি নিজের কাজের ব্যাপারে আমার বেশ স্পষ্ট ধারণাই আছে এবং আমি বাংলাদেশ দলের কাছ থেকে সেরাটাই বের করে আনতে চাই। আমি বাংলাদেশের ক্রিকেট অন্তঃপ্রাণ সমর্থকদের কিছু দিতে চাই আর খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সেরাটা পেতে চাই। এই কাজটুকু করতে গিয়ে যদি কারও কাছে আমাকে কর্তৃত্বপরায়ণ মনে হয়, আমার তাতে কিছু করার নেই।”