• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৫
  • " />

     

    যে ম্যাচে হারানোর কিছু নেই

    যে ম্যাচে হারানোর কিছু নেই    

    বহুজাতিক কোন টুর্নামেন্টে এমন অভিজ্ঞতা তো টাইগারদের এবারই প্রথম! এক ম্যাচ হাতে রেখেই মিলে গেছে পরের পর্বের টিকিট, এখন কেবল প্রতিপক্ষ নির্ধারণের পালা! সে পরিপ্রেক্ষিতে অবস্থাদৃষ্টে মনে হতে পারে বাংলাদেশভক্তরা খানিকটা দোটানায়ই পড়ে গেছে যে হ্যামিলটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কাল বাংলাদেশের জেতা উচিৎ হবে কি হবে না! জিতে গেলে কোয়ার্টার ফাইনালে মোকাবেলা করতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে, আর হেরে গেলে প্রতিপক্ষ হবে ভারত। বলা বাহুল্য, কোনটিই বাংলাদেশের জন্য সহজ সমাধান নয়। কিন্তু এভাবে ‘বাছাবাছি’র সুযোগই বা এদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা কবে পেয়েছে বলুন!

     

     

    সমর্থকরা যখন এমন ‘মধুর’ সমস্যায় বিচলিত, বাংলাদেশের কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে তখন বলছেন দলের ভাবনায় এখন কেবলই নিউজিল্যান্ড ম্যাচ, “আমাদের মনোযোগটা এখনও এখানেই। এরপর আমরা কোয়ার্টার ফাইনাল নিয়ে ভাববো।”

     

     

    গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে তাহলে ঠিক কি পরিকল্পনা বাংলাদেশের? কোচ বলছেন, “ভালো একটা সূচনা চাই। ম্যাচজুড়ে আমরা সুযোগের অপেক্ষায় থাকবো। আমার বিশ্বাস এমন কিছু করার সামর্থ্য আমাদের আছে যা এখনও করা হয়ে ওঠে নি।”

     

     

    এ বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলা পাঁচ দলের কেউই দুশো’ রানের কোঠা পেরোতে পারে নি। এ ব্যাপারে সতর্ক আছেন বাংলাদেশের কোচও, “তাঁদের শক্তির বিষয়ে আমরা জানি। তাঁদের সত্যিকার অর্থেই ভালো বোলিং আক্রমণ আছে। এই ম্যাচে তাই পুরো ওভার খেলে আসাটাও আমাদের একটা লক্ষ্য হবে।”

     

     

    দু’ দলের মুখোমুখি সর্বশেষ সাত দ্বৈরথের সবক’টিতেই জয়ী দল বাংলাদেশ! তবে টাইগারদের নিজেদের মাঠে খেলা ওইসব ম্যাচের পরিসংখ্যানের বিপরীতে কিউই পেসার ট্রেন্ট বোল্ট সেদিন মনে করিয়ে দিয়েছেন উল্টো চিত্রটাও, “নিউজিল্যান্ডের মাঠে এ পর্যন্ত খেলা ৬ ম্যাচের কোনটিই জিততে পারে নি বাংলাদেশ।”

     

     

    বাংলাদেশের মাঠে দু’ দফায় ‘হোয়াইট ওয়াশ’ হবার লজ্জা না ভুললেও এই মুহূর্তে ‘প্রতিশোধ’ জাতীয় কিছু তাঁর দলের মাথায় নেই বলেই দাবী ম্যাককালামের, “সে ধরণের কিছু এই মুহূর্তে আমরা ভাবছি না। আমরা গুরুত্বপূর্ণ একটা টুর্নামেন্টের মাঝপথে আছি। এখানে প্রতিটা ম্যাচই একেকটা পরীক্ষা। আগামীকালেরটাও এর ব্যাতিক্রম নয়।”

     

     

    অতীত পরিসংখ্যানে ভয় না পেলেও বাংলাদেশের বর্তমান পেস আক্রমণ নিয়ে শঙ্কার কথা স্বীকার করতে দ্বিধা করেন নি ব্ল্যাকক্যাপ ক্যাপ্টেন, “ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা বাংলাদেশের কয়েকজন দ্রুতগতির বোলারকে দেখেছি। বল হাতে তারা দুর্দান্ত পারফর্ম করেছে। দুই বছর আগের তুলনায় তারা এখন অনেক বেশি পরিণত, অনেক বেশি ভয়ংকর।”

     

     

    সেই সাথে অবশ্য নিজেদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতির কথাও জানাতে ভুললেন না, “জানি তাঁদের পেসাররা আমাদের জন্য জেতাটা কঠিন করে তুলবে। কিন্তু আমরাও প্রস্তুত আছি। এখন পর্যন্ত এ বিশ্বকাপে আমরা বেশ ক’জন ভালো পেসারের মুখোমুখি হয়েছি এবং আমাদের ব্যাটসম্যানরা তাঁদের বেশ ভালোভাবেই সামলেছে।”

     

     

    ম্যাককালাম সমীহের কথা জানালেন সাকিবকে নিয়েও, “আমরা যতবারই বাংলাদেশের সাথে খেলেছি ততবারই সে ভালো পারফর্ম করেছে। আগামীকাল সে আমাদের জন্য একটা বড় হুমকিই হবে। তাঁকে বেঁধে রাখতে আমাদের চেষ্টার ত্রুটি থাকবে না। কিন্তু তারপরও যদি দিনটা তাঁর হয়ে যায়, সুযোগটা সে খুব ভালোমতোই নেবে।”

     

     

    সুযোগ অবশ্য থাকছে গোটা বাংলাদেশ দলের জন্যই, কোয়ার্টার ফাইনালের আগে নিজেদের শক্তিমত্তার জায়গাগুলো পরখ করে নেয়ার। শেষ ম্যাচে ক্যাপ্টেন মাশরাফি বিশ্রামে থাকার সম্ভাবনা প্রবল। তাঁর বদলি হিসেবে পেসার শফিউল বা বাড়তি স্পিনার হিসেবে তাইজুল ইসলাম অথবা বাড়তি ব্যাটিং অলরাউন্ডার হিসেবে মমিনুল হক যে কাউকেই দেখা যেতে পারে। ইমরুল কায়েসের পরিবর্তে সৌম্য সরকার উদ্বোধনী জুটিতে যোগ দিলে এক ম্যাচ বাদে সুযোগ মিলতে পারে নাসিরের সামনেও।