• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৫
  • " />

     

    অস্ট্রেলীয় দুর্গে ভারতের অসহায় আত্মসমর্পণ?

    অস্ট্রেলীয় দুর্গে ভারতের অসহায় আত্মসমর্পণ?    

    টানা সাত ম্যাচে জয়ের ধারা ধরে রেখে ম্যাচটাতে পা রাখছে ভারতীয় দল, ব্যাটিং লাইন-আপটা তাদের বিশ্বসেরা, কালেভদ্রে ধারাবাহিকতার পরিচয় দেওয়া পেস ব্যাটারিটাও গেল কিছুদিন ধরে অবিচ্ছিন্নভাবেই পারফর্ম করে যাচ্ছে। এই সবগুলো হিসেব মাথায় রেখেও বলতে হচ্ছে, দ্বিতীয় ফাইনালিস্ট ধার্যের এ লড়াইয়ের প্রাক্কালে নিশ্চিতভাবেই ভারতীয় ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’-এর দু’চোখের মাঝে ফুটে উঠেছে বেশ কয়েকটা চিন্তার ভাঁজ। হবে নাই বা কেন? প্রতিপক্ষ দলটির নাম যে অস্ট্রেলিয়া, আর লড়াইয়ের ময়দানও যে প্রতিপক্ষেরই এক দুর্গ।

     

     

    সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কোনদিন না হারার রেকর্ডের কথা না হয় বাদই দেয়া হল, শুধুমাত্র সিডনিতে তাদের আধিপত্যের কথা বিবেচনায় নিলেও এ ম্যাচটাতে স্পষ্টই ফেবারিট মাইকেল ক্লার্কের দল। একদিনের আন্তর্জাতিকে অজিদের সবচেয়ে পয়া ভেন্যু বলা যায় সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডকে(এসসিজি)। কমপক্ষে ২০ ম্যাচ খেলেছে তারা, এমন যেকোনো স্টেডিয়ামকে হিসেবে নিলে জয়-পরাজয়ের অনুপাতটা সিডনিতেই সবচেয়ে সমৃদ্ধ তাদের। সর্বমোট ১২৫ ম্যাচ এখানে খেলে ৩৭টিতে মাত্র হেরেছে তারা, জয়-পরাজয়ের অনুপাত ২.২১৬, সাম্প্রতিককালে যেটা আরও বেশি। গেল পাঁচ বছরের রেকর্ড মাথায় নিলে অনুপাতটা দাঁড়ায় ৪.০০। পরিধিটা আরেকটু কমিয়ে তিন বছরে নিয়ে এলে পাওয়া যাবে না কোন অনুপাতই, এ সময়টাতে যে একটা ম্যাচও এখানে হারেনি অজিরা। সিডনিতে তাদের ওয়ানডে পারফরমেন্সটাকে পরিসংখ্যান আকারে দেখা যাক একটু।

     

      ম্যাচ জয় পরাজয় জয়-পরাজয় অনুপাত
    সর্বমোট ১২৫ ৮২ ৩৭ ২.২১৬
    গত পাঁচ বছরে ১২ ৪.০০০
    গত তিন বছরে -

     

    অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়াইটা সবসময়ই যে অন্যতম বাজে অভিজ্ঞতা ভারতীয় দলের জন্য, এটা তো সবারই জানা। বিস্তারটা একটু ছোট করে শুধু সিডনিতে যদি নিয়ে আসা হয়, অভিজ্ঞতাটাকে নিঃসন্দেহে ‘জঘন্য’ বলতেও আপত্তি করবেন না কেউ। ৩৫ বছরে মাত্র একবারই এখান থেকে জয় নিয়ে ফিরতে পেরেছিল ভারত, ধুলো জমতে শুরু করেছে সাত বছর আগে পাওয়া সেই ওয়ানডে জয়ের স্মৃতিতেও। দু’মাস আগে কার্লটন-মিড ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের একটা ম্যাচ কিছুদূর এগুনোর পর বৃষ্টিতে পরিত্যাক্ত হয়, এসসিজিতে দু’দলের শেষ সম্পন্ন দ্বৈরথ হয়েছিল ২০১২-র কমনওয়েলথ ব্যাংক সিরিজে। মাত্র ২৫২ রান পুঁজি করেও ম্যাচটা সেদিন ৮৭ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছিল অজিরা। চলুন একটু দেখে আসি অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতীয় দলের সামগ্রিক পারফরমেন্স

     

      ম্যাচ জয় পরাজয় জয়-পরাজয় অনুপাত
    সর্বমোট ৮৭ ৩৬ ৪৫ ০.৮০০
    অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪২ ১০ ৩০ ০.৩৩৩
    সিডনিতে ১৪ ১২ ০.০৮৩

     

    মাস চারেক আগে এই এসসিজিরই একটা উইকেটে বাউন্সারের আঘাতে মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছিল ফিলিপ হিউজের। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে কথা বলতে এসে কেঁদে ফেলেছিলেন অজি কাপ্তান মাইকেল ক্লার্ক। ভাগ্যের ফেরে ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরের শেষ দুইয়ে পৌছনোর লড়াইয়ের মঞ্চটাও এখানেই। অধিনায়ক হিসেবে সিডনিতে কোন ওয়ানডে না হারার রেকর্ডধারী ক্লার্ককে কাল জয়বঞ্চিত রাখতে হয়তো অসম্ভব কিছুই করতে হবে ধোনির দলকে। ছবি-সৌজন্যঃগেটিইমেজেস