• আইসিসি বিশ্বকাপ ২০১৫
  • " />

     

    'বৈরি' মেলবোর্নে ভীত নন সাউদি

    'বৈরি' মেলবোর্নে ভীত নন সাউদি    

    টানা আট ম্যাচ জিতে প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ড। আর মাত্র একটি জয় এনে দেবে প্রথমবার বিশ্বজয়ের স্বাদ। কিন্তু প্রতিপক্ষ যখন অস্ট্রেলিয়া, ভেন্যু যেখানে মেলবোর্ন...এই একটা জয় যে পিছনের আট জয়ের সবক’টির চেয়ে কঠিন হবে তা বলাই বাহুল্য।

     

    গ্রুপ পর্ব, কোয়ার্টার ও সেমি ফাইনাল- সবই কিউইরা খেলেছে ঘরের মাঠে। তুলনামূলক ছোট মাঠে, গ্যালারিভর্তি নিজেদের দর্শকের সামনে প্রায় প্রতিটা ম্যাচই নিউজিল্যান্ড জিতে আসে দাপটের সাথে। গ্রুপ পর্বে অস্ট্রেলিয়া আর বাংলাদেশ ছাড়া ম্যাককালামদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও সেভাবে গড়ে তুলতে পারে নি কেউ। কোয়ার্টার ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৪২ রানের বিশাল ব্যবধানে উড়িয়ে সেমিফাইনাল; সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে শেষ ওভারের রোমাঞ্চে রুদ্ধশ্বাস জয় নিয়ে ব্ল্যাকক্যাপরা এখন বিশ্বকাপ ফাইনালে।

     

    স্বপ্নের সেই ফাইনালে ম্যাককালামদের প্রতিপক্ষ কাগজে-কলমে ক্রিকেট দুনিয়ার এই মুহূর্তের সবচেয়ে শক্তিশালী দলটিই, ম্যাচটাও যে আবার তাঁদেরই মাঠে! মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে।

     

    এমসিজিতে অনুশীলনে নিউজিল্যান্ড দল

     

    টানা নিজেদের ছোট মাঠগুলোয় খেলে আচমকা মেলবোর্নের বিশাল মাঠ, প্রায় লাখখানেক প্রতিপক্ষের সমর্থক...কিউইরা লড়াই করতে পারবে তো? এমন প্রশ্ন এই মুহূর্তে অনেক ক্রিকেটপ্রেমীরই। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের পেস আক্রমণের পুরোধা টিম সাউদি এমন সন্দেহ হেসেই উড়িয়ে দিচ্ছেন।

     

    তাঁর দলের অর্ধেকেরও বেশী সদস্য ২৯ মার্চের ফাইনালেই প্রথমবারের মতো নামবেন মেলবোর্নের মাঠে। এটাকে কোন সমস্যা মানতেও আপত্তি করলেন সাউদি। জানালেন দেশের বাইরে বড় বড় অনেক মাঠেই তাঁদের এই দল খেলেছে, বিশেষ করে উপমহাদেশে ও মধ্যপ্রাচ্যে।

     

    টুর্নামেন্টজুড়ে সব ম্যাচ নিজেদের দর্শকের সামনে খেলে আচমকাই নামতে হবে মেলবোর্নের ৯০ হাজার দর্শকের সামনে। এই ‘প্রতিকূলতা’ও তুড়ি মেরেই উড়িয়ে দিলেন কিউই পেসার। তাঁর দাবী, বাইরের আর দশটা মাঠের দর্শকদের সাথে তিনি এখানে কোন পার্থক্য দেখছেন না। সঙ্গে যোগ করলেন, আইপিএলে খেলার অভিজ্ঞতা যাদের আছে তাঁদেরকে কোন প্রতিপক্ষই গ্যালারির উত্তাপে ঝলসে দিতে পারবে না।

     

    মেলবোর্ন মাতাতে প্রস্তুত সাউদি

     

    ঘরের মাঠে পাওয়া আরেকটা সুবিধে থেকেও মেলবোর্নে বঞ্চিত হতে হবে সাউদিদের। নিউজিল্যান্ডের উইকেটগুলোতে তাঁদের পেসাররা যেমন সুইং পেয়েছেন তেমনটা মেলবোর্নে পাওয়ার সম্ভাবনা কমই। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২১ উইকেট শিকারি ট্রেন্ট বোল্ট আর ১৫ উইকেটের মালিক টিম সাউদিদের পেস আক্রমণ কি অন্তত এই একটা জায়গায় পিছিয়ে থাকবে না? সাউদি শিকার করছেন, সুইং তাঁদের পেস আক্রমণের অন্যতম হাতিয়ার। তবে সেটা একমাত্র নয় বলেই দাবী ২৬ বছর বয়সী নিউজিল্যান্ডারের, “প্রতি ম্যাচেই যে আমরা সুইং পেয়েছি তা কিন্তু নয়। সেসব ক্ষেত্রেও আমরা উইকেট তুলে নেয়ার উপায় খুঁজে বের করেছি। আমাদের বোলিং বৈচিত্র্যময়। সুইং সেটাকে আরও বিপদজনক করে তোলার একটা অনুষঙ্গ মাত্র। আমার মনে হয় এটাই আমাদের আক্রমণের সৌন্দর্য।”

     

    শুক্রবার স্থানীয় সময় সকালে ফাইনাল ভেন্যুতে প্রথমবারের মতো অনুশীলনে নামে নিউজিল্যান্ড দল। কিউইদের এই দলটিতে ডেনিয়েল ভেট্টরিই সবচেয়ে বেশী সাতবার মেলবোর্নে খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলা ৫ ম্যাচের ৩টিতেই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। অধিনায়ক ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম ও রস টেলর খেলেছেন দু’বার করে। সাউদির সাথে মার্টিন গাপ্টিল, গ্র্যান্ট এলিয়ট, কাইল মিলসরা খেলেছেন একটি করে ম্যাচ।

     

    না ফুটবল নয়, ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনালের জন্যই প্রস্তুত হচ্ছেন উইলিয়ামসনরা!

     

    এই সাতজনই শেষবার এমসিজিতে নেমেছিলেন ২০০৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি। অস্ট্রেলিয়ার ২২৫ রান তাড়া করে নিউজিল্যান্ড সেদিন জিতেছিল ৬ উইকেটে!