অপয়া প্রমাণিত হবেন স্মিথ?
সেমিফাইনালে দুর্দান্ত একটা সেঞ্চুরি করে অস্ট্রেলিয়াকে ফাইনালে নিয়ে গেছেন স্টিভেন স্মিথ। তবে পরশু মেলবোর্নের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া হেরে গেলে কেউ কেউ হয়তো স্মিথকে "দোষ" দিতে পারেন। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে যে দলের খেলোয়াড় সেমিফাইনালে সেঞ্চুরি করেছে, তারা যে ফাইনালে গিয়ে হেরে গেছে! সেই সঙ্গে উল্টোটাও সত্যি, এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপজয়ী দলের কোনো খেলোয়াড়ই সেমিফাইনালে সেঞ্চুরি পাননি।
এই শতকই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়াবে না তো?
বিশ্বকাপের প্রথম কয়েকটি আসরে সেঞ্চুরি ছিল মোটামুটি বিরলপ্রায় একটা বস্তু। প্রথম তিন আসরে সেমিফাইনালে তো কোনো সেঞ্চুরিই হয়নি। সেই গেরোটা এসে কাটে ১৯৮৭ বিশ্বকাপে, ভারতের সঙ্গে সেমিফাইনালে দারুণ এক সেঞ্চুরি করেন গ্রাহাম গুচ। কিন্তু ফাইনালে গিয়ে সেই ইংল্যান্ডই হেরে যায় অস্ট্রেলিয়ার কাছে। মাইক গ্যাটিংয়ের ওই রিভার্স সুইপ না খেললে হয়তো সেবারই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ পায় ইংল্যান্ড।
এরপর ১৯৯২ ও ১৯৯৬ বিশ্বকাপেও সেমিফাইনালে আর কোনো সেঞ্চুরি হয়নি। ১৯৯২ তে মার্টিন ক্রো ৯১ রান করে আউট হয়ে গিয়েছিলেন, গ্রায়েম হিক করেছিলেন ৮৩ । কিন্তু শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয় পাকিস্তানই। ৯৬-তেও সেমিফাইনাল দুইটি ছিল লো স্কোরিং, ভারত-শ্রীলঙ্কার ম্যাচ তো পরে দর্শকের জন্য পণ্ডই হয়ে যায়।
ইতিহাস আবার ফিরে আসে ১৯৯৯-তে। এবার নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সাঈদ আনোয়ারের সেঞ্চুরিতে পাকিস্তান অনায়াসেই উঠে যায় ফাইনালে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার কাছে লর্ডসে রীতিমতো অসহায় আত্মসমর্পণ করে। সেই ধারা বজায় থাকে ২০০৩ বিশ্বকাপেও। এবার সেমিফাইনালে মুখোমুখি ভারত-কেনিয়া, সৌরভ গাঙ্গুলি অপরাজিত থাকলেন ১১১ রানে। কেনিয়ার সঙ্গে সহজে জিতলেও ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে উড়েই গেছে ভারত।
পরের বিশ্বকাপেও একই চিত্রনাট্যের পুনরাবৃত্তি। এবার সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সেঞ্চুরি করে মাহেলা জয়াবর্ধনে শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে যান ফাইনালে। কিন্তু সেখানেও আগের বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি, এবার জেতালেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট। আবারও সেমিফাইনালে সেঞ্চুরিয়ানরা হতাশ করলেন। অথচ উল্টোদিকে দেখুন, প্রথম তিন বিশ্বকাপে তো কথাই নেই, এরপর শিরোপাজয়ী দলের কেউই সেমিফাইনালে সেঞ্চুরি পাননি।
মজার ব্যাপার, সেঞ্চুরিপ্রসবা এই বিশ্বকাপের সেমিফাইনালেও সেঞ্চুরি পাননি নিউজিল্যান্ডের কেউ। নিয়তি কি তাহলে মেলবোর্নে পুরনো ইতিহাসই ফিরিয়ে আনবে?