সাত গোলের থ্রিলারে জিতল আর্সেনাল
প্রায় তিন মাস বিরতির পর প্রিমিয়ার লিগের শুরুটা হল দুর্দান্ত। প্রথম ম্যাচে ঘরের মাঠে দুবার পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত লেস্টার সিটিকে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়েছে আর্সেনাল। ৮২ মিনিট পর্যন্তও ৩-২ ব্যাবধানে পিছিয়ে ছিল আর্সেন ওয়েঙ্গারের দল। দ্বিতীয়ার্ধে আর্সেনাল ম্যানেজারের করা দুই বদলি ঘুরিয়ে দিয়েছে ম্যাচের ভাগ্য। ৮৩ মিনিটে অ্যারন রামসে সমতায় ফেরান আর্সেনালকে। এর দুই মিনিট বাদেই জয়সূচক গোল করে এমিরেটসে আনন্দের উপলক্ষ্য এনে দেন অলিভিয়ের জিরু।
শুক্রবারে কোনো ম্যাচ দিয়ে এবারই প্রথম শুরু হল প্রিমিয়ার লিগের নতুন কোনো মৌসুম। শুরুটাও হল মনে রাখার মতো। ম্যাচের মাত্র ৯৪ সেকেন্ডেই গোল করে বসেন প্রিমিয়ার লিগে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা অ্যালেক্সান্ডার লাকাজেত। এলনেনির ক্রস থেকে মাথা ছুঁয়ে আর্সেনালকে এগিয়ে দেন ফ্রেঞ্চ এই স্ট্রাইকার।
তখনও থিয়েরি অঁরির সাথে লাকাজেতের তুলনা দিতে ব্যস্ত ধারাভাষ্যকাররা। তুলনাটা তো অনুমিতই ছিল। লাকাজেতের মতো প্রিমিয়ার লিগে অঁরির অভিষেকটাও হয়েছিল লেস্টার সিটির বিপক্ষেই! কিন্তু ম্যাচের ৫ মিনিটে হুট করে আর্সেনাল গোল হজম করে বসলে ম্লান হয়ে যায় লাকাজেতের কৃতিত্ব। লেস্টার সিটিকে ম্যাচে ফেরান শিনঝি অকাজাকি। ম্যাচের ৫ মিনিটের ভেতরই স্কোরলাইন দাঁড়ায়, ১-১!
আর্সেনাল সমর্থকদের অবাক হওয়ার মতো ঘটনা তখনও আরও বাকি। গোল হজম করে একের পর এক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিল আর্সেনাল। গোলটাও মনে হচ্ছিল পেয়েই যাবে গানাররা। কিন্তু স্রোতের বিপরীতে আরও এক গোল হজম করে বসে ওয়েঙ্গারের দল। বাঁ দিক থেকে অলব্রাইটনের ক্রস থেকে পাওয়া বল পিটার চেকের জালে জড়িয়ে জেইমি ভার্ডি শুরু করেন তার ‘পার্টি’। দুর্দান্ত শুরু করেও ২৯ মিনিটের মাঝেই পিছিয়ে পড়ে আর্সেনাল।
এরপর দ্বিতীয়ার্ধ শেষের আগেই আবারও ম্যাচে সমতা আনেন ড্যানি ওয়েলবেক। আরেক অভিষিক্ত কোলাসিনাচের পাস থেকে গোল করে। ২-২ প্রথমার্ধ শেষ করে বিরতিতে যায় দুই দল।
৫৬ মিনিটে আর্সেনালকে আবারও পিছিয়ে দেন জেইমি ভার্ডি। মাহরেজের নেয়া কর্নার কিক থেকে এবার হেড দিয়ে গোল করেন ইংলিশ স্ট্রাইকার। দুইজনের দারুণ সমন্বয়ে করা গোল পুরোনো লেস্টার সিটির কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছিল। আর নতুন মৌসুমেও আর্সেনালের পুরনো রুপটাই তখন ভেসে উঠছিল।
পিছিয়ে থেকেও অবশ্য আর্সেনালের আক্রমণভাগ ছিল দুর্দান্ত। কেবল গোলের দেখাটাই পাচ্ছিল না ঘরের দল। ৬৭ মিনিটে ‘ডাবল চেঞ্জ’ করেন আর্সেন ওয়েঙ্গার। একজন ডিফেন্ডার ও মিডফিল্ডারের জায়গায় নামান অ্যারন রামসে ও স্ট্রাইকার অলিভিয়ের জিরুকে। ওই মুহুর্তটাই আসলে বদলে দিয়েছে খেলার ফল।
এমরিটেসে ভর করা চাপা আতঙ্কের হাত থেকে আর্সেনাল সমর্থকদের রেহাই দিয়েছেন এই দুইজনই। তা না হলে ১৯৭৩ সালের পর ঘরের মাঠে প্রথম বারের মতো লেস্টার সিটির কাছে হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হত ওয়েঙ্গারের দলকে।
ওই দুই গোলের আগেও অবশ্য আর্সেনাল সুযোগ তৈরি করেছিল অনেক। কিন্তু কখনও ক্যাসপার স্মাইকেল, কখনও বা মরগান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন লাকাজেতে, অক্সলেড চেম্বাইলাইনদের সামনে।
৮৩ মিনিটে শাকার আউটসাইড অফ দা বুটের পাস দারুণ দক্ষতায় নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বক্সের ভেতর ডান পাশ থেকে গোল করেন রামসে। এর দুই মিনিট পরই আসে জিরুর সেই মুহুর্ত। কর্নার থেকে করা জিরুর হেড টপ কর্নারে বাঁধা পেয়ে গোললাইন পার করলে পুরো তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়ে আর্সেনাল।