• বিশ্বকাপ বাছাই
  • " />

     

    'স্বপ্নের' বিশ্বকাপের আরও কাছে সিরিয়া

    'স্বপ্নের' বিশ্বকাপের আরও কাছে সিরিয়া    

    নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ। যোগ করা সময়ও প্রায় শেষের পথে। ঘড়ির কাঁটা এগোনোর সাথে সাথে ফিকে হয়ে যাচ্ছে বিশ্বকাপের স্বপ্নটাও। তেহরানের স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজারখানেক সিরিয়ান ভক্তের চোখেমুখে রাজ্যের হতাশা। কিন্তু ফুটবল ঈশ্বর হয়তো অন্য কিছুই ভেবে রেখেছিলেন। ম্যাচের একেবারে অন্তিম মুহূর্তে গোল করলেন ৫ বছর পর দলে সুযোগ পাওয়া ওমর আল সোমা। ডাগআউট থেকে ছুটে এলেন ফুটবলার, কোচিং স্টাফ, তাকে ঘিরেই শুরু হল জয়োৎসব। ইরানের সাথে ২-২ গোলে ড্র করে এশিয়া অঞ্চল থেকে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে প্লেঅফ খেলার যোগ্যতা অর্জন করল সিরিয়া, ‘ইতিহাস’ গড়ার পথে একধাপ এগিয়েও গেলো।   

     

    গত কয়েক বছরের যুদ্ধে বিধ্বস্ত স্বদেশ। যেখানে দিনশেষে বেঁচে থাকাই বড় প্রাপ্তি, সেখানে সিরিয়ানদের কাছে ফুটবল খেলা নিতান্তই দিবাস্বপ্ন। বাছাইপর্বের জন্য তাই সিরিয়ান ফুটবল দল মালয়শিয়াকেই নিজেদের ‘হোম ভেন্যু’ হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। গ্রুপের শক্তিশালী দল ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তানের সাথে সমানে সমান পাল্লা দিয়ে পুরো সময়টাই জানান দিয়েছে, তারা শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবে।

     

     

    সত্যিই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করতে হয়েছে সিরিয়াকে। প্লেঅফ খেলার জন্য আগেই বিশ্বকাপ নিশ্চিত করা ইরানের বিপক্ষে দরকার ছিল ড্র।  ম্যাচের শুরুতে তামের হজ মোহামেদের গোলে এগিয়েও গিয়েছিল তারা। কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ইরানিদের হাতে। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে সমতা ফেরান সর্দার আজমুন। ৬৪ মিনিটে এই আজমুনের গোলেই এগিয়ে যায় ইরান। সমতা ফেরানোর কম চেষ্টা করেনি সিরিয়া, তবে কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না।

     

    প্লেঅফ খেলার স্বপ্ন যখন ধূলিসাৎ হওয়ার পথে, ঠিক তখনই দলের ত্রাতা হয়ে আসেন ওমর আল সোমা। ডি বক্সের ভেতর বল পেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় বল জালে জড়ান। শুধু স্টেডিয়াম নয়, গোলের পর আনন্দে ভাসে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের রাস্তাও। পুরো শহরজুড়ে চলে আনন্দ মিছিল।

     

     

     

    আগামী মাসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্লেঅফ ম্যাচে মুখোমুখি হবে সিরিয়া। দুই লেগের এই ম্যাচে জিতে গেলে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের মূল আসরে খেলার আরও কাছে চলে যাবে তারা। এরপর কনকাকাফ অঞ্চলের চতুর্থ স্থানে থাকা দলের সাথে দলের সাথে শেষ প্লেঅফে জয় পেলেই উঠে যাবে বিশ্বকাপে। ১৯৮৬ সালের পর এই প্রথম বিশ্বকাপের এত কাছে চলে গেলো সিরিয়ানরা। সেবার শেষ ম্যাচে গিয়ে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল তাদের।

     

    এদিকে এশিয়া থেকে বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করেছে ইরান, সৌদি আরব, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। সবার আগে বিশ্বকাপের টিকেট নিশ্চিত করা ব্রাজিল এখন পর্যন্ত লাতিন আমেরিকা থেকে বিশ্বকাপে পৌঁছানো একমাত্র দল। ইউরোপ থেকে ২০১৮ বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ রাশিয়ার পর বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত করেছে হ্যাজার্ড, ফেলায়নির বেলজিয়াম। উত্তর আমেরিকা অঞ্চল থেকে মেক্সিকো পেয়েছে বিশ্বকাপের টিকেট।