মেসির হ্যাটট্রিকে কাতালান ডার্বি জিতল বার্সা
কাতালান ডার্বিতে এস্পানিওলকে সহজেই হারিয়েছে বার্সেলোনা। ন্যু ক্যাম্পে নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে বার্সার জয়টা ৫-০ ব্যবধানে। হ্যাটট্রিক করেছেন লিওনেল মেসি। হ্যাটট্রিক পূরণের আগেই অবশ্য বনে গেছেন কাতালান ডার্বির ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা। প্রায় দেড় বছর পর লা লিগায় আবার হ্যাটট্রিকও পেলেন, লা লিগায় যেটি তাঁর ২৭তম। বাকি দুই গোল এসেছে জেরার্ড পিকে ও লুইস সুয়ারেজের কাছ থেকে।
ডার্বি দিয়েই এবারের লা লিগায় প্রথম মাঠে নেমেছিলেন লুইস সুয়ারেজ। উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার ও মেসির সাথে আক্রমণভাগে ছিলেন জেরার্ড ডেলফিউ। ৬৮ মিনিটে ডেলফিউর বদলি হয়েই মাঠে নামেন উসমান ডেম্বেলে। তার আগেই মেসির হ্যাটট্রিকে অবশ্য তিন গোলে এগিয়ে থেকে তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করে ফেলেছিল বার্সা। অভিষেকে গোলের দেখা না পেলেও ডেম্বেলে স্মরণীয় করে রেখেছেন ন্যু ক্যাম্পের ম্যাচটি। ৯০ মিনিটে তার পাস থেকেই বার্সার শেষ গোলটি করেছেন সুয়ারেজ।
প্রতিপক্ষকে বিধ্বস্ত করার ম্যাচে বার্সার হয়ে গোলের খাতা খুলেছিলেন লিওনেল মেসি, ২৬ মিনিটে। ইভান রাকিতিচের পাস ডিবক্সের ভেতর খুঁজে পায় মেসিকে। এক পায়ে বল রিসিভ করে, টার্ন নিয়েও দ্বিতীয় শটে এস্পানিওলের জালে বল জড়ান আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। গোলের পর অবশ্য নিজেও কিছুটা সন্দিহান ছিলেন। লাইনসম্যানের সবুজ সংকেত পাওয়ার পরই উদযাপন করেছেন। কিন্তু টিভি রিপ্লেতে পরে দেখা গেছে, রাকিতিচ পাস দেয়ার সময় অফসাইডেই ছিলেন মেসি!
প্রথম গোলের মতো বার্সার দ্বিতীয় গোলেও ছিল ভাগ্যের ছোঁয়া। ৩৫ মিনিটের ওই গোলের আগে অবশ্য পুরো ম্যাচে দারুণ খেলা রাকিতিচই দুই গোলের লিড এনে দিতে পারতেন দলকে। ৩১ মিনিটে মেসির সাথে ওয়ান টু খেলে ঢুকে পড়েছিলেন বক্সে, কিন্তু তার শট ঠেকিয়ে দেন এস্পানিওল গোলরক্ষক পল লোপেজ। ওই যাত্রা রক্ষা করলেও বেশিক্ষণ দলকে ম্যাচে টিকিয়ে রাখতে পারেননি লোপেজ। এর চার মিনিট পরই জর্দি আলবার পাস থেকে বার্সা ও নিজের দ্বিতীয় গোল করেন মেসি। আলবার পাসে মাঝমাঠ থেকে নিজেই কাটিয়ে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন মেসি। কিন্তু ডিবক্সের ভেতর এস্পানিওল ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বল ফেরত যায় আলবার কাছেই। বাঁ প্রান্ত থেকে এবার ক্রস করেন আলবা। স্লাইড দিয়ে ডান পায়ের ছোঁয়ায় বল জালে জড়ান মেসি।
বড় পরাজয় মেনে নিলেও ম্যাচ শেষে কিছু আফসোস থাকতেই পারে এস্পানিওলের। প্রথম গোলের পরই আসলে ম্যাচে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ হারায় তারা। এরপরও বিরতির আগেই এক গোল শোধ দিতে পারত কিকো সানচেজ ফ্লোরেসের দল। কিন্তু পাবলো পিয়াত্তির বাঁ পায়ের শট ফিরে আসে বার্সার বারপোস্টে লেগে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকেও দারুণ এক সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন পিয়াত্তি। মার্ক আন্দ্রে টার স্টেগানের ভুল থেকে পাওয়া সুযোগটা অবশ্য কাজে লাগাতে পারেননি এই আর্জেন্টাইন। এরপরই ম্যাচের পুরো নিয়ন্ত্রণ চলে যায় বার্সার কাছে। ৬৭ মিনিটে আবারও জর্দি আলবার ক্রস থেকে গোল করে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন মেসি। এর মিনিট চারেক আগেও অবশ্য প্রায় একই জায়গা থেকেই বল পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার শট চলে যায় বারপোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে।
তিন গোলে এগিয়ে থেকে দশ মিনিটের ব্যবধানে ডেম্বেলে, পাউলিনহো ও আন্দ্রে গোমেজকে মাঠে নামিয়ে দেন এর্নাস্তো ভালভার্দে। বার্সা কোচ নিজের সাবেক দলের বিপক্ষে পুরো ৯০ মিনিটই মাঠে খেলিয়েছেন আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালন করে আসা মেসি, সুয়ারেজদের। তবে উঠিয়ে নিয়েছেন তিন স্প্যানিশ; ডেলফু, ইনিয়েস্তা ও বুস্কেটসকে। ৮৭ মিনিটে আরও একবার বার্সাকে এগিয়ে দেন পিকে। রাকিতিচের নেয়া কর্নার থেকে হেড করেন তিনি। আর এর তিন মিনিট পরই মাঝমাঠ থেকে আন্দ্রে গোমেজের দেয়া পাসে বল পেয়ে যান ডেম্বেলে। ডান দিক থেকে থেকে ক্রস করেন সুয়ারেজকে। ম্যাচজুড়ে বেশ কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া সুয়ারেজ অবশেষে এবার বল জড়ালেন জালে। আর তাতেই বড় জয়টা আরও 'বড়' করে উদযাপনের উপলক্ষ্য পেল বার্সা সমর্থকেরা।