মোরাতার হ্যাটট্রিকের দিনে জয় পেল ইউনাইটেড-সিটিও
প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেস্টার সিটির 'বড় জয়' পাওয়াটা যেন অভ্যাসেই পরিণত করেছে। পেপ গার্দিওলার দল ক্রিস্টাল প্যালেসকে হারিয়েছে ৫-০ ব্যবধানে। আর তাতেই এবার এককভাবে লিগের শীর্ষস্থানে উঠে গেছে ম্যান সিটি। নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও জিতেছে। তবে তাদের জয় সিটির মতো এতো সহজ ছিল না। ১-০ গোলে হারিয়েছে সাউদাম্পটনকে। অন্য ম্যাচে আলভারো মোরাতার হ্যাটট্রিকে স্টোক সিটিকে ৪-০ তে হারিয়েছে চেলসি।
দিনটা ছিল আজ স্ট্রাইকারদেরই। শুরুটা করেছিলেন হ্যারি কেইন। জোড়া গোল করে জিতিয়েছেন টটেনহাম হটস্পার্সকে। চেলসির জয়ে সবচেয়ে বড় অবদানটা তো মোরাতারই। সিটির হয়ে গোল পেয়েছেন সার্জিও আগুয়েরো। আর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে স্বপ্নের শুরুটা এখনও চলছে রোমেলু লুকাকুর। বেলজিয়ানের দেয়া একমাত্র গোলেই জিতেছে ইউনাইটেড।
বড় দলগুলো সহজ জয় পেলেও, তিন পয়েন্ট পেতে ঘাম ঝরাতে হয়েছে হোসে মরিনহোর দলকে। ম্যাচ শেষে লুকাকুর উদযাপনই বলে দিচ্ছিল কতোটা কঠিন ছিল সাউদাম্পটনের বিপক্ষে ম্যাচটি। ইউনাইটেড ম্যানেজার মরিনহোর উদযাপন অবশ্য দেখা যায়নি টিভি ক্যামেরায়। শেষদিকে রেফারির আদেশে ডাগ আউট ছাড়তে হয়েছিল তাকে।
অবশ্য শুরুতে মনে হয়েছিল জয়টা সহজই হবে ইউনাইটেডের জন্য। মাত্র ২০ মিনিটে দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন লুকাকু। অ্যাশলি ইয়াংয়ের ক্রস থেকে লুকাকুর করা হেড প্রথমে ঠেকিয়ে দিলেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি গোলরক্ষক ফ্রেজার ফর্স্টার। ফিরতি বলে শট করে লুকাকু বল জড়ান জালে। প্রথমার্ধে এরপর লিড বাড়াতে পারতেন মার্কোস র্যাশফোর্ড। তবে তাঁর নেয়া ফ্রিকিক চলে যায় বারপোস্টের বাইরে দিয়ে।
প্রথমার্ধের ম্যান ইউনাইটেড বিরতির পরই বদলে যায়! দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের মাঠে দাপট দেখিয়ে খেলা শুরু করে সাউদাম্পটন। তবে ইউনাইটেড রক্ষণ দুর্গ ভেঙে ডি গিয়াকে তেমন একটা ঝামেলায় ফেলতে পারেনি তারা। শেষদিকে আরও দুইজন ডিফেন্ডার নামিয়ে মরিনহোও কাজটা কঠিন বানিয়ে দেন সাউদাম্পটনের জন্য। এর আগে অরিয়েল রোমেউ দু'বার গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট না করলে সমতায় ফিরতে পারত সেইন্টরা।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য জয় নিশ্চিত করার ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন বদলি হয়ে নামা অ্যান্ডার হেরেরা। কিন্তু তিনি বল মেরেছেন বারপোস্টের অনেক উপর দিয়ে। আরেকবার লুকাকুকে গোলবঞ্চিত করেছেন ফর্স্টার। এছাড়া দ্বিতীয়ার্ধে তেমন সুযোগই তৈরি করতে পারেনি ইউনাইটেড। এক গোলের জয় নিয়ে তাই দিনশেষে খুব একটা আফসোস থাকার কথা নয় মরিনহোর।
অন্য ম্যাচে ইতিহাদ স্টেডিয়ামে অবশ্য ম্যান সিটির শুরুটা ছিল কিছুটা এলোমেলো। প্রথমেই বারপোস্টে বল লাগিয়েছিলেন ক্রিস্টাল প্যালেসের রুবেন লফটাস চিক। পরে আরও একটি দারুণ সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজে লাগাতে পারেননি। এরপরই আসলে শুরু হয় সিটির গোল উৎসব। শুরুটা করেন লিরয় সানে। প্রথম গোল পেতে সিটিকে অপেক্ষা করতে হয়েছিল ৪৪ মিনিট পর্যন্ত। এরপর বিরতির পর দুই গোল করে ম্যাচটা সহজ করে দেন রাহিম স্টার্লিং। ৭৯ মিনিটে সার্জিও আগুয়েরোও যোগ দেন গোল উৎসবে। ম্যাচশেষের এক মিনিট বাকি থাকতে ফাবিয়াল ডেলফের দূরপাল্লার শট জালে জড়ালে আবারও ৫ গোলের জয় নিশ্চিত হয় সিটির। এই নিয়ে শেষ ৩ প্রিমিয়ার লিগ ম্যাচে সিটির গোল সংখ্যা দাঁড়াল ১৬!
স্টোক সিটির মাঠে শুরু থেকেই ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়েছিল চেলসি। ২ মিনিটের মাঝেই চেলসিকে এগিয়ে দেন মোরাতা। এরপর বিরতির আগেই লিড দ্বিগুণ করেন পেদ্রো। এরপর ৭৮ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে কয়েকজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দেখার মতো এক গোল করেন মোরাতা। এর কয়েক মিনিট পরই আরও এক গোল করে প্রিমিয়ার লিগে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক পূরণ করেন স্প্যানিশ স্ট্রাইকার।