মাঠে নেমে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছিলেন খাওয়াজা!
জন্মভূমি পাকিস্তান হলেও বেড়ে উঠেছেন অস্ট্রেলিয়াতেই। পাঁচ বছর বয়সে অস্ট্রেলিয়াতে পাড়ি জমানো উসমান খাওয়াজার ক্রিকেটের হাতেখড়িও এখানেই। প্রথম মুসলিম ক্রিকেটার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় দলে খেলেছেন খাওয়াজা। এবার খাওয়াজা জানালেন, শৈশবে ক্রিকেট খেলার সময় বর্ণবাদী আচরণের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে!
২০১১ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেক হওয়ার পর খেলেছেন ২৪ টেস্ট। পাঁচ সেঞ্চুরিসহ খাওয়াজার রান ১৭২৮। ঘরোয়া ক্রিকেটের দিনগুলোতে অন্যদের কাছ থেকে খুব একটা ভালো আচরণ পাননি বলেই জানান খাওয়াজা, “প্রতিপক্ষ দলের ক্রিকেটার এমনকি তাঁদের বাবা-মাও স্লেজিং করত। এটা মেনে নেওয়া সত্যি খুব কঠিন ছিল। অনেকে শুধুমাত্র আমাকে শোনানোর জন্যই সেগুলো বলত। উপমহাদেশ থেকে আসা বাবা-মা আমাকে বলতেন, “তোমার গায়ের রঙের কারণে কখনোই জাতীয় দলে সুযোগ পাবে না।” হয়ত তাঁদের কথাগুলো সত্যি ছিল। এসব এখনও আমাকে কষ্ট দেয়, কিন্তু সেটা প্রকাশ করতে চাই না।”
খাওয়াজা বলছেন, অস্ট্রেলিয়া দলের অন্য ক্রিকেটারদের সাথে তার ব্যক্তিত্ব একেবারেই মেলে না, “আমাকে বড় করা হয়েছে সম্পূর্ণ অন্যভাবে। নম্রতা, অন্যকে সম্মান করতে জানা, বিনয়ী; এসব আমার পরিবারের শিক্ষা। কিন্তু যখন অস্ট্রেলিয়া দলকে দেখি, তাঁদের মাঝে আমি এসব খুঁজে পাইনা। তাঁদের ব্যবহার ওরকম মানুষের মতো যারা আমাকে ছোটবেলায় স্লেজ করত। এজন্যই আমার অস্ট্রেলিয়ান বন্ধু খুব কম। বেশিরভাগই অন্য দেশে জন্ম নেওয়া অস্ট্রেলিয়ান প্রবাসী। তাঁরা অস্ট্রেলিয়াকে কোনো খেলায় সমর্থন করত না, আমিও করতাম না।”
যুগ পরিবর্তনের সাথে সাথে এই অবস্থার উন্নতিও হচ্ছে বলে জানা খাওয়াজা, “এখন আমার মতো অনেকেই আছেন। সিডনির গুরিন্দর সাধু, অর্জুন নাইর ভালো এগিয়েছেন নিজেদের দলে। অস্ট্রেলিয়াতে বিশ্বের বহু দেশের মানুষ বাস করে। সেখানে খেলাধুলাতেও অন্য দেশের মানুষ অংশ নেবে এটাই স্বাভাবিক হওয়া উচিত। সেটা ঘরোয়া ক্রিকেটে হোক কিংবা জাতীয় দল।”