শেষের নাটকে জিতল চেলসি
গত মৌসুমের ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন তারা। চেলসির সাফল্যের পেছনে বড় কারণ ছিল দুর্দান্ত ‘হোম’ ফর্ম। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে আক্ষরিক অর্থেই অদম্য ছিল আন্তোনিও কন্তের দল। কিন্তু এবার যেন ঠিক উলটো। বার্নলি, ম্যানচেস্টার সিটির কাছে নতুন মৌসুমে নিজেদের মাঠে হার ছিল চেলসি সমর্থকদের দুশ্চিন্তার অন্যতম কারণ। আজও ঘরের মাঠে ওয়াটফোর্ডের বিপক্ষে ২-১ গোলে পিছিয়ে পড়ায় চোখ রাঙ্গানী দিচ্ছিল আরেকটি হার। কিন্তু এবার আর খালি হাতে ফেরেনি চেলসি। মিচি বাতশুয়াইয়ের জোড়া গোলে পিছিয়ে পড়েও ৪-২ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে তারা।
এডেন হ্যাজার্ডের সাথে আজ শুরু থেকেই ছিলেন আলভারো মোরাতা। শুরুটাও দারুণ করেছিল চেলসি। ম্যাচের মাত্র ১২ মিনিটে কর্নার থেকে হ্যাজার্ডের পাসে বল পান পেদ্রো রদিগ্রেজ। ডান পায়ের চমৎকার বাঁকানো শটে ওয়াটফোর্ড গোলরক্ষক হিউরেলহো গোমেজকে পরাস্ত করেন তিনি। পেদ্রোর গোলের পর থেকে ম্যাচে আধিপত্য ছিল চেলসিরই। কিন্তু সব হিসাব-নিকাশ পাল্টে যায় প্রথমার্ধের শেষভাগে। যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে চেলসির অর্ধে থ্রো পায় ওয়াটফোর্ড। হোলেবাসের লম্বা থ্রো ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন ডেভিড লুইজ। চেলসির ডিফেন্ডারদের ভুলে ওয়াটফোর্ডকে সমতায় ফেরান আব্দুলাই ডকুরে।
প্রথমার্ধের শেষভাগে ডকুরের গোলে সমতায় ফেরায় আত্মবিশ্বাসে টইটুম্বুর ওয়াটফোর্ড লিডটাও নিয়ে নেয় দ্বিতীয়ার্ধে। ৪৯ মিনিটে রিচার্লিসনের পাস থেকে চেলসির ডিবক্সে বল পান রিকার্ডো পেরেইরা। গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়াকে একা পেয়ে গোল করতে ভুল করেননি এই আর্জেন্টাইন। গোলের পর পেরেইরার চেয়ে বরং মিনিটখানেক আগেই সহজ সুযোগ হাতছাড়া করা রিচার্লিসনকেই বেশি উছ্বসিত মনে হচ্ছিল। কিন্তু এরপরই আবারও আফোসে পুড়তে হয় ওয়াটফোর্ডের ফরোয়ার্ডকে। ৫৩ মিনিটে আরও একবার সুযোগ পেয়েছিলেন গোল করার। কিন্তু ব্যবধানটা বাড়িয়ে নিতে পারেননি। ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থেকেও হেড করেছেন বাইরে দিয়ে। না হলে চেলসির জন্য কাজটা আরও কঠিন বানিয়ে দিতে পারতেন তিনি। সহজ সুযোগ হাতছাড়া করার মাশুলটা ওয়াটফোর্ডকে দিতে হয় খানিকক্ষণ বাদেই।
গোলের আশায় মরিয়া কন্তে আলভারো মোরাতাকে উঠিয়ে নামিয়ে দেন বাতশুয়াইকে। ফলফলটাও পান প্রায় হাতেনাতেই। ৭১ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে পেদ্রোর নিখুঁত ক্রসে হেড করে কন্তের কপালের ভাঁজ কিছুটা হলেও দূর করেন এই বেলজিয়ান।
কিন্তু তখনও কাজ বাকি ছিল চেলসির। জয়সূচক গোলের আশায় ওয়াটফোর্ড রক্ষণভাগকে রীতিমত আক্রমণের জোয়ারে ভাসিয়ে দেয় ‘ব্লুজ’রা। শেষ পর্যন্ত ঠিকই জয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয় কন্তের দল। ৮৭ মিনিটে উইলিয়ানের ক্রস থেকে হেড করে ব্যবধান ৩-২ করেন সিজার অ্যাজপিলিকুয়েতা। স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের গোলের পর ডাগআউটে আবারও দেখা মেলে কন্তের হাত-পা ছুঁড়ে চিরাচরিত শিশুতোষ উদযাপনের। দ্বিতীয়ার্ধের অতিরিক্ত সময়ের শেষ মিনিটে টিমোয়ে বাকায়োকোর পাস থেকে গোল করে চেলসির পুরো ৩ পয়েন্ট নিশ্চিত করেন বাতশুয়াই। ২০১৬-১৭ মৌসুম থেকে প্রিমিয়ার লিগে বদলি হিসেবে নেমে ‘ব্যাটম্যান’-এর (৫) চেয়ে একমাত্র আর্সেনালের অলিভিয়ের জিরুই (৭) বেশি গোল করেছেন। মোরাতা আসার পর থেকে দলে নিয়মিত সুযোগ পাচ্ছিলেন না ‘মিচি’। চেলসির জয়ে মূল ভূমিকা রেখে যেন কোচের কাছে নিজের সামর্থ্যের জানান দিয়ে রাখলেন তিনি।