রাশিয়ায় যাওয়া হচ্ছে না বুফনদের
শেষ বাঁশি বাজার ঠিক আগে কর্নার পেল ইতালি, আন্দ্রে ফ্লোরেঞ্জি বলে চুমু খেয়ে যেন আশায় রইলেন অলৌকিকের। কিন্তু লাভ হলো না, খানিক পরেই রেফারির বাঁশিতে লেখা হলো ইতালির এপিটাফের। সান সিরোতে সুইডেনের সঙ্গে গোলশুন্য ড্রতেই নিশ্চিত হয়ে গেল, ১৯৫৮ সালের পর এবার প্রথ, বারের মতো ইতালির বিশ্বকাপে খেলা হচ্ছে না। দুই লেগ মিলে ১-০ গোলে এগিয়ে থাকা সুইডেনের ভাগ্যেই ছিড়ল শিকে।
অথচ সান সিরোতে রেকর্ডটা ইতালির পক্ষেই ছিল। এই মাঠে ৪২ ম্যাচে 'আজ্জুরি'রা জয় পেয়েছে ৩১টিতে, বাকি ১১টি ছিল ড্র। সুইডেনের বিপক্ষে প্রথম লেগ হারায় আজ জয় ছাড়া উপায় ছিল না ইতালির। কিন্তু শুরু থেকে সুইডিশ রক্ষণদুর্গ ভেদ করতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছিল চিরো ইম্মোবিলে, মানোলো গ্যাবিয়াডিনিদের। বিস্ময়করভাবে লরেঞ্জো ইনসিনিয়েকে মূল একাদশে রাখেননি কোচ জিয়ানপিয়েরো ভেঞ্চুরা। সুইডেনের ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিতে না পারার পাশাপাশি ভাগ্যটাও সহায় ছিল না ইতালির। প্রথমার্ধের ৮ মিনিটে সুইডিশ ডিফেন্ডার অগাস্টিনসন ইতালির মার্কো পারোলোকে ডিবক্সে ফেলে দিলেও পেনাল্টির বাঁশি দেননি রেফারি। এর মিনিট পাঁচেক পর আবারও পেনাল্টির আপিল, এবার সুইডেনের পক্ষ থেকে। এবারও নীরব রেফারি। অবশ্য রিপ্লেতে দেখা গেছে, ডিফেন্ডার মাতেও দারমিয়ানের হাতেই লেগেছিল বল। প্রথমার্ধের ৪০ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে বড় সুযোগটা পেয়েছিলেন ইম্মোবিলে। জর্জিনহোর পাস থেকে অফসাইড ফাঁদ ফাঁকি দিলেও গোলরক্ষক ওলসনকে পরাস্ত করতে পারেননি তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আবারও বিতর্ক। দারমিয়ানকে ডিবক্সে ফেলে দিলেন সুইডিশ রাইটব্যাক মিকেল লুস্টিগ। কিন্তু সান সিরোতে উপস্থিত প্রায় ৭৩ হাজার ইতালিয়ানকে অবাক করে এবারও পেনাল্টির বাঁশি দেননি রেফারি। ওদিকে গোলের তেমন সুযোগ তৈরি করতে না পারায় ইতালির ওপর চাপটাও বাড়ছিল ক্রমান্বয়ে। কিন্তু তাও ইনসিনিয়েকে নামাননি ভেঞ্চুরা। দ্বিতীয়ার্ধে শত চেষ্টা করেও সুইডেনের হলুদ দুর্গকে আর ফাঁকি দেওয়া হয়নি ইতালির। বিফলে যায় জিয়ানলুইজি বুফনের শত প্রার্থনা, অন্তিম মূহূর্তে কর্ণারের আগে আলেসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জির বলে চুমু খাওয়া। রেফারির বাঁশি বাজতেই উল্লাসে ফেটে পড়েন সুইডেনের খেলোয়াড়েরা।
এত দিন পর্যন্ত ইউরোপিয়ান দল হিসেবে জার্মানির সাথে যৌথভাবে সর্বোচ্চ (১৮) বিশ্বকাপ খেলার রেকর্ড ছিল ইতালিরই। কিন্তু রাশিয়ায় আগামী বছর রেকর্ডটি নিজেদের করে নেবে জার্মানরা। ওদিকে বেশ কয়েক মাস আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, আগামী বিশ্বকাপ খেলেই বিদায় নেবেন। কিন্তু রাশিয়ায় আর যাওয়া হল না বুফনের। ম্যাচ শেষে চোখের জলেই জানালেন, ইতালির জার্সি আগে আর দেখা যাবে না তাঁকে।