খুলনার 'গেমপ্ল্যান', মিরপুরে 'বুমেরাং'
প্রায় পাঁচ সেশন সময় ধরে উইকেটের উপর নিষ্ফলা ক্ষেতের কৃষক হয়ে কাটানোর পর উপর আলোর ঝলক কেবল দেখাতে শুরু করেছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা, ওভার ছয়েকের ব্যবধানে প্যাভিলিয়নমুখী করেছিলেন চার পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানকে। তবে ব্যাটিংয়ে নেমে রীতিমত আঁধারের স্তুপ নেমে এসেছে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের উপর।
উইকেটে বোলারদের জন্য কিছু সম্ভাবনা তৈরির ঘটনায় প্রভাবিত হয়েই কিনা কে জানে, দ্বিতীয় দিনের চা বিরতিতেই ইনিংস ঘোষণা করেন পাকিস্তান কাপ্তান মিসবাহ উল হক, যদিও দিনের দ্বিতীয় ওভারে সাকিবের বলে বোল্ড হয়ে তিনি ফিরে যাবার পর পূর্ণ কর্তৃত্ব নিয়েই ব্যাট করছিলেন আজহার আলি ও আসাদ শফিক। আগের দিন তুলে নেওয়া সেঞ্চুরিকে ডাবলে পরিণত করলেন আজহার, এটাই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি তাঁর। আসাদ তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। শুভাগতর পরপর দু’ওভারে এ দু’জনের বিদায়ের পর একই ওভারে জোড়া আঘাত হানেন তাইজুল, এ দুটো সহ মোট তিনটি উইকেট নিয়ে খুলনা টেস্টের মত মিরপুরেও তাইজুলই বাংলাদেশের সেরা বোলার।
খুলনায় যে ‘গেমপ্ল্যান’টা দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের, একই পরিকল্পনা আজকেও লক্ষ্য করা গিয়েছে শুরু থেকেই। রানবন্যার মুখে আজকেও প্রতি-আক্রমণে গেছে টাইগারদের ব্যাটিং লাইন-আপ, ঠিক যেমনটা গিয়েছিল খুলনায়। পার্থক্যটা হল, সে ম্যাচে ‘মুন মার্ক’ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছিল পরিকল্পনাটা, আর আজকে মাঠে মারা গেছে পুরোপুরিই।
ক্রিকেটে নিয়মই এই। নিখুঁত কোন পরিকল্পনাও হয়তো সবসময় সব পরিস্থিতিতে কাজ করবে না, এমনকি প্রতিপক্ষ দলটা এক হলেও। তবুও দুটো-তিনটে উইকেট চলে যাবার পর ‘গেমপ্ল্যান’ বদলে দিনটা কোনভাবে পার করার চিন্তায় চলে যাওয়াটাই যেখানে সবচেয়ে প্রত্যাশিত ছিল, ঐ সময়টাতেও কেন আগের পরিকল্পনাই আঁকড়ে রইলেন ব্যাটসম্যানরা, এটা একটা প্রশ্ন হতে পারে।
কার্যত টাইদেগারর শেষ ভরসা হয়ে উইকেটে আছেন সাকিব। সৌম্য ও শুভাগতর সমর্থন পাওয়ার শর্তপূর্বক তৃতীয় দিনে তাঁর কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়া কোন পারফরমেন্স দেখা গেলেই হয়তোবা টেস্টটা বাঁচানোর স্বপ্ন দেখতে পারে বাংলাদেশ। ছবি-সৌজন্যঃএএফপি