• বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ ২০১৫
  • " />

     

    তবু আশা ভীষণ অসম্ভবে

    তবু আশা ভীষণ অসম্ভবে    

    ঘড়ি ও আলো পরিমাপক যন্ত্রের দিকে তাকানো শুরু হয়ে গিয়েছিল দুই আম্পায়ার পল রেইফেল ও নাইজেল লংয়ের, দিনের খেলা শেষ হতে ওভার তিনেক বাকি তখন। দ্বিতীয় ইনিংসে ইয়াসির শাহর করা দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলটা খেলতে ব্যাট হাতে পজিশনে ইমরুল। বলটা পিচ করল অফ-স্ট্যাম্পের অন্তত আধ হাত বাইরে, নিশ্চিন্ত মনে কাভারের গ্যাপটার উদ্দেশ্যে ব্যাট চালানো ইমরুল পরমুহূর্তেই পুরোপুরি হতচকিত, মিডল ষ্ট্যাম্পটা যে ভেঙ্গে গেছে ততক্ষণে।

     

     

    ম্যাচের এখন পর্যন্ত এগুনো অংশটুকুর প্রতীকী ছবি হয়ে থাকল যেন দৃশ্যটা, অনেকের মতে পুরো টেস্টটারই। কোনকিছুই যেন পক্ষে আসছে না বাংলাদেশ দলের। ম্যাচ শুরুর পর তিনটে বলও হল না, হাঁটুতে চোট পেয়ে ব্যাথায় বিকৃত মুখ নিয়ে মাঠ ছাড়লেন শাহাদাত, আর ফিরতেই পারলেন না মাঠে। তিন পেসার নিয়ে পাকিস্তান যেখানে ‘ডাবল পেস’-এর উইকেটের ফায়দা লুটে যাচ্ছে, মাত্র একজন বিশেষজ্ঞ পেসার নিয়ে রীতিমত ধুঁকেছে বাংলাদেশ। প্রথম দিন দু-দুটো উইকেট থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে নো বলের সুবাদে। আম্পায়ারিং সিদ্ধান্তগুলোতেও যেন আরেকটু আনুকূল্য পেতে পারত টাইগাররা, আজকেও বেশ কটি সিদ্ধান্ত বিপক্ষে গেছে বাংলাদেশের।

     

    ৫ উইকেটে ১০৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ দলের সামনে লক্ষ্য ছিল যতক্ষণ সম্ভব উইকেটে থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে ব্যবধানটা কমিয়ে নেওয়া। উপযুক্ত সঙ্গীর অভাবে লক্ষ্যটাকে বাস্তবায়ন করতে পারেননি সাকিব। দিনশুরুর ওভার দশেকের মধ্যেই আরও তিন উইকেট হারিয়ে নবম উইকেট জুটিতে এসে পড়ে টাইগাররা, শাহাদাত ছিটকে পড়ায় ওটাই ছিল কার্যত শেষ উইকেট জুটি। সাকিব ও শহীদের মধ্যকার ঐ জুটিটার(৬৩) কারণেই দুশো পেরোনো সম্ভব হয়, যদিও সেখানে শহীদের অবদান ছিল মাত্র এক রান। মারমুখী খেলে ৯১ বলে ৮৯ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন সাকিব।

     

    বোলারদের খানিকটা বিশ্রাম দেবার প্রয়াসেই হয়তোবা, ৩৫৪ রানে এগিয়ে থেকেও বাংলাদেশ দলকে ফলো-অন করাননি মিসবাহ উল হক। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ওয়ানডে স্টাইলে খেলে ৬ উইকেটে ১৯৫ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেন তিনি, ইনিংস সর্বোচ্চ রান আসে তাঁর ব্যাট থেকেই(৮২)। বল হাতে প্রভাব বিস্তারকারী ভূমিকায় থাকা শহীদকে খেলতে এবার যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে পাকিস্তানী ব্যাটসম্যানদের। সাকিবসহ অন্য বোলাররা যেখানে যথেষ্ট খরুচে ছিলেন, ২ উইকেট তুলে নেওয়া শহীদের ১০ ওভার থেকে এসেছে মাত্র ২৩ রান। শাহাদাতের ছিটকে পড়া ও একজন অতিরিক্ত পেসার না খেলানোর আফসোসটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে এ ঘটনা।

     

    ৯ উইকেট হাতে নিয়ে পার করতে হবে দু-দুটো দিন। তাঁর উপর উইকেটের যে অবস্থা লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ম্যাচ বাঁচাতে অলৌকিক কিছুই হয়তো করতে হবে বাংলাদেশ দলকে। ছবি-সৌজন্যঃএএফপি