'গ্রুপ অব ডেথ' নয়, 'গ্রুপ অব লাইফ" ?
বিশ্বকাপ ড্র মানেই প্রথম প্রশ্ন, মৃত্যুকূপে আসলে পড়ল কারা? গত বিশ্বকাপে যেমন ইংল্যান্ড, কোস্টারিকা, ইতালি আর উরুগুয়ের গ্রুপটা হয়ে গেছে মৃত্যুকূপ। এর আগের বিশ্বকাপে ব্রাজিল, দক্ষিণ কোরিয়া, আইভরি কোস্ট আর পর্তুগালের গ্রুপটা বলা যেত মৃত্যুকূপ। কিন্তু এবার ড্রয়ের পর কোন গ্রুপকে মৃত্যুকূপ বলা যাবে?
চট করেই বলা মুশকিল। আর্জেন্টিনার সাথে যেমন আইসল্যান্ড, ক্রোয়েশিয়া, নাইজেরিয়া আছে। এর মধ্যে নাইজেরিয়া তো চেনা মুখই, এর আগে চারটি বিশ্বকাপে দেখা হয়েছে দুই দলের। ক্রোয়েশিয়া আর আইসল্যান্ডও ছেড়ে কথা বলবে না। ব্রাজিলের গ্রুপটাও সহজ বলা যাচ্ছে না, সুইজারল্যান্ডের সাথে কোস্টারিকা আর সার্বিয়াও আছে। গত বিশ্বকাপে কোস্টারিকা যে মৃত্যুকূপ থেকেই উঠেছিল, সেটিও ভুলে যাওয়া উচিত হবে না। জার্মানির গ্রুপটাও বা খুব সহজ বলা যায় কী করে? মেক্সিকো তো সমীহ জাগানো প্রতিপক্ষই, সুইডেনও প্লে অফে ইতালির মতো দলকে হারিয়ে উঠেছে। আর দক্ষিণ কোরিয়াও হেলাফেলা করার মতো নয়। তাহলে গ্রুপ অব ডেথ আসলে কোনটা?
বিশ্বকাপ আসতে আসতে বদলে যাবে অনেক সমীকরণ। তবে আপাতত যখন র্যাঙ্কিং ভরসা, তখন কিন্তু এই তিনটি গ্রুপের কোনোটিই গ্রুপ অব ডেথ বলার উপায় নেই। দেশগুলোর গড় র্যাঙ্কিং হিসেব করলে সবচেয়ে জমজমাট হওয়ার কথা সি গ্রুপের লড়াই। সেখানে ফ্রান্সের সঙ্গে আছে অস্ট্রেলিয়া, পেরু এবং ডেনমার্ক। এই গ্রুপের গড় র্যাঙ্কিং হচ্ছে ১৭.৭৫, সবগুলো গ্রুপের মধ্যে সবচেয়ে কম। আর্জেন্টিনার গ্রুপের ক্ষেত্রে গড় র্যাঙ্কিং ২৩.২৫, জার্মানির গ্রুপে ২৩.৫। বরং ব্রাজিলের গ্রুপটাই এখানে সবচেয়ে কাছাকাছি আছে, ১৮.৭৫। সেই হিসেবে সি গ্রুপকেই বলা হতে পারে মৃত্যুকূপ। অন্য গ্রুপগুলোর ক্ষেত্রে গড় র্যাঙ্কিং সবার প্রায় কাছাকাছি, ২০ থেকে ২৫ এর মধ্যে। আবার আরেক হিসেবে গ্রুপ বি হতে পারে কঠিনতম। এখানে পর্তুগাল পট একে ছিল পঞ্চম সর্বোচ্চ র্যাঙ্কিংয়ের দল। পট দুইয়ে স্পেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, পট তিনে ইরানও তাই। আর পট চারে থাকা মরক্কোর র্যাঙ্কিং ওই পটের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সেই হিসেবে বি-ই হচ্ছে কঠিনতম।
বরং গ্রুপ অব লাইফ কোনটা সেই প্রশ্ন করলে উত্তরটা হয়ে যাবে অনেক সহজ। স্বাগতিক রাশিয়াকে নিয়ে সৌদি আরব, মিশর ও উরুগুয়ের এ গ্রুপটাই কোনো সন্দেহ ছাড়াই সহজতম। এই গ্রুপের গড় র্যাঙ্কিং ৪৫, আট গ্রুপের মধ্যে আর আশেপাশেও নেই কেউ। এই গ্রুপের চার দলই আপাতত নিজেদের ভাগ্যবান মনে করতে পারে। মৃত্যকূপ কোনটা তা নিয়ে সংশয় থাকতে পারে, কিন্তু ‘জীবনকুয়ো’ নিয়ে কোনো দ্বিধা থাকার কথা নয়।