• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    ডি গিয়ায় আর্সেনাল দুর্গ জয় ইউনাইটেডের

    ডি গিয়ায় আর্সেনাল দুর্গ জয় ইউনাইটেডের    

    এমিরেটসে খেলার প্রথম ১৫ মিনিট পুরোটাই ছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। দুই গোল করে তখনই ম্যাচটা প্রায় পকেটে পুরে ফেলেছিল হোসে মরিনহোর দল। যতোটা সহজ মনে হচ্ছিল এরপর কাজটা ঠিক ততোটাই কঠিন হয়ে যায় ইউনাইটেডের জন্য। ম্যাচে দারুণ ভাবে ফিরে আসে আর্সেনাল। শেষ পর্যন্ত শুরুর ধাক্কাটা আর সামলে উঠতে পারেনি ঘরের দল। ৩-১ গোলে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কাছে হেরেছে আর্সেনাল।

    স্কোরলাইন অবশ্য ম্যাচের গল্পটা বলছে না একেবারেই। দুই গোল হজমের পর পুরোটা সময় ইউনাইটেডের রক্ষণকে চেপে ধরেছিল আর্সেনাল। কেবল হার মানাতে পারেনি ডেভিড ডি গিয়াকে। স্প্যানিশ গোলরক্ষকের প্রায় আধ ডজন সেভ ম্যাচে টিকিয়ে রাখে ইউনাইটেডকে। আর তাতেই শেষ পর্যন্ত তিন বছর পর এমিরেটস থেকে ৩ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে হোসে রেড ডেভিলরা। আর টানা ১২ ম্যাচ পর প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে হেরে গেল আর্সেন ওয়েঙ্গারের দল।



    রক্ষণের দুই ভুলে খেলার ৪ ও ১১ মিনিটে দুবারই শাস্তি পেতে হয় আর্সেনালকে। ইউনাইটেডের হয়ে প্রথম গোলটা করেন অ্যান্টোনিও ভ্যালেন্সিয়া। এর পর ১১ মিনিটে আরও একবার আর্সেনালকে ভুলের শাস্তিটা দেন জেসি লিনগার্ড। পুরো খেলায় ইউনাইটেডের আক্রমণের ঝলক শেষ সেখানেই।

    প্রথমার্ধে এক আলেক্সান্ডার লাকাজেতই দুই গোল শোধ দিয়ে আর্সেনালকে ফিরিয়ে আনতে পারতেন ম্যাচে। দুবারই বাধা হয়ে দাঁড়ান ডি গিয়া। অ্যারন রামসে, গ্রানিত শাকারাও সুযোগ পেয়ে গোলে করতে পারেননি। আর্সেনাল খেলোয়াড়দের তো বটেই, ডি গিয়াকে গোলবঞ্চিত করতে হয়েছে রোমেলু লুকাকুকেও! অন্যপাশে তেমন সুবিধা করতে না পারলেও প্রথমার্ধের শেষ দিকে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের জালেই প্রায় বল ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন লুকাকু। সে যাত্রায় লুকাকুর রক্ষকর্তাও সেই ডি গিয়াই। ৭ শট অন টার্গেটের পরও তাই প্রথমার্ধে খালি হাতেই ফিরতে হয় আর্সেনালকে।



    বিরতির পর কাঙ্ক্ষিত সেই গোলের দেখাটা পেয়েই যায় আর্সেনাল। ৪৯ মিনিটে আর লাকাজেতকে ফেরাতে পারেননি ডি গিয়া। রামসের নামিয়ে দেওয়া বলে ইউনাইটেডের জালে বল ঢুকিয়ে এমিরেটসে খানিকটা স্বস্তি ফিরিয়ে আনেন লাকাজেত। এর খানিকক্ষণ পরই অবশ্য লিনগার্ডের শট বারে লেগে ফেরত না আসলে তখনই দুই গোলের ব্যবধানটা ফিরে পেত ইউনাইটেড। পরে রোমেলু লুকাকুও ফিরতি বলে পারেননি গোল করতে।  

    সেখান থেকেই আবার বল ফেরত পায় আর্সেনাল। আক্রমণে এবার বল পেয়ে যান অ্যালেক্স ইওবি। কিন্তু আবারও সেই ডি গিয়া হয়ে দাঁড়ান আর্সেনাল আর গোলের মধ্যে ব্যবধান। আর্সেনালের সমতায় ফেরাটা মনে হচ্ছিল সময়েরই ব্যাপার। কিন্তু ইউনাইটেডের দুর্বল রক্ষণ বারবার পার করে গেলেও ডি গিয়া দুর্গ ভেদ করার কোনো সূত্রই যেন জানা ছিল না  আর্সেনালের আক্রমণভাগের। ৫৬ মিনিটে যখন দুবার ঝাঁপিয়ে পড়ে লাকাজেত আর অ্যালেক্সিস সানচেজকে ঠেকিয়ে দিলেন ডি গিয়া, তখন চোখে মুখে অবিশ্বাসের ছাপটা স্পষ্টই বোঝা যাচ্ছিল আর্সেনাল খেলোয়াড়দের।  

    আর্সেনালের আক্রমণে কোনঠাসা ইউনাইটেড প্রতি আক্রমণে যাওয়ার সুযোগটাও পাচ্ছিল কম। কিন্তু ৬৪ মিনিটে পল পগবা-লিনগার্ড জুটিই কাজটা সহজ করে দেয় ইউনাইটেডের জয়। মাঝমাঠে থেকে ওয়ান টু করে শেষ পর্যন্ত পগবার ক্রস থেকে প্রায় ফাঁকা বারে বল জড়িয়ে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন লিনগার্ড।



    নাটক সেখানেও শেষ না। ৭৪ মিনিটে নাচো মনরিয়েলকে ফাউল করার অপরাধে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন পগবা। ১০ জনের ইউনাইটেডের সাথে বাকি সময়েও তাই আক্রমণত্মাক খেলাটাই ধরে রাখতে পেরেছিল আর্সেনাল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এক ডি গিয়ার কাছেই হার মেনেছেন সবাই। পুরো ম্যাচে তাই ১৩ শট টার্গেট করেও ওই একবারই আনন্দের উপলক্ষ্য পেয়েছিল আর্সেনাল।