• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    নতুন রেকর্ড গড়ে জিতল গার্দিওলার সিটি

    নতুন রেকর্ড গড়ে জিতল গার্দিওলার সিটি    

    ছুটেই চলেছে ম্যানচেস্টার সিটির জয়রথ। গত সপ্তাহে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারানোর পর আজ সোয়ানসি সিটিকে রীতিমত বিধ্বস্ত করেছে পেপ গার্দিওলার দল। লিবার্টি স্টেডিয়াম থেকে ৪-০ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছে 'সিটিজেন'রা। আজকের জয়ে দারুণ এক রেকর্ডও করেছে সিটি। ইউনাইটেডকে হারিয়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে আর্সেনালের (১৪টি) টানা জয়ের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছিল তারা। আজ সোয়ানসিকে হারিয়ে ইপিএল-এ টানা জয়ের রেকর্ডটা নিজেদের করে নিল সিটি (১৫)। 'সিটিজেন'দের হয়ে জোড়া গোল করেছেন ডেভিড সিলভা। অন্য দুটি গোল এসেছে কেভিন ডি ব্রুইন এবং সার্জিও আগুয়েরোর পা থেকে।

     

     

     

    টেবিলের একেবারে তলানীতে থাকা সোয়ানসির রক্ষণভাগকে শুরু থেকেই তটস্থ রেখেছিলেন আগুয়েরোরা। ম্যাচের ২৬ মিনিটে লিড নেয় সিটি। ডানপ্রান্ত থেকে বার্নার্দো সিলভার নিখুঁত ক্রসে বাঁ-পায়ের আলতো টোকায় সিটিকে এগিয়ে নেন ডেভিড সিলভা। এর মিনিট আটেক পরই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ডি ব্রুইন। বাঁ-প্রান্ত থেকে জোরাল ফ্রিকিকে গোলরক্ষক লুকাস ফ্যাবিয়ান্সকিকে পরাস্ত করেন এই বেলজিয়ান তারকা। ফ্যাবিয়ান্সকি না থাকলে ব্যবধানটা অবশ্য আরও বড় হতে পারত দু'দলের মধ্যে। পুরো ম্যাচে অন্তত তিনটি নিশ্চিত গোল বাঁচিয়েছেন এই পোলিশ গোলরক্ষক। তবে দুর্দান্ত সিটির আক্রমণভাগকে পুরোপুরি দমাতে পারেননি তিনি। ৫২ মিনিটে রহিম স্টার্লিং-এর মাইনাস থেকে চিপ করে ফ্যাবিয়ান্সিকিকে পরাস্ত করেন সিলভা। সিলভার দ্বিতীয় গোলের পর দুয়োধ্বনিতে ভারী হয়ে উঠে লিবার্টি স্টেডিয়ামের বাতাস। উপস্থিত সমর্থকদের অনেকেই এই গোলের পরই মাঠ ছেড়ে রওনা দেন বাড়ির উদ্দেশ্যে। ম্যাচের পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে ৮৫ মিনিটে সোয়ানসির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন আগুয়েরো। ইয়াইয়া তোরের পাস থেকে ডানপায়ের মাপা শটে লক্ষ্যভেদ করেন এই আর্জেন্টাইন। আজকের জয়ের শীর্ষস্থানে ১১ পয়েন্টের লিডটা ধরে রাখল সিটি।

     

    লুকাকুর গোলে জিতল ইউনাইটেডঃ

    মাস দুয়েক আগেও প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ গোলদাতাদের একজন ছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি ফর্মহীনতার কারণে সইতে হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। আজ যেন সেসব নিন্দুকদের মুখে কুলুপ এঁটে দিলেন রোমেলু লুকাকু। বেলজিয়ান এই স্ট্রাইকারের একমাত্র গোলে ওল্ড ট্রাফোর্ডে বোর্নমাউথকে ১-০ গোলে হারিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

     

     

    সিটির বিপক্ষে হারের পর আজ জয়ের বিকল্প ছিল না ইউনাইটেডের সামনে। দলের প্রয়োজনের মূহুর্তে জ্বলে উঠলেন লুকাকু। ম্যাচের ২৬ মিনিটে হুয়ান মাতার ক্রসে হেড করে ইপিএল-এ গোলখরার ইতি টানেন তিনি। আজকের জয়ে লুকাকুর পাশাপশি ডেভিড ডি গেয়ার ভূমিকাও অনস্বীকার্য। বোর্নমাউথের আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের একাধিক প্রচেষ্টা স্বভাবসুলভ দক্ষতায় রুখে দিয়েছেন এই স্প্যানিশ গোলরক্ষক। অবশ্য গোলের ব্যবধানটা বাড়িয়ে নিতে না পারাইয় ভাগ্যকে দুষতেই পারে 'রেড ডেভিল'রা। দ্বিতীয়ার্ধে অ্যান্থোনি মার্শিয়াল এবং মার্কাস রাশফোর্ডের দুটি প্রচেষ্টা প্রতিহত হয়েছে ক্রসবারে। শেষমেশ ন্যূনতম ব্যবধানের জয়েই টেবিলের ২য় স্থানটি ধরে রেখেছে হোসে মরিনহোর দল।

     

    আর্সেনালকে রুখে দিলেন ময়েসঃ

    গত সপ্তাহে সাউদাম্পটনের সাথে ১-১ গোলের ড্রয়ে টেবিলের ৬ নম্বর স্থানে নেমে গিয়েছিল আর্সেনাল। ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে আজ ড্র করে আবারও ১ পয়েন্ট নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল আর্সেন ওয়েঙ্গারের দলকে। ডেভিড ময়েসের দলের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছে আর্সেনাল।

     

     

    'হ্যামার'দের লন্ডন স্টেডিয়ামে আক্রমণাত্মক সূচনাই করেছিল আর্সেনাল। ম্যাচের ২৯ মিনিটে অ্যালেক্স ইওবি-র শট বারে প্রতিহত না হলে তখনই লিড নিতে পারত 'গানার'রা। প্রথমার্ধে গোলের তেমন সুযোগ তৈরি করতে পারেনি দু'দলের কেউই। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আসে ম্যাচের অন্যতম বিতর্কিত মূহুর্ত। মানুয়েল লানজিনিকে গ্রানিত শাকা ডিবক্সে ফেলে দিলেও পেনাল্টি বাঁশি দেননি রেফারি। ওদিকে ওয়েস্ট হ্যাম গোলরক্ষক আদ্রিয়ানের দক্ষতায় ওয়েস্ট হ্যামের রক্ষণদুর্গকে তেমন পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি মেসুত ওজিল, অ্যালেক্সিস সানচেজরা। ম্যাচের একেবারে ৯০ মিনিটে পিটার চেককে একা পেয়েও হাভিয়ের হার্নান্দেজ গোল করতে ব্যর্থ হলে শেষমেশ ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় দু'দলকে। আজকের ড্র-য়ে টেবিলের ৭ নম্বরে নেমে গেল ওয়েঙ্গারের দল।

     

    জিততে পারেনি লিভারপুলওঃ

    আর্সেনালের মত গত সপ্তাহের পর আজও ড্র করল লিভারপুল। ওয়েস্ট ব্রমের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল।

     

     

    অ্যানফিল্ডে মোহাম্মদ সালাহ, রবার্তো ফিরমিনোদের কেউই তেমন জ্বল উঠতে পারেননি আজ। অ্যালেন পার্ড্যুর রক্ষণাত্মক কৌশলে নাকাল লিভারপুলের রক্ষণভাগ। ম্যাচের ৩০ মিনিটে হ্যাল-রবসন কানুর জোরাল শট ক্রসবারে প্রতিহত না হলে অ্যানফিল্ডে লিডটাও নিতে পারত 'ব্যাগিজ'রা। সালাহ, ফিলিপ কুতিনহো, সাদিও মানেদের সবাই-ই আজ যেন ছিলেন নিজেদের ছায়া হয়েই। ওদিকে দ্বিতীয়ার্ধে ওয়েস্ট ব্রম সুযোগ মিসের মহড়ায় না মাতলে ফলাফলটা অন্যরকমও হতে পারত। ম্যাচের ৮২ মিনিটে বিতর্কিত এক সিদ্ধান্তে জয় হাতছাড়া হয় লিভারপুলের। জো গমেজের ক্রসে হেড করে বল জালে পাঠান ডমিনিক সোলাঙ্কে। লিভারপুল সমর্থকদের বুনো উল্লাসের মাঝে বল হাতে লাগার কারণে গোল বাতিল করেন রেফারি। অবশ্য রিপ্লেতে দেখা গেছে, ইচ্ছাকৃতভাবে বল হাতে লাগাননি সোলাঙ্কে। শেষমেশ ড্র নিয়েই ফিরতে হয় 'অল রেড'দের। ম্যাচশেষে রেফারিদের সাথে ক্লপের বাগবিতন্ডাই প্রমাণ করে, বিতর্কিত সিদ্ধান্তটি মানতে পারেননি এই জার্মান কোচ।