লিভারপুলকে জেতালেন সেই সালাহই
অক্টোবর ২২, ২০১৭। টটেনহাম হটস্পার্সের কাছে ৪-১ গোলের হার। এরপর প্রায় মাস দুয়েক পেরিয়ে গেলেও আর হারের মুখ দেখেনি লিভারপুল। তবে আজ লেস্টার সিটির বিপক্ষে ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়া 'অল রেড'দের চোখ রাঙ্গানি দিচ্ছিল হার দিয়ে বছর শেষ করার সম্ভাবনা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য তা আর হয়ে উঠেনি। আবারও ইয়ুর্গেন ক্লপের দলের ত্রাণকর্তা হয়ে আসলেন মোহাম্মদ সালাহ। তার জোড়া গোলেই লেস্টারকে ২-১ গোলে হারাল লিভারপুল। জয় পেয়েছে চেলসিও। স্টোক সিটিকে নিজেদের মাঠ স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ৫-০ গোলে হারিয়েছে আন্তোনিও কন্তের দল।
২০১৪-১৫ ইপিএল মৌসুমের চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে লিভারপুলের জয়টা অবশ্য সহজ ছিল না একেবারেই। অ্যানফিল্ডের ভিআইপি বক্সে আজ উপস্থিত নতুন ডিফেন্ডার ভার্জিল ভ্যান ডাইকের সামনে অবশ্য লিভারপুলের শুরুটা ভাল ছিল না একেবারেই। মাত্র ৩ মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে ক্লপের দল। রক্ষণের ভুল বুঝাবুঝিতে বল পান ডেমারাই গ্রে। তার পাস থেকে ডিবক্সে বল পান রিয়াদ মাহরেজ। আলজেরিয়ান এই উইঙ্গারের পাস থেকে ডানপায়ের আলতো টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন জেমি ভার্ডি। পিছিয়ে পড়ার মিনিট চারেক পরই ম্যাচে সমতায় ফিরতে পারত লিভারপুল। সাদিও মানের নিখুঁত পাস থেকে লেস্টার গোলরক্ষক ক্যাসপার স্মেইকেলকে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন সালাহ। প্রথমার্ধের ২২ মিনিটে আরও একটি সহজ সুযোগ মিস করে বসেন মিশরের এই তারকা ফুটবলার।
অবশ্য সালাহকে দমিয়ে রাখা যায়নি পুরোপুরি। দ্বিতীয়ার্ধের ৫২ মিনিটে সেই সালাহর গোলেই সমতায় ফেরে ক্লপের দল। মানের ব্যাকহিল থেকে ডিবক্সে বল পান সালাহ। লেস্টারের দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে অবশেষে স্মেইকেলের জালে বল পাঠাতে সক্ষম হন তিনি। সমতায় ফেরার পর থেকেই জয়সূচক গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে লিভারপুল। ম্যাচের ১৪ মিনিট বাকি থাকতে অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত গোলটিও পেয়ে যায় লিভারপুল। জেমস মিলনারের ফ্লিক থেকে বল পান সালাহ। লেস্টার ডিফেন্ডার হ্যারি ম্যাগুয়ারকে কাটিয়ে বাঁ-পায়ের জোরাল শটে দলকে লিড এনে দেন সালাহ। ম্যাচের ৮২ মিনিটে তাকে উঠিয়ে নেন ক্লপ। সে সময় 'সালাহ! সালাহ!!' চিৎকারে প্রকম্পিত হয়ে উঠে অ্যানফিল্ডের বাতাস। শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই বছরের ইতি টানতে সক্ষম হয় লিভারপুল।
লিভারপুলের মত জয় পেতে অবশ্য এত হিমশিম খেতে হয়নি চেলসিকে। লেস্টারের মতই ম্যাচের ৩ মিনিটেই লিড নেয় কন্তের দল। ডানপ্রান্ত থেকে উইলিয়ানের ফ্রিকিকে হেড করে 'ব্লুজ'দের এগিয়ে দেন আন্তোনিও রুডিগার। ম্যাচের ৯ মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে চেলসি। ৯ মিনিটে ডিবক্সে বাইরে থেকে দুর্দান্ত এক ভলিতে চেলসির জার্সিতে নিজের প্রথম গোল করেন ড্যানি ড্রিঙ্কওয়াটার। এরপর আর ম্যাচে ফিরতেই পারেনি স্টোক। ওদিকে ২৪ মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করেন পেদ্রো রদ্রিগেজ। প্রথমার্ধেই দলের শোচনীয় অবস্থা দেখে মাঠ ছাড়তে থাকেন স্টোকের সমর্থকেরা। গোলরক্ষক জ্যাক বাটল্যান্ড না থাকলে ব্যবধানটা আরও বড় হতে পারত চেলসির।
প্রথমার্ধে শেষদিকে আসে অন্যতম বিতর্কিত মুহুর্ত। চার্লি অ্যাডামের পাস থেকে চেলসি গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়াকে পরাস্ত করেন মামে-বিরাম দিউফ। কিন্তু অফসাইডের কারণে বাতিল হয় গোলটি। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা গেছে, অনসাইডেই ছিলেন দিউফ। দ্বিতীয়ার্ধের ৭৪ মমিনিটে উইলিয়ানকে ডিবক্সে ফেলে দিয়ে চেলসিকে পেনালকোড উপহার দেন জেফ ক্যামেরন। ১২ গজ থেকে বাটল্যান্ডকে পরাস্ত করতে ভুল করেননি উইলিয়ান। ম্যাচের একেবারে শেষদিকে ৮৯ মিনিটে স্টোকের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন দাভিদ জাপাকস্তা।
আজকের জয়ে ২১ ম্যাচে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে টেনিলের দুই নম্বরে উঠে আসল চেলসি। ওদিকে সমান সংখ্যক ম্যাচে ৪১ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরেই থাকল ক্লপের লিভারপুল।