ইউরোপের সেরা ছয় জয়রথ
‘অপ্রতিরোধ্য’। শব্দটির যথার্থতা সত্যিকার অর্থেই প্রকাশ পেয়েছে বেশ কয়েকটি ফুটবল ক্লাবের জয়রথে। এই মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে টানা ১৮ ম্যাচ জয়ের পর সিটির জয়রথ থেমেছে গতকাল। আর এক ম্যাচ জিতলেই তাঁরা ছুঁয়ে ফেলত পেপ গার্দিওলার সেই বায়ার্ন মিউনিখকে। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসে রয়েছে এরকম বেশ কয়েকটি জয়রথের গল্প।
বায়ার্ন মিউনিখ (১৯ ম্যাচ)-
২০১৩-১৪ মৌসুমে বার্সেলোনা ছেড়ে বায়ার্ন মিউনিখের দায়িত্ব নেন গার্দিওলা। সেবার গার্দিওলার অধীনে আক্ষরিক অর্থেই ‘অপ্রতিরোধ্য’ হয়ে উঠেছিল জার্মান ক্লাবটি। টানা ১৯ ম্যাচ জিতে গড়েছিল নতুন রেকর্ড।
২০১৪ সালের ২৯ মার্চ থামে বায়ার্নের জয়রথ। ততদিনে অবশ্য লিগ শিরোপা নিশ্চিত হয়ে গেছে। হফেনহেইমের সাথে ঘরের মাঠে ৩-৩ গোলে ড্র করে বায়ার্ন। পরের মাসেই থামে বায়ার্নের আরেকটি রেকর্ড যাত্রা। লিগে ৫৩ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর পরাজয়ের মুখ দেখে তাঁরা। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে বিদায় নেয় গার্দিওলার দল।
ম্যানচেস্টার সিটি(১৮ ম্যাচ)-
এই মৌসুমের শুরু থেকেই গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি আছে দুর্দান্ত ফর্মে। আগস্টের শেষে বোর্নমাউথকে ২-১ গোলে হারিয়ে শুরু হয় এই জয়যাত্রা। এরপর একে একে লিগের ১৮ ম্যাচ জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে সিটিজেনরা। এরই মাঝে লিগের শীর্ষস্থানে থাকা সিটির সাথে দ্বিতীয় স্থানে থাকা চেলসির ব্যবধান দাঁড়িয়েছে ১৪ পয়েন্ট।
গতকাল ক্রিস্টাল প্যালেসের সাথে গোলশূন্য ড্র করে চার মাসের মাঝে লিগে প্রথমবারের মতো পয়েন্ট খুইয়েছে সিটি। এক ম্যাচের জন্য তাই ছোঁয়া হয়নি বায়ার্নের রেকর্ড।
ইন্টার মিলান (১৭ ম্যাচ)-
২০০৬-০৭ মৌসুমে ইন্টার মিলানকে হারানোর যেন কোনো উপায় খুঁজে পায়নি সিরি আর দলগুলো। ২০০৬ সালের ২৫ অক্টোবর লিভোরনোর বিপক্ষে ৪-১ গোলের জয় দিয়ে শুরু। পরের ১৬ ম্যাচের একটিতেও পয়েন্ট খোয়ায়নি ইন্টার।
২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে উদিনেসের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে থামে ইন্টারের জয়রথ। সেবার রোমার সাথে ১২ পয়েন্টের ব্যবধান রেখে লিগ শিরোপা জিতেছিল ইন্টার। ইব্রাহিমভিচ, প্যাট্রিক ভিয়েরা, হার্নান ক্রেসপো, লুইস ফিগোদের নিয়ে গড়া দলটি লিগ জিতলেও চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডেই বাদ পড়ে।
বার্সেলোনা(১৬ ম্যাচ)-
২০১০-১১ মৌসুমে গার্দিওলার ‘টিকিটাকা’ ফুটবলে রাজত্ব করেছে বার্সেলোনা। তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার তৃতীয় মৌসুমে বার্সা হয়ে ওঠে অপরাজেয়। সেবার লা লিগায় টানা ১৭ ম্যাচ জিতেছিল মেসি-ইনিয়েস্তারা, অপরাজিত ছিল টানা ৩১ ম্যাচ।
এই যাত্রায় বার্সেলোনা করেছে ৬০ গোল, প্রতি ম্যাচে গড়ে ৩.৭৫ গোল! সর্বোচ্চ গোল ছিল মেসির (২১টি), পেদ্রো ও ডেভিড ভিয়া করেছিলেন ১২ টি করে গোল। স্পোর্টিং গিজনের সাথে ড্র করে থামে বার্সেলোনা। সেবার লা লিগার পাশাপাশি চ্যাম্পিয়নস লিগও জিতেছিল বার্সা।
রিয়াল মাদ্রিদ(১৬ ম্যাচ)-
লা লিগায় টানা ১৬ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড দুই মৌসুম মিলিয়ে করেছে জিনেদিন জিদানের রিয়াল মাদ্রিদ। ২০১৫-১৬ মৌসুমের শেষ ১২ ম্যাচে জিতেছিল রিয়াল। পরের মৌসুমের প্রথম ৪ ম্যাচেও জয় পায় রোনালদোরা।
ভিয়ারিয়ালের সাথে ২-২ গোলে ড্র করেই থামে তাঁদের জয়রথ। সেবার মৌসুম শেষে শিরোপা ঘরে তুলেছিল রিয়াল।
মোনাকো (১৬ ম্যাচ)-
২০১৬-১৭ মৌসুমে ফরাসি লিগে দুর্দান্ত এক ফিরে আসার গল্প রচনা করেছিল মোনাকো। মৌসুমের প্রথম ভাগে শিরোপা দৌড় থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়া দলটি মাঝপথে এসে তুলে নেয় টানা ১৬ জয়। শেষ পর্যন্ত সেবার পিএসজির থেকে ৮ পয়েন্ট এগিয়ে থেকেই লিগ যেতে মোনাকো।