• ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ
  • " />

     

    শেষের নাটকে ড্র লন্ডন ডার্বি

    শেষের নাটকে ড্র লন্ডন ডার্বি    

    অতিরিক্ত সময়ের দুই মিনিটের খেলা বাকি তখন। জ্যাক উইলশেয়ারের গোলে আর্সেনাল লিড নিলেও এডেন হ্যাজার্ড এবং মার্কোস আলোন্সোর গোলে এগিয়ে তখন চেলসিই। এমন সময় বাঁ-প্রান্ত থেকে ডিবক্সে ক্রস করলেন অ্যালেক্সিস সানচেজ। হেড করে ক্লিয়ার করলেন আলোন্সো। ক্লিয়ারেন্স থেকে ডিবক্সের বাইরে বল পেলেন হেক্টর বেলেরিন। ডানপায়ের দারুণ শটে চেলসি গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়াকে পরাস্ত করলেন তিনি। অন্তিম মুহুর্তের গোলে সমতায় ফিরল আর্সেনাল। এর মিনিটখানেক পরই পিটার চেককে একা পেয়েও গোলের সুযোগ হারালেন আলভারো মোরাতা। ফিরতি বলে দাভিদ জাপাকস্তার শট প্রতিহত হল ক্রসবারে। রুদ্ধশ্বাস এক ম্যাচের শেষ জিতল না লন্ডনের দুই 'চিরশত্রু'র কেউই। ২-২ গোলের ড্রয়ে শেষ হল আর্সেনাল এবং চেলসির মধ্যকার ম্যাচটি।

     

     

     

    ড্র হলেও প্রথমার্ধে গোলের সুযোগের অভাব হয়নি কোনো দলেরই। ম্যাচের ১৩ মিনিটেই লিড নিতে পারত চেলসি। কিন্তু ভিক্টর মোজেসের পাস থেকে আর্সেনাল গোলরক্ষক পিটার চেককে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন মোরাতা। এর মিনিট চারেক পরই আসে প্রথমার্ধের অন্যতম বিতর্কিত মুহুর্ত। তরুণ লেফটব্যাক এইন্সলি মেটল্যান্ড-নাইলসকে ডিবক্সে ফেলে দেন সিজার অ্যাজপিলিকুয়েতা। সমগ্র এমিরেটস স্টেডিয়াম জুড়ে সমর্থকদের 'পেনাল্টি' চিৎকারে সাড়া দেননি রেফারি। এর কিছুক্ষণ পরেই গোলের মাত্র গজ ছয়েক দূর থেকে সানচেজের জোরাল শট রীতিমত অবিশ্বাস্যভাবে ফিরিয়ে দেন কর্তোয়া। অবশ্য বেলজিয়ান এই গোলরক্ষকের দক্ষতার পাশাপাশি ভাগ্যকেও দুষতেই পারেন সানচেজ। চিলিয়ান তারকার শট কর্তোয়ার হাতে লেগে প্রতিহত হয় চেলসি গোলের দুই পোস্টেই। প্রথমার্ধের বাকিটা সময় যেন নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়ার লড়াইয়েই নেমেছিলেন চেক-কর্তোয়া। প্রতিপক্ষের গোলের একাধিক প্রচেষ্টা দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দিয়েছেন এই দুই গোলরক্ষক।

     

     

    প্রথমার্ধের মত দ্বিতীয়ার্ধেও গোলরক্ষকদের দক্ষতায়ই সমতায় ছিল দু'দল। বিশেষ করে আলেকজান্ডার লাকাজেতের দুটি প্রচেষ্টা দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে দিয়েছেন কর্তোয়া। কিন্তু ম্যাচের ৬৩ মিনিটে আর শেষ রক্ষা হয়নি চেলসির। বাঁ-প্রান্ত থেকে ওজিলের কর্ণার ক্লিয়ার করেন অ্যাজপিলিকুয়েতা। ক্লিয়ারেন্স থেকে ডিবক্সের বাইরে বল পান রব হোল্ডিং। তরুণ এই ইংলিশ ডিফেন্ডারের পাস মোরাতার পায়ে লেগে আসে জ্যাক উইলশেয়ারের দিকে। বল নিয়ন্ত্রণে না এনেই দুর্দান্ত এক হাফভলিতে কর্তোয়াকে অবশেষে পরাস্ত করতে সক্ষম হন তিনি। প্রায় আড়াই বছর পর প্রিমিয়ার লিগে গোল করে স্বাভাবিকভাবেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সতীর্থদের উদযাপনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হওয়া উইলশেয়ার। কিন্তু নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে আর্সেনালের লিডটা স্থায়ী হয়নি একেবারেই। ৬৬ মিনিটেই ডিবক্সে হ্যাজার্ডকে ফাউল করে চেলসিকে পেনাল্টি উপহার দেন বেলেরিন। ১২ গজ থেকে সাবেক সতীর্থ চেককে পরাস্ত করতে ভুল করেননি হ্যাজার্ড। সমতায় ফেরার পর থেকেই জয়সূচক গোলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে চেলসি। লিডটাও পেয়ে যায় কন্তের দল। ৮৪ মিনিটে জাপাকস্তার ক্রস থেকে আলোন্সো গোল করলে বুনো উল্লাসে মেতে উঠে 'ব্লুজ'রা।

     

     

    কিন্তু নাটকের সমাপ্তি হয়নি তখনও। দ্বিতীয়ার্ধের ৯২ মিনিটে ডিবক্সে সানচেজের ক্রস হেড করে ক্লিয়ার করেন আলোন্সো। ক্লিয়ারেন্স থেকে বল পেয়েই ডানপায়ের নিখুঁত শটে অন্তিম মুহুর্তে দলকে সমতায় ফেরান বেলেরিন। গোল হজমের পরই আবারও লিড নেওয়ার দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল চেলসি। অ্যাজপিলিকুয়েতার লম্বা পাস থেকে মোরাতার শট আবারও ফিরিয়ে দেন চেক। ফিরতি বলে জাপাকস্তার শট ক্রসবারে প্রতিহত হলে ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় দু'দলকেই।

     

    আজকের ড্রয়ে টেবিলের দুই নম্বরে উঠে আসার সুযোগটা হারাল চেলসি। তিন নম্বরে থাকা চেলসির ২২ ম্যাচে সংগ্রহ ৪৬ পয়েন্ট। ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে চেলসিকে টপকে আবারও দুই নম্বরে উঠে আসল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ৬২ পয়েন্ট নিয়ে যথারীতি সবার উপরে আছেন পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি।