মাশরাফির নো, নাসিরদের পুনর্মিলনী
শর্ট, শর্ট, বুম!
এনামুল যে শর্ট বলে আউট হলেন, সেটা নিরীহগোছের। তামিমকে পেরেরা যে বাউন্সার দিলেন, সেটা নিশ্চিতভাবেই নয়। আগেভাগে হুক করার পজিশনে গিয়ে তামিম মিস করলেন সেটা, বল গিয়ে আঘাত করলো হেলমেটে। পরের বলে পেরেরা আবার শর্ট করলেন, তামিম এবার নিচে নামিয়ে আনলেন সেটা, ভালভাবেই। বেশিই ভাল হলো, হলো চার। শর্ট বলের উত্তাপ টের পেলো শ্রীলঙ্কাও। রুবেলের বাউন্সার গিয়ে লাগলো কুশাল মেন্ডিসের হেলমেটের পেছনে, বাড়তি সুরক্ষার গার্ডগুলো তো খুলেই এলো! পেরেরা অবশ্য হাসি দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, সবকিছু ঠিকঠাকই আছে।
মাশরাফির নো? সেটা যেন কী!
প্রথম ওভার, প্রথম বল। নো। লক্ষণ শুভ নয়। মাশরাফি ইনিংসের প্রথম বলেই নো দিয়েছিলেন ২০১৫ সালে, পাকিস্তানের সঙ্গে। মাশরাফির খাতা থেকে এরপর নো বলটা যেন হারিয়েই গিয়েছিল, টানা ৩৩ ইনিংস ছিলেন ‘নো’শূন্য। সেই নো ফিরে এলো আজ, ইনিংসের ৪র্থ ওভারে মাশরাফির পা ছাড়িয়ে গেল পপিং ক্রিজের দাগ। বাংলাদেশও ওয়ানডেতে এই নো বলের ক্ষেত্রে আশ্চর্য কিপটে, মাঝে গত বছর ডাম্বুলায় শ্রীলঙ্কার সঙ্গে মুস্তাফিজের একটি নো বাদ দিলে বাংলাদেশ শেষ নো দিয়েছিল ওই ২০১৫ সালেই, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে চট্টগ্রামে রুবেল হোসেন করেছিলেন দুইটি নো- একটি ফুলটসে অতিরিক্ত উচ্চতায়, আরেকটি ওভারস্টেপিংয়ের কারণে।
পুনর্মিলনী ১
কুশাল মেন্ডিস হঠাৎ করেই অস্বস্তিতে পড়লেন। ফিজিও ছুটলেন। ক্রিজে আরেক ব্যাটসম্যান তখন উপুল থারাঙ্গা। স্টাম্পের পাশে সেখানেই হলো বিপিএলের দল সিলেট সিক্সারসের ছোটখাট পুনর্মিলনী। সিক্সারস অধিনায়ক নাসির হোসেন, সঙ্গে সাব্বির রহমান। খানিক বাদে সেখানে এলেন দানুশকা গুনাথিলাকা, সিক্সারসের আরেক ক্রিকেটার। নাসির তো রীতিমতো জড়িয়েই ধরলেন তাকে, আর মেন্ডিসের ‘অসুস্থতাজনিত’ বিরতি শেষে যাওয়ার আগে যেন থারাঙ্গার বুকে সাহস জুগিয়ে গেলেন নাসির। সেটাতে অবশ্য কাজ হলো না খুব একটা, সিক্সারসের হয়ে অসাধারণ সময় কাটানো থারাঙ্গার সময়টা যে ভাল গেল না মোটেও!
পুনর্মিলনী ২
তার মুখটা মিরপুরের জায়ান্ট স্ক্রিনে ভেসে উঠেছে এর আগে অনেকবারই। এভাবেই- ড্রেসিংরুমের কাচের ভেতর থেকে। আজও উঠলো। তবে এই গর্জনটা ওঠেনি এভাবে। শ্রীলঙ্কা তখন নিশ্চিত পরাজয়ের দিকে এগুচ্ছে, ক্যামেরাবন্দি চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে দেখে যেন গর্জে উঠলো মিরপুর। তিনিও একটা আঙ্গুল তুলে দেখালেন, হয়তো জায়ান্ট স্ক্রিনের দিকেই ইঙ্গিত করছিলেন কাউকে। বাংলাদেশ সফরে এসে অনুশীলন, ম্যাচশেষে বা আগে অনেক ক্রিকেটার কর্মকর্তার সঙ্গেই সাক্ষাত হয়ে গেছে বাংলাদেশের সদ্য সাবেক হওয়া কোচের। আজ যেন হয়ে গেল মিরপুরের দর্শকদের সঙ্গেও!
শুধুই শ্রীলঙ্কার দিন!
দিনটা শ্রীলঙ্কার অন্তত একটা দিক দিয়ে ভাল গেছে- রিভিউ। তামিম ইকবালের কট-বিহাইন্ডের আবেদন নাকচ করেছিলেন আম্পায়ার আনিসুর রহমান, অধিনায়ক দীনেশ চান্ডিমালের অপেক্ষা না করেই রিভিউয়ের সঙ্কেত দিচ্ছিলেন উইকেটকিপার নিরোশান ডিকভেলা। শেষ পর্যন্ত তিনিই সঠিক, বল ছুঁয়ে গিয়েছিল তামিমের ব্যাট। নাসির হোসেনকে গোল্ডেন ডাকও শ্রীলঙ্কা উপহার দিয়েছে রিভিউ নিয়েই, এবার আম্পায়ার ছিলেন চেত্তিহরি শামসুদ্দীন। পেরেরার ইয়র্কার লেগেছিল নাসিরের বুটে, যেটা ভেঙ্গে দিত স্টাম্প। শ্রীলঙ্কা রিভিউয়ের সাফল্য টেনে আনলো ব্যাটিংয়েও, উপুল থারাঙ্গাকে এবার এলবিডাব্লিউ দিয়েছিলেন আনিসুর। বল ট্র্যাকিং দেখাল- সূক্ষ্ণ ব্যবধানে বল পড়েছে লেগস্টাম্পের বাইরে। ম্যাচে রিভিউ হয়েছেই তিনটি, তিনটিতেই সফল শ্রীলঙ্কা। শুধু ম্যাচেই সাফল্য আসলো না তাদের!