'স্বাধীনতা একটু বেশি আছে'
‘যেহেতু আমাদের কোচের পরিবর্তন এসেছে। তাদের নতুন কিছু চিন্তা ভাবনা থাকবে। আমি বলবো না আগে আমরা স্বাধীন ভাবে খেলতে পারতাম না। এখন আমরা স্বাধীন ভাবে খেলার পাশাপাশি সিদ্ধান্তও নিতে পারি। তাই আমাদের কাছে মনে হয়, আমাদের কাছে এটা একটা বাড়তি সুবিধা’, সাকিব আল হাসান শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ম্যাচের পর বলেছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে পরবর্তী বাংলাদেশ যুগ নিয়ে, ‘(খালেদ মাহমুদ) সুজন ভাই আছে, রিচার্ড (হ্যালসল) আছে- দুইজনই জানেন আমাদের কী দরকার। দুইজনই এগুলো সরবরাহ করতে পারছে, আমরা মাঠে পারফরম্যান্স করছি।’
বাংলাদেশের বর্তমান টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ বলছেন, ড্রেসিংরুমে আত্মবিশ্বাস আর স্বাধীনতা বেড়েছে, ‘এটা আসলে ক্রিকেটাররাই ভালো বলতে পারবে। কিন্তু আমি যেটা মনে করি, ড্রেসিংরুম এখন অনেকটা আত্মবিশ্বাসী। নিজেদের মধ্যে পরামর্শগুলো ভালো হয়। আমরা চেষ্টা করি সবকিছুতেই ক্রিকেটারদেরকে নিযুক্ত রাখতে। তাদেরকে আমরা সেই দায়িত্বটা দিয়েছি। ড্রেসিংরুম একই আছে, বাংলাদেশ দলে খুব একটা পরিবর্তন হয় না। হয়তবা স্বাধীনতার কথা যেটা বলা হয়েছে, সেই জিনিসটা হয়তো একটু বেশি আছে।’
শুধু ড্রেসিংরুম নয়, মাঠের বেশিরভাগ সিদ্ধান্তও ক্রিকেটারদের ওপরই ছেড়ে দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট, ‘আমার মনে হয়, সাকিব, তামিম, মাশরাফি, মুশফিক, রিয়াদদের মিলিয়ে বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমে এখন প্রায় ৬০ বছরের অভিজ্ঞতা আছে। মাঠে সিদ্ধান্ত নেবার সামর্থ্য অবশ্যই তাদের আছে। এই ক্রিকেটারদের প্রায় সবাই ঘুরেফিরে অধিনায়কত্ব করেছে ঢাকা লিগে বলেন বা জাতীয় দলে বলেন। আমরা বাইরে থেকে তো অবশ্যই পরামর্শ পাঠাই। যখন আমাদের মনে হয়, তখন তো আমরা পাঠাই। সেটা যদি তারা শুনতে চায়, শোনে। কিন্তু আসল ব্যাপারটা হচ্ছে, তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তগুলো নেয়াটা আসলে তাদের কাজ, যেহেতু তারা মাঠে খেলছে।’
‘বাইরে থেকে অনেক সময় উইকেট বুঝা যায় না, যারা খেলছে তারাই উইকেটটা ভালো বুঝে। হয়তো মাঠের বাইরে থেকে আমি যেই বোলারকে বল করাতে বলবো, অধিনায়ক হয়তো তার ব্যাপারে খুব একটা আত্মবিশ্বাসী না। হয়তো সেই সময়ে সে অন্য কোনো বোলারের উপর আত্মবিশ্বাসী। সেক্ষেত্রে তখন যদি আমি বার্তা পাঠাই, তখন অধিনায়কের মনে একটা সংশয় তৈরি হয়। সেই সংশয়টা আমি তৈরি করতে চাই না।’
এক্ষেত্রে মাহমুদের ভরসা মাশরাফি আর সাকিবই, ‘মাশরাফি অনেক অভিজ্ঞ একজন ক্রিকেটার, সাকিবও অভিজ্ঞ। তারা দুইজন মিলে মাঠের সিদ্ধান্ত নেয়াটাই ভালো। যদি তারা বাইরে আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করে, তখন হয়তো আমরা বলতে পারি। হয়তো আমরা মাঝেমাঝে ফিল্ডিং পজিশন নিয়ে কথা বলি, প্রতিপক্ষকে আমরা কোথায় বল করবো সেটা বলি। অনেকসময় হয়তো ক্রিকেটাররা মাঠে গিয়ে কিছু ব্যাপার ভুলে যায়, আমরা সেটা মনে করিয়ে দেবার চেষ্টা করি। এটা আসলে ক্রিকেটারদেরই খেলা। ওরা মাঠে গিয়ে খেলে বলেই বাংলাদেশ ভালো করে। তো তাদের একটা সিদ্ধান্ত তো থাকবেই। তাদের একটা দায়িত্ব তো থাকবেই।’
সাকিবের মতো তিনিও বলছেন, হাথুরুসিংহের ব্যাপারটা ভুলে যাওয়াই ভাল। তার সিদ্ধান্তটাকে পেশাদার হিসেবে দেখে মাহমুদের মনে হয়, প্রথম সিরিজটা বাংলাদেশের সঙ্গে বলেই এতো আলোচনা হচ্ছে। আর সব ভুলে বাংলাদেশের শক্তি-সামর্থ্য-পরিকল্পনা-বাস্তবায়নের দিকেই নজর দিতে বেশি আগ্রহ তার।