• বাংলাদেশ-শ্রীলংকা
  • " />

     

    মাহমুদউল্লাহর চক্রপূরণ

    মাহমুদউল্লাহর চক্রপূরণ    

    মাহমুদউল্লাহ কি নিজে ভাবতে পেরেছিলেন?

    দল থেকে বাদ পড়েছিলেন মোটে পাঁচ টেস্ট আগেই। আর পাঁচ টেস্ট পর বাংলাদেশের অধিনায়ক তিনিই! শ্রীলঙ্কা সফরের দ্বিতীয় টেস্টের দল থেকে বাদ পড়েছিলেন, কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে তাকে ওয়ানডে থেকেও বাদ দিয়ে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন দেশেই। সেই সিরিজে খেললেন, অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টেস্ট সিরিজের দলেও ফিরলেন। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা সফর, সে সফরের পর হাথুরুসিংহে বিদায় বললেন বাংলাদেশকে, আর বাংলাদেশ অধিনায়কত্ব থেকে বিদায় বললো মুশফিকুর রহিমকে। সেই মুশফিকের সহকারি ছিলেন একসময় মাহমুদউল্লাহ, সেখান থেকে বাদ পড়েছিলেন আগেই। এবার নতুন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, তার সহকারি সেই মাহমুদউল্লাহ। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে চোটে পড়লেন সাকিব, নেতৃত্বের ভার এখন মাহমুদউল্লাহর কাঁধেই! তাও আবার মুখোমুখি শ্রীলঙ্কার, যে দলের কোচ হাথুরুসিংহে। চক্রটা তো ক্রিকেট ছাপিয়ে হয়ে উঠলো জীবনেরই!

    ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিতই অধিনায়কত্ব করেন, বাংলাদেশের পরবর্তী অধিনায়কের তালিকাতেও তার নাম উচ্চারিত হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরেই। মাহমুদউল্লাহ অবশ্য এভাবে ঠিক অধিনায়কত্ব চাননি, ‘যেভাবে পেয়েছি সেভাবে পেতে চাইনি অবশ্যই। কারণ সাকিব আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়। ওকে লস করা আমাদের দলের জন্য বড় একটা বিপর্যয়ই বলতে হবে। ওর মতো টপ ক্লাস ক্রিকেটারকে মিস করা দলের জন্য অবশ্যই ক্ষতিকর একটা জিনিস। তারপরও দিন শেষে আমরা সবাই বাংলাদেশ দলকে প্রতিনিধিত্ব করছি। বাংলাদেশ দলকে প্রতিনিধিত্ব করাও একটা সুযোগ। বাংলাদেশ দলের জন্য ভালো কিছু করা। সেদিক থেকে আমরা সবাই বেশ উদ্দীপিত।’

    তবে যেভাবেই হোক, মাহমুদউল্লাহর স্বপ্নটা কিন্তু পূরণ হয়েই যাচ্ছে, ‘প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন থাকে তার দলকে নেতৃত্ব দেওয়া, দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া। সেইদিক দিয়ে চিন্তা করলে অবশ্যই এটা দারুণ ব্যাপার।’

    ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে হেরে বাংলাদেশ বেশ কোণঠাসা। সেদিক দিয়ে অধিনায়কত্বটা হয়ে উঠতে পারে বাড়তি চাপ, দলকে উদ্দীপিত করার অনেক বড় ভার তো তার ওপরই, ‘আমি সব সময় একটা জিনিস বিশ্বাস করি যদি সবাই দলগতভাবে ভালো পারফরম্যান্স করে তাহলে অধিনায়কত্ব করা খুব সহজ হয়ে যায়। আমাদের সবার লক্ষ্য থাকবে যে যেটা আমাদের সবার শক্তির দিক, আমরা দল হিসেবে ভালো পারফর্ম করি। এবারও আমাদের লক্ষ্য থাকবে দলগতভাবে ভালো পারফর্ম করা। ওই জিনিসটা যদি করতে পারি তাহলে আমার জন্য সহজ হয়ে যাবে। আর সবাই কম-বেশি অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আছে এবং জুনিয়র ক্রিকেটাররা সবাই বেশ সহযোগিতা করে সবাইকে। সেদিক থেকে আমি বলবো আমার জন্য ভালো হবে।’

    ‘আমি যখন আমার বিজনেসে থাকবো তখন কোনো কিছুতে আমি ছাড় দিব না। যেভাবেই হোক দলকে যতটুকু ভাবে সাপোর্ট করা সেটা একটু কঠোর হয়েও হোক বা ভালোভাবে যদি অনুপ্রেরণা দিয়েও হোক; সব দিক থেকেই চেষ্টা করবো। মূল কথা হচ্ছে এটা বাংলাদেশ ক্রিকেট। বাংলাদেশ দলকে ভালো কিছু দিতে হবে। এটাই আমাদের দায়িত্ব, এটাই আমাদের কর্তব্য।’

    মাহমুদউল্লাহর এসব কথা শুনে অবশ্য বুঝার উপায় নেই, ঠিক পাঁচ টেস্ট আগেই জায়গা হারিয়েছিলেন তিনি! এখন তিনি সবার আগে বাংলাদেশের অধিনায়ক।