• বাংলাদেশ-শ্রীলংকা
  • " />

     

    উল্টো লিডের পথে শ্রীলঙ্কা

    উল্টো লিডের পথে শ্রীলঙ্কা    

    প্রথম টেস্ট, চট্টগ্রাম
    তৃতীয় দিনশেষে 
    বাংলাদেশ ১ম ইনিংস ৫১৩ (মুমিনুল ১৭৬, মুশফিক ৯২, মাহমুদউল্লাহ ৮৩* তামিম ৫২, , সানজামুল ২৪, লাকমাল ৩/৬৮, হেরাথ ৩/১৫০)
    শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস ৫০৪/৩ (ডি সিলভা ১৭৩*, মেন্ডিস১৯৬*, রোশেন ৮৭*, মুস্তাফিজ ১/৮৮, মেহেদি ১/৯৭, তাইজুল ১/১৪৪) 
    শ্রীলঙ্কা ৯ রানে পিছিয়ে 


    লাইভস্কোর ও পুরো স্কোরকার্ড দেখুন 


    অঙ্ক অনেক কিছুই বুঝাতে পারে না। আবার পারে অনেক কিছুই। চট্টগ্রাম টেস্টের অঙ্কটা যেমন- ৩ দিন, ১০১৭ রান, ১৩ উইকেটে। গড়ে প্রতিদিনে রান উঠেছে ৩৩৯, উইকেট পড়েছে ৪.৩৩টি করে। এই গড়টা আবার সব বুঝাতে পারবে না। বাংলাদেশের ১০ উইকেটের বিপরীতে শ্রীলঙ্কার পড়েছে মাত্র ৪ উইকেট। এর মাঝে প্রথম দিনে উইকেট পড়েছে ৪টি, পরের দিন ৭টি, আজ ২টি। কুশাল মেন্ডিস ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা প্রথম সেশনে অবিচ্ছিন্ন থেকে দ্বিতীয় সেশনে দুইজনই আউট হয়েছেন আজ।উইকেটশূন্য শেষ সেশনে অবিচ্ছিন্ন দীনেশ চান্ডিমাল ও রোশেন সিলভা। পরেরজন সেঞ্চুরি থেকে ১৩ রান দূরে দাঁড়িয়ে। 

    ৫১৩ রানের স্কোর যদি পাহাড় হয়, তবে সেটা জয় করে শুধু পতাকা গেঁড়ে দেওয়া বাকি শ্রীলঙ্কার। ৭ উইকেট নিয়ে তারা বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে মাত্র ৯ রানে। চট্টগ্রামের উইকেট প্রথম তিনদিনে ব্যাটিং-স্বর্গ তকমা পেয়ে গেছে, সেটা গা থেকে নামাতে কাল ও পরশু এখানে হতে হবে দারুণ কিছু। 

    গতকালের মতো আজও সুযোগ মিস করেছে বাংলাদেশ, রান-আউটে, স্টাম্পিংয়ে, ক্যাচে। মেন্ডিস কাল আউট হতে পারতেন। আজ ১৫০ রানেও আউট হতে পারতেন, মেহেদি থ্রোটা লিটনের মাথার অনেক ওপরে না করে ঠিকঠাক করতে পারলে। তিনি আউট হলেন ১৯৬ রানে, তাইজুলকে তুলে মারার চেষ্টায়। মিড-অন থেকে দৌড়ে গিয়ে প্রায় মিড-উইকেটের কাছে দারুণ ক্যাচ নিলেন মুশফিকুর রহিম। ১৯০-এর ঘরে গিয়ে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার আউট হলেন মেন্ডিস। আজ জন্মদিন ছিল তার, ডাবল সেঞ্চুরির উপহারটা নিজেকে নিজে দিতে পারলেন না। তার উইকেটেই থামলো দুইজনের রেকর্ড ৩০৮ রানের জুটি। 

     

     

    গত বছর গলে এভাবেই ছয় মারতে গিয়ে মেহেদির বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন তামিম ইকবালকে, যিনিও অনেকখানি ছুটে নিয়েছিলেন ক্যাচ। ‘উহ-আহ-ইশ-ধ্যাত’ এর দিনে বাংলাদেশের সাফল্য দুইটি, মেন্ডিসের আগে ধনঞ্জয়াকেও ডাবল সেঞ্চুরি করতে না দেওয়া। মুস্তাফিজের শর্টলেংথের বলে আগেভাগেই পুল করতে গিয়ে সোজা ওপরে বল তুলেছিলেন ডি সিলভা। এর আগে তিনি দিয়েছিলেন আরেকটি সুযোগ, তার প্যাডল সুইপ আগেভাগেই বুঝে লেগসাইডে সরে গিয়েও ক্যাচটা নিতে পারেননি লিটন। এর আগে একইভাবে একটা স্টাম্পিংয়ের সুযোগও হাতছাড়া হয়েছে তার। 

    এর আগে সকালের সেশনটাও বাংলাদেশের জন্য হতাশারই। লাঞ্চের আগে শ্রীলংকার দুই ব্যাটসম্যান যোগ করেছেন ১০৮ রান। আগের দিন সেঞ্চুরি থেকে ১৭ রান দূরে ছিলেন মেন্ডিস, জন্মদিনের সকালে সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে বেশি সময় নেননি। 

    মেন্ডিস-ধনঞ্জয়া আউট হয়েছেন ‘মিস-হিট’ হওয়ায়, চাইলেই যেগুলো এড়িয়ে যেতে পারতেন। দিনের চিত্রটাই এমন। উইকেটের জন্য বাংলাদেশ যেন তাকিয়ে ছিল ব্যাটসম্যানদের দিকেই। বোলাররা যা সুযোগের সম্ভাবনা তৈরী করেছিলেন, ফিল্ডিং আর শরীরি ভাষায় মিলিয়ে গেছে তা। শেষবেলায় স্টাম্পসের পর উঠে যাওয়ার আগে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ও অন্য ফিল্ডাররা হাততালিতে উৎসাহ দিচ্ছিলেন বোলার তাইজুল ও অন্যদের। বাংলাদেশের জন্য এখন সবচেয়ে কঠিন কাজ এটাই, এই টেস্টে ঘুরে দাঁড়াতে উৎসাহিত বোধ করা!