বিশ্বাস, সংকল্প মিলিয়ে দৃঢ় মুমিনুল
‘আমি দ্বিতীয় ইনিংসেরটা এগিয়ে রাখব। কারণ ওইটা ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস ছিলো’।
জীবন বিচিত্র, কিছুটা রসিকও বটে। ক্রিকেটও তাই। তিন বছর ধরে মুমিনুলের সেঞ্চুরি নেই, সেই সেঞ্চুরি খরা কাটলো অবশেষে। তিন দিন গেল না, মুমিনুল পেলেন আরেকটা সেঞ্চুরি! একই ম্যাচেই, গড়লেন রেকর্ড। ম্যাচ বাঁচালেন, হলেন ম্যাচসেরা। ম্যাচশেষে মুমিনুলের কাছেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হচ্ছে তিন দিন ব্যবধানে পাওয়া পরের সেঞ্চুরিটা।
‘আমার কাছে মনে হয় আমার জীবনের জন্য ওই জিনিসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আপনারা কিভাবে ভাবেন জানি না, তবে আমার কাছে মনে হয় এটা আমার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমার মানসিকতার একটা বদল এসেছে, পরিশ্রমটা আরও বাড়ছে’, মুমিনুল বলছেন তার এই তিন বছরের সময়ের কথা। বাংলাদেশকে নতুন কিছু করে দেখানোর পর হুট করেই দলে ব্রাত্য হয়ে পড়ার কথা। মুমিনুল সেখান থেকেই ফিরলেন, যেন নতুন করেই!
তবে সেঞ্চুরি করে সব সমালোচনা, সব সন্দেহের জবাব ব্যাট দিয়েই দিলেন, এটা মানতে রাজি নন তিনি, ‘ওইরকম কোনো চিন্তা ভাবনা ছিল না। কোনো ক্রিকেটারের পক্ষেই এরকম চিন্তা ভাবনা করা সম্ভব না যে টার্গেট করে এটা-ওটা করব।’
শেষদিনে অবশ্য সঙ্গী লিটনের সঙ্গে রেকর্ড জুটিতে একটা লক্ষ্য ছিল দুইজনের, ‘আপনি যদি চিন্তা করেন পুরো দিনটা খেলবেন তাহলে কিন্তু কঠিন। আমি আর লিটন যেটা করছিলাম প্রথম সেশন থেকে সেশন ধরে ধরে, ঘন্টা ধরে ধরে পরিকল্পনা করেছি।’
দলের মাঝেও ছিল সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, ‘এই পরিস্থিতিতে এর আগেও আমরা পড়েছিলাম। এসব পরিস্থিতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মানসিক দৃঢ়তা। নিজের কাছে বিশ্বাস রাখা। টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে, টিম বয় এমনকি আপনারা যারা সাংবাদিক আছেন তারাও। পুরো দেশের মানুষের বিশ্বাস ছিল, সত্যি কথা। (যদি) সবাই বিশ্বাস করেন, তাহলে জিনিসটা আসবে। (মাহমুদউল্লাহ) রিয়াদ ভাইয়ের সঙ্গে আলাপ করেছি, তিনিও একই কথা বলেছেন। এইটা নিয়ে কারো মধ্যে সন্দেহ যেন না থাকে যে, আমরা এই ম্যাচটা বাঁচাতে পারব না। আমরা যেন বিশ্বাস করি। বিশ্বাসটা ছিল সবার ভেতরে।’
‘প্রত্যাশা করছিলাম যে আরও টার্ন করবে। টার্ন হলেও যাতে আমরা বিস্মিত না হই, এরকম চিন্তা-ভাবনা ছিল। আমি যদি চিন্তা করি টার্ন হবে না, পরে যদি টার্ন হয় তাহলে বিস্মিত হতে হয়। টার্ন হলেও যেন খেলে দিতে পারি এমন সংকল্প ছিল।’
বিশ্বাস, সংকল্প সবকিছুরই প্রতিফলন ছিল মুমিনুলের ইনিংসে, আজ বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে।