'ভিন্ন কোনো বোলার' খেলাবে বাংলাদেশ?
নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের চোট নিয়েই যতো ‘বিপত্তি’ শুরু। তার বদলে স্কোয়াডে ডাকা হলো তিনজন স্পিনারকে, সানজামুল ইসলাম, তানভীর হায়দার ও আব্দুর রাজ্জাক। এর মধ্যে প্রথম দুইজনকে ডাকা হয়েছিল শুরুতেই, রাজ্জাককে ডাকা হয়েছিল পরে- অনেকটা হঠাৎ করেই। পরে অবশ্য প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন ব্যখ্যা করেছিলেন, রাজ্জাক তাদের পরিকল্পনাতেই ছিলেন।
রাজ্জাক চট্টগ্রাম টেস্টে খেললেন না, অভিষেক হলো আরেক বাঁহাতি স্পিনার সানজামুল ইসলামের। তাকে টেস্ট ক্যাপটা পরিয়ে দিলেন রাজ্জাকই। চরম ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে সানজামুল করেছেন ৪৫ ওভার, ১ উইকেট নিয়েছেন ১৫৩ রানে। পরের টেস্টের স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছেন তিনি, সঙ্গে বাদ দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম টেস্টে না খেলা পেসার রুবেল হোসেনকেও। এই দুইজনের বদলে নেওয়া হয়েছে আগের টেস্টে বাদ পড়া ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমানকে।
ঢাকা টেস্টের আগে অনেক বড় আলোচনায় তাই এই স্কোয়াড আর তা থেকে সম্ভাব্য টিম কম্বিনেশন। যার অনেকাংশ জুড়েই বোলাররা, আদতে কয়জন স্পিনারের সঙ্গে কয়জন পেসার নিয়ে নামবে বাংলাদেশ? ‘বোলিং কম্বিনেশন – আমরা আসলে ভিন্নকিছু ভাবছি। ভিন্ন কোনো বোলার যদি খেলাতে পারি। ওটা দেখার বিষয়। টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিব’, মাহমুদউল্লাহ সংবাদ সম্মেলনে দিলেন ভিন্ন কিছুরই ইঙ্গিত।
স্কোয়াডে এখন পেসার দুইজন, মুস্তাফিজুর রহমান ও কামরুল ইসলাম রাব্বি। মেহেদি হাসান ও নাঈম হাসান অফস্পিনার, বাঁহাতি অর্থোডক্স আব্দুর রাজ্জাক ও তাইজুল ইসলাম। সঙ্গে লেগস্পিনার তানভীর হায়দার। এদের মাঝে কাকে ভিন্ন ধরনের বোলার বলছেন মাহমুদউল্লাহ, সেটা অবশ্য নিশ্চিত নয়। আর টিম কম্বিনেশন ঠিক না হলেও রাজ্জাককে নিয়ে অধিনায়কের মত, ‘ উনি (রাজ্জাক) খুব বিবেচনায় আছেন খেলার জন্য। তারপরও আমরা একাদশ চূড়ান্ত করিনি। টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত করব।’
সাকিব আল হাসানের মতো একজন অলরাউন্ডারকে দলে না পাওয়ার প্রধান সমস্যা, তার ঘাটতি পূরণে খেলাতে হয় একজন ব্যাটসম্যানের সঙ্গে একজন বোলারকেও। সেই চ্যালেঞ্জেরই মুখোমুখি এখন বাংলাদেশ, ‘সত্যি কথা বলতে গেলে সাকিবের অভাব পূরণ করা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং । ও আমাদের অন্যতম চালিকাশক্তি। ওর কারণে দলের ভারসাম্য থাকে। কারণ সে একইসঙ্গে বিশ্বমানের ব্যাটসম্যান ও বিশ্বমানের বোলার। সব দিক থেকে পরিপূর্ণ ক্রিকেটার। তারপরও আমাদের যে স্পিন আক্রমণ আছে, তাদের ওপর আমার বিশ্বাস আছে, হয়তোবা তার অভাবটা পূরণ করতে পারব। সাকিবের চোট নিয়ে ফিজিও কাজ করছে। আশা করছি সে শীঘ্রই ফিরে আসবে।’
‘যতটুকু আজকে দেখলাম পিচ শুস্ক মনে হলো’, উইকেট দেখে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলছেন, ‘সাধারণত আমরা ঢাকায় যে ধরনের উইকেট দেখতে পাই, এটা তেমনই। ত্রিদেশীয় সিরিজেও দেখবেন, বোলারদের জন্য মোটামুটি সহায়তা ছিল। ঢাকার উইকেটে কিছু না কিছু সহায়তা থাকেই বোলারদের জন্য। ব্যাটসম্যানদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। আমি সব সময় বলি ব্যাটসম্যানদের অভিপ্রায়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটা ঠিক রেখে যদি দক্ষতার প্রয়োগ করতে পারি আশা করি কাজে দেবে ইনিংস গঠনের জন্য।’
সেই শুষ্ক উইকেটে ব্যাটসম্যানদের চ্যালেঞ্জের চেয়েও বাংলাদেশের বড় চ্যালেঞ্জ বোধহয় স্কোয়াড থেকে বোলিং কম্বিনেশন ঠিক করাটাই!