• বাংলাদেশ-শ্রীলংকা
  • " />

     

    ৩ রানে ৫ উইকেটের ডামাডোলেই দিশেহারা বাংলাদেশ

    ৩ রানে ৫ উইকেটের ডামাডোলেই দিশেহারা বাংলাদেশ    

     

    ঢাকা টেস্ট, দ্বিতীয় দিনশেষে
    শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস ২২২ (মেন্ডিস ৬৮, রোশেন ৫৬, পেরেরা ৩১, রাজ্জাক ৪/৬৩, তাইজুল ৪/৮৩, মুস্তাফিজ ২/১৭) ও ২য় ইনিংস ২০০/৮* (রোশেন ৫৮*, চান্ডিমাল ৩০, মুস্তাফিজ ৩/৩৫, মিরাজ ২/২৯)
    বাংলাদেশ ১ম ইনিংস ১১০ (মেহেদি ৩৮*, লিটন ২৫, দনঞ্জয়া ৩/২০, লাকমাল ৩/২৫)
    শ্রীলঙ্কা ৩১২ রানে এগিয়ে  


    আবারও মিরপুরে ১৪ উইকেটের দিন, অর্ধেকের বেশি ৮টি উইকেট বাংলাদেশেরই ভাগে। প্রথম ইনিংসে ২২২ রানে শ্রীলঙ্কাকে ‘বেঁধে’ ফেলার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ২০০ রানের মাঝেই নেই ৮ উইকেট। তবে প্রথম দিনের মতো এদিনও অস্বস্তিতে থাকা দলের নাম বাংলাদেশ। গতকালের চেয়ে আজকের অস্বস্তিটা আরও বেশি, পরাজয় আটকাতে এখন করতে হবে দারুণের চেয়েও ভাল কিছু। মিরপুরের পিচে শ্রীলঙ্কার এ পর্যন্ত নেওয়া ৩১২ রানের লিডই যে পাহাড়সম এখন! শ্রীলঙ্কাকে এই পাহাড় গড়তে দেওয়ার মূল সহায়তাকারি বাংলাদেশই, ৩ রানে ৫ উইকেট হারানোর ভারটাই নিতে পারছে না বাংলাদেশ!  

    ধারাবাহিক লাইন, লেংথ। বোলারদের ক্ষেত্রে মিরপুরের এই পিচে সাফল্যের মূলমন্ত্র সেটাই। ‘স্পিনারদের উইকেট’-এ মুস্তাফিজুর রহমানের নামটাও নিতে হবে এ কারণেই। ব্যাটসম্যানদের ক্ষেত্রে মন্ত্রটা সুযোগ কাজে লাগানোর। যে ডেলিভারিতেই স্কোর করার সুযোগ আছে, পূর্ণ ব্যবহার করতে হবে সেটারই। রোশেন সিলভা প্রথম ইনিংসে যেটা করেছিলেন, করছেন দ্বিতীয় ইনিংসেও, অপরাজিত আছেন ৫৮ রানে। স্পিনে বেশ দেরি করে খেলেছেন ব্যাকফুটে, অযথা আক্রমণ করেও চাপ কমানোর চেষ্টা করেননি। চান্ডিমালের সঙ্গে তার ৫১ রানের জুটিও হয়ে দাঁড়িয়েছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। 

    দিনে বাংলাদেশের জন্য আপাতদৃষ্টিতে সবচেয়ে সফল সেশন শেষেরটাই, যেখানে এসেছে ৫ উইকেট। এক ওভারেই পরপর দুই বলে মুস্তাফিজ নিয়েছেন দুইটি, দিলরুয়ান পেরেরার ক্যাচ লিটন নিয়েছেন উইকেটের কাছঘেঁষে, আর পরের বলেই দনঞ্জয়ার এজ লিটন গ্লাভসবন্দী করেছেন উইকেটের দূরে থেকেই। কাটার দিয়ে ঝলক দেখানো মুস্তাফিজ সে ওভারে  উইকেট পেতে পারতেন আরও, লাকমালের ক্যাচ স্লিপে ছেড়েছেন সাব্বির। সামনে এসে খেলতে চাওয়া করুনারত্নকে মিড-উইকেটে ক্যাচ বানিয়েছিলেন মিরাজ, বারকয়েক ক্যাচ মিস ও রিভিউ নিয়ে বেঁচে যাওয়া ডিকভেলাও দিয়েছেন ক্যাচ, কাভারে, মাহমুদউল্লাহর হাতে। 

    এর আগে রাজ্জাকের আর্ম বলে কুশাল মেন্ডিসের এলবিডাব্লিউ, তাইজুলের টার্নের রহস্যোদ্ধার করতে না পারা ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, মুস্তাফিজের কাটারে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে এলবিডাব্লিউ হওয়া দানুশকা গুণাথিলাকার উইকেটসহ দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে তিন উইকেট পেয়েছিলেন বাংলাদেশী বোলাররা। রান উঠেছিল ৭৮, সেই সেশনটাও ছিল বাংলাদেশেরই। তবে আগের সেশনে যা হয়েছে, সেটাই যে ভুলিয়ে দিয়েছে সব! 

    আগের সেশনে ৩ রান তুলতে ৫ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ, ১৫ মিনিট ধরে চলেছে তান্ডবলীলা। ১০৭ রানে ৫ উইকেট থেকে বাংলাদেশ অল-আউট ১১০ রানেই! 

    প্রথম ধাক্কা দিয়েছিলেন সুরাঙ্গা লাকমাল, অফস্টাম্পের বাইরে নিচু হওয়া বলে কাট করতে গিয়ে লিটন বল ডেকে এনেছেন স্টাম্পে। আগেরদিন মাহমুদউল্লাহর আগে এসেছিলেন মেহেদি, এবার দুইজন মিলে গড়লেন জুটি। ৩৪ রান যোগ করে সামাল দিচ্ছিলেন লাকমাল-হেরাথদের। আকিলা দনঞ্জয়ার দুই ওভারেই বদলে গেল সবকিছু। ৫ বলের ভেতর ফিরলেন ৩ ব্যাটসম্যান। মাহমুদউল্লাহ বোল্ড, চান্ডিমালকে ক্যাচ দিয়ে শূন্য রানেই ফিরেছেন এ ম্যাচে দলে ফেরা সাব্বির। রাজ্জাক দিয়েছেন ফিরতি ক্যাচ। 

    তাইজুল হয়েছেন রান-আউট, শর্ট লেগে থাকা মেন্ডিসের দুর্দান্ত রিফ্লেক্সে ক্রিজে ফেরার সময়ই পাননি তিনি। মুস্তাফিজকে এলবিডাব্লিউ করে শেষ পেরেক ঠুকেছেন দিলরুয়ান পেরেরা। সেই যে কফিনবন্দী হলো বাংলাদেশ, এরপর দুইটা ‘ভাল’ সেশন কাটিয়েও বাংলাদেশ ভুগছে অক্সিজেনহীনতায়!