ব্যাটসম্যান ও স্পিনারদের ওপর বিশ্বাস রেখেছিল বাংলাদেশ
রঙ্গনা হেরাথ, দিলরুয়ান পেরেরার সঙ্গে অভিষিক্ত আকিলা দনঞ্জয়া। তিন স্পিনারেই ধসে গেল বাংলাদেশ ইনিংস, তিনজন মিলেই দ্বিতীয় ইনিংসে নিলেন ১০ উইকেট। স্পিন-সহায়ক উইকেট বানিয়ে উল্টো বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা করলেন একরকম অসহায় আত্মসমপর্ণ। বাংলাদেশী স্পিনাররা সফল হলেন, তবে সময় নিলেন বেশি, রানও খরচ করলেন তেমনই। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এসে এমন স্পিন-সহায়ক উইকেট দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান রোশেন সিলভা। তবে এমন উইকেট বানানোর পেছনে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ যুক্তি হিসেবে বলছেন স্পিনার ও ব্যাটসম্যানদের ওপর রাখা দলের বিশ্বাসের কথা।
তবে সেই বিশ্বাসের প্রতিদানটাই দল পায়নি বলে মনে হচ্ছে মাহমুদউল্লাহর, ‘জিনিসটা হচ্ছে, ক্রিকেট খেলা তো একটা বাজির মতো। আমরা জানতাম যে ওদের স্পিন বিভাগ খুব ভালো। আর আমাদের স্পিন বিভাগের ওপরও ভরসা রেখেছিলাম। জানতাম, আমাদের ব্যাটসম্যানদের জন্যও চ্যালেঞ্জিং হবে, কিন্তু আমরা আমাদের ব্যাটসম্যানদের ওপর ভরসা রেখেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, ব্যাটসম্যানরা ভালো পারফর্ম করতে পারেনি।’
পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে আজ রোশেন যেমন বলেছেন, ‘ঈশ্বরকে ধন্যবাদ সবার আগে, দীনেশ চান্ডিমালকে টস জিততে সহায়তা করার জন্য’। মাহমুদউল্লাহ অবশ্য টসের কথা বলেননি। চট্টগ্রামের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে যেমন চাহিদা ছিল, সে অনুযায়ী ব্যাটসম্যানরা ব্যাটিং করে টেস্ট বাঁচিয়েছিলেন। সেই মানসিকতা নিয়েই ঢাকায় এসেছিলেন তারা, ‘আপনি যদি চট্টগ্রামের কথা ধরেন, ওখানে উইকেট ব্যাটিং-সহায়ক ছিল, আমাদের ব্যাটসম্যানরা ভাল ব্যাটিং করেছে। এজন্যই এখানে আমরা চাচ্ছিলাম, উইকেটটা স্পিন-সহায়ক হোক। আমাদের ব্যাটসম্যানদের ওপর আমরা বিশ্বাস রাখি। একই সঙ্গে স্পিনারদের ওপরও বিশ্বাস করি। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত, আমাদের ব্যাটসম্যানরা পারফর্ম করতে পারেনি তাই এখন এই ধরনের কথা হচ্ছে।’
তবে এই কন্ডিশনে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যান-বোলারদের খেলার মতো দক্ষতা নেই, সেটা মানতে রাজি নন মাহমুদউল্লাহ, ‘আমার মনে হয় যে, আপনি সব মিলিয়ে দেখলে, বিদেশের সফরগুলোও দেখলে, যেখানে সাকিব ২০০ মেরেছে, মুশফিক ১৫০ মেরেছে, তামিম রান করেছে ধারাবাহিকভাবে মাশা আল্লাহ। এই সময়ের মধ্যে আমরা ঘরের মাঠে ম্যাচ জিতেছি, শ্রীলঙ্কায় ম্যাচ জিতেছি। তো আমার মনে হয়, এই ধরনের বাজিগুলো ধরতেই হবে। না হলে এভাবে টেস্ট ক্রিকেট খেলে কোন লাভ নেই।’
এমন উইকেট দেশের ক্রিকেটের জন্যই ভাল বলেও মত তার, ‘আমি মরা উইকেটে খেলব, বা ড্রয়ের জন্য খেলব, তাহলে মনে হয় আমাদের ক্রিকেট এগুবে না। সাফল্য আসবে, ব্যর্থতা আসবে। সাফল্য আপনাকে আত্মবিশ্বাস দেবে, আমাদের আরও উন্নতিও হবে। এখন যেটা হচ্ছে, আমরা আমাদের দক্ষতাগুলো দেখাতে পারছি না। যেদিন পারবো, সেদিন দেখবেন আমরাই সফল হবো।’