বাংলাদেশের রেকর্ড ছাপিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা
প্রথম টি-টোয়েন্টি, মিরপুর
বাংলাদেশ ১৯৩/৫, ২০ ওভার (মুশফিক ৬৬*, সৌম্য ৫১, মাহমুদউল্লাহ ৪৩, মেন্ডিস ২/২১, গুণাথিলাকা ১/১৬, পেরেরা ১/৩৬)
শ্রীলঙ্কা ১৯৪/৪, ১৬.৪ ওভার (মেন্ডিস ৫৩, শনাকা ৪২, পেরেরা ৩৯, নাজমুল ২/২৫, আফিফ ১/২৬)
ফল- শ্রীলঙ্কা ৬ উইকেটে জয়ী
বাংলাদেশ নিজেদের সর্বোচ্চ স্কোরের রেকর্ডটা করলো। যথেষ্ট হলো না সেটা। জিততে হলে নিজেদের রান তাড়ার রেকর্ডটা নতুন করে লিখতে হতো শ্রীলঙ্কাকে। শ্রীলঙ্কা করলো সেটাই। মিরপুরে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ১৯৪ রানের লক্ষ্য ২০ বল বাকি থাকতেই ছুঁয়েছে শ্রীলঙ্কা, গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার ১৭৩ রান তাড়া করে জেতাটাই এর আগে ছিল তাদের রেকর্ড। মেন্ডিস-শনাকা-পেরেরারা ছাপিয়ে গেছেন সৌম্য-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহকে।
১৯৩ রানের রেকর্ড সংগ্রহ- বাংলাদেশী বোলারদের জন্য প্রেরণা জোগাতে পারলো না সেটাও। অথবা এ উইকেটে শুধু খেই-ই হারাতেই পারলেন তারা। পাওয়ারপ্লের মাঝেই নিজেকে সহ ৫ জন বোলার আনলেন মাহমুদউল্লাহ, সাফল্য দিতে পেরেছিলেন শুধু নাজমুল ইসলামই। এই বাঁহাতি স্পিনার ছাড়া আর সব বোলারেরই ইকোনমি রেট ১০-এর ওপরে, ঝড় বেশি গেছে পেসারদের ওপর দিয়ে।
এমন উইকেটের চাহিদা ছিল ফুললেংথে বেশি বল করা, সেটা না করে লেগস্টাম্প ঘেঁষা লাইনই যেন প্রিয় ছিল সাইফউদ্দিনদের। মুস্তাফিজ চেষ্টা করেছিলেন, তবে চমক দেখাতে পারেননি। ১৩তম ওভারে ৫ রান দিয়েও আটকাতে পারেননি তিনি। পরের ওভারে টানা তিনটি ফুললেংথের বলের পরেরটি করেছেন ফুলটস- পুরো ইনিংসেই বাংলাদেশী বোলারদের চিত্র ছিল এটা।
কুশাল মেন্ডিস ও দানুশকা গুণাথিলাকার ৫৩ রানের ওপেনিং জুটিতে শ্রীলঙ্কা পেয়েছিল দারুণ পথের দেখা। ১৫ বলে ৩০ রান করে অভিষিক্ত নাজমুলের ফ্লাইট মিস করে স্টাম্পড হয়েছিলেন দানুশকা গুণাথিলাকা, মেন্ডিস ও থারাঙ্গার এরপর ৩৭ রানের জুটি, যেখানে থারাঙ্গার অবদান মাত্র ৪। ৫৩ রান করে আফিফ হোসেনকে তুলে মারতে গিয়ে লং-অফে ক্যাচ দিয়েছেন মেন্ডিস, পরের ওভারে আফিফকেই ক্যাচ দিয়েছেন থারাঙ্গা, নাজমুলের বলে। ৮.৩ ওভারে ৯২ রানের উড়ন্ত যাত্রাটা ক্ষণিকের জন্য থমকে দাঁড়িয়েছিল শ্রীলঙ্কার, তবে তাদেরকে মাটিতে নামিয়ে আনতে পারেননি বাংলাদেশীরা।
এরপর শুধু ডিকভেলার উইকেট পেয়েছে বাংলাদেশ, রুবেলকে পুল করতে গিয়ে ক্যাচ তুলেছিলেন যিনি। দাশুন শনাকা ও থিসারা পেরেরার ৩০ বলে ৬৫ রানের জুটিতে উল্টো মাটিতে নেমে এসেছে বাংলাদেশই।
এর আগে সৌম্য করেছেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি। লেগসাইড ঘেঁষা বলগুলোকে শাস্তি দিয়েছিলেন, বেশি জায়গা না পেয়েও কাজে লাগিয়েছিলেন শটের সুযোগ। ৩০ বলে ফিফটি করেছেন, সুইচ হিটের চেষ্টায় হয়েছেন এলবিডাব্লিউ। অবশ্য ইমপ্যাক্ট বাইরে ছিল, রিভিউ নেওয়ার বদলে নিজের চোটের দিকেই বেশি মনযোগ ছিল সৌম্যর। আফিফ ফিরেছেন ২ বল খেলেই, একটু অদ্ভুতভাবে। মেন্ডিসের বল তার প্যাড থেকে ফিরে এসে ব্যাটের পেছনদিক থেকে উঠেছে ক্যাচ। আফিফের আগে অবশ্য আরেক অভিষিক্ত জাকির দারুণ সঙ্গ দিচ্ছিলেন সৌম্যকে। গুণাথিলাকাকে স্লগের চেষ্টায় হয়েছেন বোল্ড।
১১তম ওভারে এ ২ উইকেটের সঙ্গে এসেছিল মাত্র ৩ রান, মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর ৭৩ রানের জুটিতেও তাই বাংলাদেশ ছুঁতে পারেনি ২০০। ক্যারিয়ারের প্রথমবার তিনে খেলতে নেমে ৪৪ বলে ৬৬ রানে অপরাজিত ছিলেন মুশফিক, ৭ চার ও ১ ছয়ে। মাহমুদউল্লাহ করেছিলেন ২ চার ও ছয়ে ৩১ বলে ৪৩ রান। দুইজনের জুটিতে বল খেলতে হয়েছে ৫২টি, স্কোরটাকে আরও বড় করতে হলে হয়তো এই সংখ্যাটাই কমাতে হতো।
সেটা হয়নি, রেকর্ড ভেঙ্গেও বাংলাদেশের স্কোর ১৯৩ এর বেশি হয়নি। আর সেটা যথেষ্ট হয়নি শ্রীলঙ্কাকে আটকাতেও। ফরম্যাট বদলে গেলেও তাই আরেকবার হতাশাই সঙ্গী বাংলাদেশের।