এমিরেটসেও সিটির কাছে পাত্তা পেল না আর্সেনাল
ইএফএল কাপ ফাইনাল শেষ হওয়ার আগেই ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে আর্সেনালের লাল অংশ ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল অনেকটাই। শেষদিকে গুটিকয়েক যে কয়জন ছিলেন, ম্যাচ শেষে সিটির সমর্থকদের শিরোপা উল্লাসের চেয়ে ‘গানার’ সমর্থকদের দুয়োধ্বনিই শোনা যাচ্ছিল বেশি। গত সপ্তাহের ম্যাচের পর আজ প্রিমিয়ার লিগে মুখোমুখি হয়েছিল আর্সেনাল এবং ম্যানচেস্টার সিটি। নিজেদের মাঠে হলেও সিটির কাছে এবারও পাত্তাই পায়নি ‘গানার’রা। ৩-০ গোলে আর্সেন ওয়েঙ্গারের দলকে হারিয়েছে পেপ গার্দিওলার সিটি। বড় জয়ে সিটির ম্যানেজার হিসেবে নিজের শততম ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখলেন গার্দিওলা। ‘সিটিজেন;দের হয়ে গোল তিনটি করেছেন বার্নার্দো সিলভা, ডেভিড সিলভা এবং লিরয় সানে।
ওয়েম্বলি ফাইনালের মত আজ এমিরেটসে আর্সেনাল সমর্থকদের সংখ্যা ছিল নিতান্তই হাতেগোনা। উলটো সিটি সমর্থকদের সরব উপস্থিতিতে প্রথম দর্শনে হয়ত মনে হতে পারে, এমিরেটস নয়, বরং খেলা হচ্ছে ইতিহাদেই। এমিরেটস ভর্তি সিটি সমর্থকদের হতাশ করেনি গার্দিওলার দল। ম্যাচের ১৫ মিনিটেই লিড নেয় তারা। বাঁ-প্রান্তে আর্সেনালের চারজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডিবক্সে ঢুকে সিলভাকে পাস দেন সানে। ডানপায়ের চমৎকার বাঁকানো শটে আর্সেনাল গোলরক্ষক পিটার চেককে পরাস্ত করেন এই পর্তুগিজ উইঙ্গার। ২৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সিটির আরেক সিলভা। এই গোলের কৃতিত্বটাও সানেরই। ২৮ মিনিটে আবারও আর্সেনালের ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে ডিবক্সে সার্জিও আগুয়েরোকে পাস দেন এই জার্মান। প্রথম টাচেই সিলভার দিকে পাস বাড়ান আগুয়েরো। বাঁ-পায়ের শটে ইএফএল কাপ ফাইনালের পর আবারও আর্সেনালের বিপক্ষে লক্ষ্যভেদ করেন সিলভা। প্রথম দুই গোলের মূল কারিগর ছিলেন তিনিই। ৩৩ মিনিটে নিজেই গোল করে ব্যবধান ৩-০ করেন সানে। দুর্দান্ত এক প্রতি আক্রমণে ডানপ্রান্তে ফুলব্যাক কাইল ওয়াকারের দিকে পাস বাড়ান কেভিন ডি ব্রুইন। ওয়াকারের ক্রস গোলের গজ তিনেক সামনে থেকে গোল করেন সানে। একান্তই একপেশে এক প্রথমার্ধে নিজেদের ছায়া হয়েই ছিলেন মেসুত ওজিল, হেনরিখ মিখিতারইয়ান, পিয়ের-এমেরিক অবামেয়াংরা। নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবারের মত এবারই প্রথমার্ধে তিন গোল হজমের ‘রেকর্ড’ করল আর্সেনাল।
তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচের ফেরার ক্ষীণ আশা জাগিয়েছিল আর্সেনাল। ৫২ মিনিটে আর্সেনাল স্ট্রাইকার অবামেয়াংকে ডিবক্সে ফেলে দেন নিকোলাস ওটামেন্ডি। পেনাল্টির বাঁশি দেন রেফারি। কিন্তু সুযোগটা হাতছাড়া করেন অবামেয়াংই। ১২ গজ থেকে সিটি গোলরক্ষক এডারসন মোরায়েসকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন তিনি। ম্যাচের বাকিটা সময়ও কিছুটা গা বাঁচিয়েই খেলেছে সিটি। তবে ৮৪ মিনিটে আরেকটু হলেই ব্যবধান ৪-০ করতে পারতেন আগুয়েরো। কিন্তু দারুণ এক সেভে সিটির জার্সিতে আগুয়েরোকে গোলের ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ হতে বঞ্চিত করেন চেক। রেফারির শেষ বাঁশির পর প্রথমার্ধের মত সমর্থকদের দুয়োতেই মাঠ ছাড়তে হয় ওজিল, মিখিতারইয়ানদের।
১৯৫৪-৫৫ মৌসুমের পর এবারই প্রথম চেলসি, আর্সেনাল এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে একই মৌসুমে হারাল সিটি। আজকের জয়ে টেবিলের শীর্ষে ১৬ পয়েন্টের লিড অক্ষুণ্ণ রাখল সিটি। ২৮ ম্যাচের তাদের সংগ্রহ ৭৫ পয়েন্ট। ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে আছে সিটির নগর প্রতিদ্বন্দ্বী ইউনাইটেড।