মোহামেডান-দোলেশ্বরের টাই-রোমাঞ্চ
মোহামেডান-প্রাইম দোলেশ্বর, ফতুল্লা
টস- মোহামেডান (ব্যাটিং)
মোহামেডান ২৮৬ অল-আউট, ৪৯.৫ ওভার (শামসুর ৭৫, রকিবুল ৭২, বিপুল ৫৩, ফরহাদ ৩/৬৬, মামুন ২/৫৩)
প্রাইম দোলেশ্বর ২৮৬/৯, ৫০ ওভার (লিটন ১২৯, ফরহাদ ৫২, আজিম ৬/৬৭, অনিক ৩/৫১)
ফল- ম্যাচ টাই
৭ বলে প্রয়োজন ছিল ৬, বাকি ৪ উইকেট। প্রাইম দোলেশ্বর পরপর তিন বলে হারিয়ে ফেললো তিন উইকেট। এই ৭ বলে হলো ৫ রান- প্রিমিয়ার লিগের এ মৌসুম দেখলো প্রথম টাই-রোমাঞ্চ! ফতুল্লায় দোলেশ্বর বা মোহামেডান, কেউই কাউকে হারাতে পারেনি। তবে যে অবস্থা থেকে উঠে এসেছে মোহামেডান, তাতে তারা বোলার মোহাম্মদ আজিমকে ‘নায়ক’ তকমা দিতেই পারে। শেষ ওভারের প্রথম দুই বলে দুই উইকেটের সঙ্গে এই বোলার ৬ উইকেট নিয়েছেন ৬৭ রানে, লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে যা তার সেরা বোলিং ফিগার। এ মৌসুমে নিজের ৫ম ম্যাচে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি করেও দলকে না জেতানোর আক্ষেপেই পুড়েছেন লিটন।
টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা মোহামেডানের ইনিংসের হাইলাইটস তিন ফিফটি- অধিনায়ক শামসুর রহমানের ৭৫, রকিবুল হাসানের ৭২ ও বিপুল শর্মার ৫৩। ৫ম উইকেটে শামসুর ও রকিবুল যোগ করেছেন ১০৮ রান, পরের উইকেটে রকিবুলের সঙ্গে বিপুলের জুটি ৫০ রানের। ৯ম ব্যাটসম্যান হিসেবে শেষ ওভারে গিয়ে আউট হওয়ার আগে বিপুল ঝড়ই তুলেছিলেন, ৫৩ রান করতে খেলেছেন মাত্র ৩১ বল, মেরেছেন ৩টি করে চার ও ছয়। ৬৬ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন ফরহাদ রেজা- যার মাঝে আছে রকিবুল ও বিপুলের উইকেট। আর শামসুরের উইকেট নেওয়া মামুন নিয়েছেন ২টি।
রান তাড়ায় ১৪ রানে ওপেনিং সঙ্গী হারিয়ে ফেললেও অবিচল ছিলেন লিটন, করেছেন ১২২ বলে ১২৯ রান, ৮টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ২টি ছয়। ফজলে মাহমুদ ও মার্শাল আইয়ুব লিটনকে সঙ্গ দিয়েছেন, তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি কেউই। যেটা পেরেছেন ফরহাদ হোসেন। ৫২ বলে করেছেন ৫২, লিটনের সঙ্গে ৪র্থ উইকেটে তার জুটি ১২৪ রানের।
ফরহাদ-লিটন ফেরার পরে ৩০ বলে দরকার ছিল ৩৫, আজিমের এক ওভারে ১১ রান নিয়ে সেটা ২৪ বলে ২৪ রানে নামিয়ে এনেছিলেন জোহাইব খান। কাজী অনিকের করা ৪৯তম ওভারের শেষ বলে ক্যাচ দিয়ে দোলেশ্বরের উল্টো যাত্রাটা শুরু করেছিলেন শরীফুল্লাহ, যার শেষটা হয়েছিল আজিমের বলে জোহাইব ক্যাচ দেওয়ায়। মাঝে আজিমের বলেই ক্যাচ দিয়েছেন মোহাম্মদ আরাফাত। আরাফাত সানি ও মামুন মিলে পরের ৪ বলে নিতে পেরেছেন ৪ রানই।
এই ম্যাচের প্রতীকি চিত্র ধরা যায় লিটনের উইকেটটিকে। ৪৩তম ওভারে গিয়ে তাইজুল ইসলামের হাতে মোহাম্মদ আজিমের বলে দিয়েছেন ক্যাচ, ৪২ বলে দোলেশ্বরের প্রয়োজন ছিল তখন ৫৬ রান। লিটনের সেঞ্চুরির ভিতে দাঁড়িয়ে দোলেশ্বর সেখান থেকে তুলতে পারল ৫৫, আর লিটনকে ছাপিয়ে ম্যাচসেরা হয়ে গেলেন আজিম।
টাই-ম্যাচের ব্যাপারটাই এমন। না হারলেও কেউ কেউ যে ভোগেন না জেতার আক্ষেপে! তাতে অবশ্য টাই-ম্যাচের রোমাঞ্চের কিছুই যায় আসে না!