নিজেদের দিনেও স্বস্তিতে নেই দঃ আফ্রিকা
ডারবান টেস্ট, তৃতীয় দিনশেষে
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস ৩৫১ অল-আউট (মিচেল মার্শ ৯৬, স্মিথ ৫৬, ওয়ার্নার ৫১, মহারাজ ৫/১২৩) ও ২য় ইনিংস ২১৩/৯ (ব্যানক্রফট ৫৩, স্মিথ ৩৮, মরকেল ৩/৪২, মহারাজ ৩/৯৩)
দক্ষিণ আফ্রিকা ১৬২ অল-আউট (ডি ভিলিয়ার্স ৭১*, মার্করাম ৩২, স্টার্ক ৫/৩৪, লায়ন ৩/৫০)
অস্ট্রেলিয়া ৪০২ রানে এগিয়ে
কিংসমিডে দিনের খেলা আলোকস্বল্পতায় শেষ হয়েছে আগেভাগেই। ডারবানের আকাশজুড়ে ছিল কালো মেঘ, দক্ষিণ আফ্রিকান দলেরও একই অবস্থা। দিনটা তাদেরই, ২১৩ রানে অস্ট্রেলিয়ার নেই ৯ উইকেট। তবে অস্ট্রেলিয়ার এটি দ্বিতীয় ইনিংস, লিড এখনই পেরিয়ে গেছে ৪০০। দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে এখনই পাহাড় ডিঙিয়ে আকাশ ছোঁয়ার মতো কাজ, বোলাররা হাসি ফোটাতে চাইলেও তাই ঠিক হাসতে পারছে না দক্ষিণ আফ্রিকা!
এখনই দক্ষিণ আফ্রিকাকে পঞ্চম সর্বোচ্চ রান তাড়া করতে হবে, ভাঙতে হবে ৬৭ বছরের পুরোনো রেকর্ড। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডটি হয়েছিল ১৯৫০ সালে, নিল হার্ভির অপরাজিত ১৫১ রানে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়াই। আফ্রিকা অবশ্য সাম্প্রতিক সময়ে তাকিয়ে একটু সাহস পেতে পারে, ২০০২ সালে এই ভেন্যুতেই অস্ট্রেলিয়ার ৩৩৫ রান তাড়া করেছিল তারা। আর পার্থে ২০০৮ সালে তাদের ৪১৪ রান তাড়া করে জেতাটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান-তাড়ার রেকর্ড।
আগেরদিনে বোলারদের সাফল্যের রেশেই কিনা ক্যামেরন ব্যানক্রফট ও ডেভিড ওয়ার্নারের ওপেনিং জুটিতে অস্ট্রেলিয়ার দিনের শুরুটা হয়েছিল ভালই। তাদের ফিফটি পেরুনো জুটি ভেঙেছে রাবাদার বলে ওয়ার্নার মিস-হিটের পুলে মিড-অনে ক্যাচ দেওয়ায়। মহারাজকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে নিজের সংক্ষিপ্ত সময় ফুরিয়ে এনেছেন উসমান খাওয়াজা, গ্লাভসে লেগে ওঠা ক্যাচটা সহজে ধরেছেন কুইন্টন ডি কক, যে উইকেটটা আফ্রিকা পেয়েছে রিভিউয়ে।
সারাদিন ধরেই ছিল রিভিউয়ের ঘনঘটা, এরপর রিভিউ হয়েছে আরও চারটি। পার্ট-টাইমার ডিন এলগারকে সুইপ করতে গিয়ে এলবিডাব্লিউ হয়েছেন স্মিথ, রিভিউ নিয়েও বাঁচেননি। এর আগে মহারাজকে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে খেলতে গিয়ে টার্নে ধোঁকা খেয়ে স্টাম্পড হয়েছেন ফিফটি করা ব্যানক্রফট। তার ইনিংস ছিল স্ট্রোকে ভরপুর, ১০ চারে করেছেন ৫৩। রাবাদার রিভার্স সুইংয়ে এজড হয়ে স্লিপে ক্যাচ দিয়েছেন আগের ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার সেরা ব্যাটসম্যান মিচেল মার্শ, এবার ছয় রান করেই। টেস্ট ক্যারিয়ারে এটি হাশিম আমলার ১০০তম ক্যাচ।
চা-বিরতির আগে মহারাজের তৃতীয় শিকার বনেছেন টিম পেইন, স্লিপে নীচু হয়ে ধরেছেন ডি ভিলিয়ার্স। আম্পায়ারের রিভিউতে ভিলিয়ার্সই সঠিক প্রমাণিত হয়েছেন। এরপর চলেছে মরকেল শো, শেষবেলায় তিনি নিয়েছেন আরও তিন উইকেট। শন মার্শ ও ন্যাথান লায়ন দিয়েছেন স্লিপে ক্যাচ, মাঝে কাভারে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন এলগার। তবে সে ক্যাচ নিতে গিয়ে পাওয়া চোটে উঠে যেতে হয়েছে তাকে। পরে অবশ্য জানানো হয়েছে, দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করবেন তিনি।
দক্ষিণ আফ্রিকার অবস্থাও এলগারের মতোই। দারুণ দিন কাটানোর পরও হাসতে পারছে না তারা, সামগ্রিক টেস্ট বিবেচনায়। অস্ট্রেলিয়া যে এরই মাঝে এগিয়ে গেছে রেকর্ড-দূরে! এলগারের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করার খবরের মতো কোনও আশা কি দেখতে পাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা?