দিনটা অস্ট্রেলিয়ার হতে দিলেন না ডি ভিলিয়ার্স
এ যেন মহাভারতের বিনা যুদ্ধে নাহি দেব সূচাগ্র মেদিনীর সেই গল্প। প্রথম দিনের মতো আজও অস্ট্রেলিয়া আর দক্ষিণ আফ্রিকা , কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলল না। একবার দক্ষিণ আফ্রিকা এগিয়ে যায় তো, অস্ট্রেলিয়া এসে আরেকবার রাশ টেনে ধরে। পোর্ত এলিজাবেথ টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা এগিয়ে ২০ রানে, হাতে আছে ৩ উইকেট। তার চেয়েও বড় কথা, ৮১ বলে ৭৪ রান করে এখনো ক্রিজে আছেন এবি ডি ভিলিয়ার্স।
ডি ভিলিয়ার্সই আসলে দিনটা অস্ট্রেলিয়ার হতে দেননি ডি ভিলিয়ার্সই। এক পাশে দেখছিলেন সতীর্থদের আসা যাওয়া, একটা সময় দক্ষিণ আফ্রিকা ১৮৩ রানে হারিয়ে ফেলেছিল ৬ উইকেট। ডি ভিলিয়ার্স ‘আক্রমণই সেরা রক্ষণ’ মন্ত্রে খেলেছেন নিজের স্বভাবসুলভ খেলা। অন্য পাশে ১৪ রানে অপরাজিত থেকে তাঁকে সং দিয়ে যাচ্ছেন ভারনন ফিল্যান্ডার। দুজনের ৩৬ রানের জুটিটা কাল টেনে নিয়ে যেতে চাইবেন আরও অনেকদূর।
অথচ তার আগে মনে হচ্ছিল, রিভার্স সুইংয়েই দক্ষিণ আফ্রিকার ভুভুজেলা স্তব্ধ হয়ে যাবে। ডিন এলগার ও হাশিম আমলা দিনের শুরু থেকেই দাঁড়িয়ে ছিলেন চীনের প্রাচীর হয়ে। কামিন্স-হ্যাজলউডরা একদমই স্বস্তিতে থাকার সুযোগ দেননি। ধৈর্যের পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে সব প্রলোভন এড়িয়ে গেছেন। প্রথম সেশনে অবশ্য উঠেছিল ৭০ রান, কিন্তু পরের সেশনে উঠল মাত্র ৪৩ রান। কিন্তু দুই সেশন মিলে শুধু রাবাদার উইকেটটাই পেল অস্ট্রেলিয়া। এর মধ্যে এলগার-আমলা দুজনেই পেলেন ফিফটি। আমলা অবশ্য দুবার আউট হয়েছিলেন, দুবারই রিভিউ নিয়ে ভুল প্রমাণ করলেন আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত।
কিন্তু চা বিরতির পরেই যেন ভোজবাজির মতো বদলে গেল। আরও বেশি রিভার্স সুইং পেতে শুরু করলেন কামিন্সরা। স্টার্কের দারুণ এক বলে আমলা বোল্ড ৫৬ রানে, পরের ওভারেই হ্যাজলউডের তার চেয়েও দারুণ একটা বলে এলগার ৫৭ রানে ক্যাচ দিলেন উইকেটের পেছনে। ১৫৫ রানে ৪ উইকেট হারাল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেটাও রিভার্স সুইংয়ের কল্যাণেই।
মিচেল মার্শ বোলিংয়ে এলেন, ৯ রানে ডু প্লেসিকে এলবিডব্লু করলেন। নিজের পরের ওভারেই ডি ব্রুইনকে ফিরিয়ে দিলেন ১ রানে। ডি ককে নিয়ে ডি ভিলিয়ার্স এরপর শুরু করলেন পালটা আক্রমণ, কিন্তু লায়নের দুর্দান্ত এক বলে ডি ককের বোল্ডে শেষ হয়ে গেল দুজনের ৪০ রানের জুটি। এরপর বাকি সময় আর কোনো বিপদ হতে দেননি ডি ভিলিয়ার্স- ফিল্যান্ডার।