রেফারি ও ভাগ্য বাঁচিয়ে দিল চিলিকে
কোপা আমেরিকা ২০১৫’র পর্দা উঠলো আজ। খেলার ফলাফল কি তা ইতিমধ্যে সবাই জেনেও গেছেন। স্বাগতিক হওয়ার কারণে তো বটেই, দলে প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের ছড়াছড়ির কারণেও এবার কোপার অন্যতম ফেবারিট হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে চিলি। দেশের মাটিতে খেলাটা উজ্জীবিত করতে পারতো চিলিকে। কিন্তু হল উল্টো। স্বাগতিক হওয়ার চাপ এঁটে বসলো গলায়। প্রথম থেকেই নার্ভাস থাকায় বিশ্বকাপের চিলিকে খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিলো না। যারা কিনা গতি দিয়ে পরাস্ত করেছিল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেনকে। দ্বিতীয় রাউন্ডে আরেকটু হলেই বিদায় করে দিচ্ছিল স্বাগতিক ব্রাজিলকে। আজ তাঁরাই বারবার খেই হারিয়ে ফেলছিলো ইকুয়েডরের সামনে।
আক্রমণ কম করেনি চিলি। কিন্তু সানচেজ আর আর্তুরো ভিদালের বানিয়ে দেয়া বলগুলো গোলে রূপান্তরিত করতে পারছিলেন না কোন চিলিয়ান স্ট্রাইকার। একটা সময় পর্যন্ত মনে হচ্ছিলো ইকুয়েডরের সাথে পয়েন্ট বোধহয় ভাগাভাগিই করতে হবে চিলিকে। কিন্তু খেলার ৬৭ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ আর্তুরো ভিদাল। অত্যন্ত ফালতু সিদ্ধান্ত। এইরকম নিরীহ ট্যাকলিঙে পেনাল্টি দেওয়ার কোন মানেই হয় না। ভাগ্যিস ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো কোপাতে খেলছেন না!!!!
চিলির দ্বিতীয় গোল নিয়ে কিছু বলার নেই। খালি চোখে অফসাইড মনে হলেও এটা অফসাইড ছিল না। ৮৪ মিনিট পর্যন্ত ডিফেন্সকে ‘বেহুলার বাসরঘর’ বানিয়ে রেখেছিলো ইকুয়েডর। এ সময়ই প্রথম মেজর ভুল করে বসে তাঁরা। ম্যাচে, প্রায়ই ইকুয়েডর রক্ষণে ত্রাস ছড়ানো সানচেজের পা থেকে বল কাড়তে গিয়ে আনমার্কড অবস্থায় থেকে যান স্ট্রাইকার এদুয়ার্দো ভার্গাস। সুযোগ পেয়ে আক্ষরিক অর্থেই ‘পায়ে ঠেলে’ দেন তিনি। সানচেজের পা থেকে বল পেয়ে গোল করে দলকে ২-০ তে এগিয়ে দিতে ভুল করেননি ভার্গাস।
চিলির দুশ্চিন্তার নাম হতে পারে ফরোয়ার্ড লাইন। একটা ভালো ‘নাম্বার নাইন’এর অভাবে ভুগেছে আজ দুদলই। দেশের মাটিতে চিলি যদি কোপা জিততে চায় কোচ সামপাওলির এদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিৎ এখনই। কারণ এই দিন দিন নয়, আরও দিন আছে। প্রত্যেকদিন নিশ্চয়ই দুই ‘ভি’ ভিদাল আর ভার্গাস মিলে তৃতীয় ভি ‘ভিক্টরি’ এনে দেবেন না!!!
আর ইকুয়েডরের কথা বলতেই হচ্ছে আলাদা করে। চিলির সাথে তাঁদের পারার কথা ছিল না। তাঁরা পারেওনি। কিন্তু চিলিয়ানদের তাঁরা সমস্যায় ফেলছিলো বারবার। ডিফেন্স তো বটেই, আক্রমণেও। দুর্দান্ত কয়েকটা সেভ করেছেন কিপার আলেকজান্ডার ডমিংগুয়েজ। একবার তো প্রায় গোল হয়েই যাচ্ছিলো, চিলিকে বাঁচালো স্রেফ ভাগ্য। ইকুয়েডরের এক খেলোয়াড়ের হেড ফিরে আসলো বারে লেগে। এই গোলটা হলে আর ভিদালের পেনাল্টিটা না হলে আজ অন্তত ১ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারতো তাঁরা।
ভাগ্য আর রেফারীকে তাই দুষতেই পারে ইকুয়েডর।