লিস্ট 'এ'-তে ৮ উইকেটের 'একাদশ'
নিজের তৃতীয় লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে ইতিহাস গড়েছেন ইয়াসিন আরাফাত। গাজী গ্রুপের ডানহাতি পেসার আবাহনীর বিপক্ষে নিয়েছেন ৮ উইকেট, ৪০ রানে। কোনও বাংলাদেশী বোলারের এই কীর্তি এই প্রথম, এর আগে সেরা বোলিং ফিগার ছিল বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাকের। ২০০৪ সালে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ১৭ রানে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি, জিম্বাবুয়ে ‘এ’ দলের বিপক্ষে।
লিস্ট ‘এ’-তে সব মিলিয়ে সেরা বোলিং ফিগার দিল্লির স্পিনার রাহুল সাঙভির। ১৯৯৭ সালে উনার ইন্দিরা গান্ধি স্টেডিয়ামে ১৫ রানে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি হিমাচল প্রদেশের বিপক্ষে, ৫০ ওভারে ১৭৩ রান করেও তাই ৯০ রানে জিতেছিল দিল্লি।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ইনিংসে ৮ উইকেট ইয়েসিনের আগে রাহুল-সহ আছে ১০ জনের। সবার আগে এই কীর্তি গড়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেসার কিথ বয়েস। ১৯৭১ সালে ল্যাঙ্কাশায়ারকে একাই ধসে দিয়েছিলেন এসেক্সের পেসার। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ২১৭ রানের লক্ষ্যে বয়েসের তোপে পড়ে ৮৭ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল ‘রেড রোজ’রা।
ওয়ানডেতে ৮ উইকেটের একমাত্র কীর্তি আছে শ্রীলঙ্কান পেসার চামিন্দা ভাসের, ক্রিকেটের এই ফরম্যাটের সেরা বোলিং ফিগারও তাই সেটিই। ২০০১ সালে সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে এই বাঁহাতি পেসারের তোপে পড়ে ৩৮ রানে অল-আউট হয়ে গিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ৮ উইকেট নিতে ভাস খরচ করেছিলেন ১৯ রান।
দাশুন কোত্তেহেওয়া ক্যারিয়ারে লিস্ট ‘এ’ ম্যাচই খেলেছেন ৩৪টি। তাতেই ঢুকে গেছেন ইতিহাসে, ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে রাগামার বিপক্ষে ৮ উইকেট নিতে ২০ রান খরচ করেছিলেন ননডেস্ক্রিপটস ক্রিকেট ক্লাবের ডানহাতি পেসার। কোত্তেহেওয়া ৮ উইকেট নিয়েছিলেন ২০০৭ সালের ২ ডিসেম্বর, ওই একই টুর্নামেন্টে ৬ দিন পর ৮ উইকেট নিলেন আরেক বোলার! বার্ঘার রিক্রিয়েশন ক্লাবের বাঁহাতি পেসার রমেশ এরাঙ্গার তোপে পড়লো শ্রীলঙ্কান আর্মি, এরাঙ্গা ৮ উইকেট নিতে অবশ্য কোত্তেহেওয়ার চেয়ে খরচ করলেন ১০ রান বেশি।
১৯৮৮ সালে ডার্বিশায়ারের টপ অর্ডার মুচড়ে গিয়েছিল মাইকেল হোল্ডিংয়ের বোলিং তোপে। তাদের প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানসহ আট জন ‘হুইস্পারিং ডেথ’-এর কোনও জবাব দিতে পারেননি, ৮ উইকেট নিতে ২১ রান খরচ করেছিলেন সাসেক্সের পেসার।
ডেরেক আন্ডারউড যেমন ইংল্যান্ড কিংবদন্তি, তিনি কিংবদন্তি কেন্টেরও। ১৯৮৭ সালে এডিনবরায় আন্ডারউডের বাঁহাতি মিডিয়াম পেসের জবাব ছিল না স্কটিশ ব্যাটসম্যানদের কাছে, ৫৭২টি লিস্ট ‘এ’ উইকেট নেওয়া বোলারের সেরা ফিগার ছিল সেদিনই- ৩১ রানে ৮ উইকেট। স্কটল্যান্ড থেমে গিয়েছিল ৭৪ রানেই।
২০০৪ সালে অ্যাডিলেড ওভালে তাসমানিয়ার সঙ্গে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার শন টেইট। খরচ করেছিলেন ৪৩ রান, একটু চমকপ্রদ ব্যাপার হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার গতি তারকার ওয়ানডেতে কোনও ৫ উইকেটের বোলিং ফিগারই নেই!
এ তালিকায় সবচেয়ে অভাগা ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান পেসার কেভিন স্ট্রোউট। ওল্ড ট্রাফোর্ডে ল্যাঙ্কাশায়ের বিপক্ষে ৫২ রানে ৮ উইকেট নিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের হয়ে সফর করা স্ট্রোউট, কিন্তু হেরেছিল তার দল! ল্যাঙ্কাশায়ারের ২৭১ রানের জবাবে ২১৮ রানেই থমকে গিয়েছিল ক্যারিবীয় ‘এ’ দল।
লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে সাইমন ফ্রান্সিসের উইকেট ৭৭টি, এর ৮টিই এসেছিল এক ম্যাচে। ডার্বির কাউন্টি গ্রাউন্ডে ৮ উইকেট নিতে ৬৬ রান খরচ করেছিলেন সমারসেটের পেসার। এ তালিকায় সবচেয়ে খরুচে বোলার তিনি, তবে স্ট্রোউটের মতো পরাজয়ের আক্ষেপে পুড়তে হয়নি তাকে!