• দক্ষিণ আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া সিরিজ
  • " />

     

    টেম্পারিং 'শিল্পে' অভ্যস্ত না বাংলাদেশ

    টেম্পারিং 'শিল্পে' অভ্যস্ত না বাংলাদেশ    

    অস্ট্রেলিয়ার বল-টেম্পারিং নিয়ে রীতিমতো ঝড় বয়ে গেছে ক্রিকেট বিশ্বে। তবে সে ঝড়ের ঝাপটা খুব একটা লাগছে না বাংলাদেশ ক্রিকেটে, সাবেক দুই অধিনায়ক বলছেন, বাংলাদেশী ক্রিকেটাররা এসবে অভ্যস্ত না। বল-টেম্পারিং ধরনের কিছু এদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো দূরের কথা, ঘরোয়াতেও হয়নি বলে ধারণা হাবিবুল বাশার সুমন ও আকরাম খানের। তবে আরেক সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজনের মতে, বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে 'এসব কিছু'র অভ্যাস ছিল পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের। 

    ‘না আসলে, আন্তর্জাতিক ম্যাচে তো হয়ইনি, আর ঘরোয়াতে…’, বলছেন বাশার, ‘প্রধানত এগুলো হয় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে। তবে আমি বলের আকৃতি সেভাবে বদলানো বা ওইরকম কিছু দেখিনি। আমাদের ছেলেদের মাঝে এমন কিছু দেখিনি। আমরা আসলে অভ্যস্ত না, আমাদের ছেলেরা এসবে অভ্যস্ত না।’ 

    তবে টেম্পারিংকে ‘শিল্প’ বলছেন বাশার, ‘আন্তর্জাতিক ম্যাচে আমরা এসব করিনি, দেখিনিও। আসলে বল টেম্পারিং, এটা একটা শিল্প। তবে আমাদের ছেলেরা সে পথে হাঁটেনি।’ 

    মূলত রিভার্স সুইংয়ের আশাতেই বলের ওপর বাড়তি কিছু করতে হয় বোলারদের, আর বাকি ফিল্ডারদেরও। ক্রিকেটে এই বিতর্ক ঘুরে-ফিরেই আসে, অনেকেই বল-টেম্পারিংকে স্বীকৃতি দেওয়া কথাও বলেন। বাশার অবশ্য তেমন স্বীকৃতির কথা না বলে বলছেন, বলের দেখভাল করতে বোলারদের আরেকটু স্বাধীনতা দেওয়া উচিৎ, ‘আমার মনে হয় টেম্পারিং থেকে...আমি যেটা মনে করি যে বলটা দেখভাল করা করা। সেই বিষয়ে বোলারদের হয়ত একটু স্বাধীনতা দেওয়া উচিত।’

    ‘এখন যদি দেখেন উইকেট অনেক ফ্ল্যাট হয়ে গেছে। এখন বোলারদের জন্য কাজটা অনেক কঠিন। নিয়ম-কানুন সব বোলারদের বিপক্ষে। আমি বলব না বলের আকৃতি বদলানো বা শিরিষ কাগজ ব্যবহার করে উজ্জ্বলতা নষ্ট করা। সেটা আমি কখনই সমর্থন করি না। বল দেখভালের স্বাভাবিক পদ্ধতিতে মনে হয় বোলারদের একটু স্বাধীনতা দেওয়া উচিত।’

    অস্ট্রেলিয়ার এই টেম্পারিংয়ে বেশ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে তাদের ক্রিকেট বোর্ড। আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছাড়া বাকি বিষয়গুলো দেখভাল করতে হয় বোর্ডকেই, চাকিং বা টেম্পারিংয়ের মতো ব্যাপারগুলোতে। তবে সাম্প্রতিক ঘটনার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বাড়তি সচেতন হওয়ার দরকার আছে বলে মনে করেন না ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম, ‘যারা খেলছে, তারা খুবই সচেতন। সব কিছু স্বাভাবিকভাবে নেয়। নেতিবাচক কিছু করে জেতার মানসিকতা নেই এবং থাকবেও না এই বিশ্বাস করি। বোর্ডের তাই আলাদা করে সচেতন হওয়ার দরকার নেই।’ 

    ‘(ফুটেজ নেই, কিন্তু)ম্যাচ রেফারি থাকে, আম্পায়াররা থাকে, মনে হয় না এমন কিছু আছে। আল্লাহর রহমতে আমাদের এসব কিছু নেই।’

    মাহমুদ বলছেন, 'আমরা সব সময় স্বচ্ছ ক্রিকেট খেলেছি। আমাদের এমন (টেম্পারিং করার) বিশেষজ্ঞও নাই বলতে গেলে। বাংলাদেশ পাকিস্তানি অনেক খেলোয়াড় লিগ খেলতে আসত। ঢাকা লিগে এটা অনেক হতো। অনেক অভিযোগ ছিল এটা নিয়ে। ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে দেখবেন যে, কোনো বোলার প্রথম ৫ ওভারে ৪০ রান দিত, পরে ৫ রানে ৫ উইকেট নিয়ে নিত। বল রিভার্স হতো এই কারণে। পাকিস্তানিরা যখনই আসত এটা হতো। ধরে নিতাম যে তারা আসলে এটা জানে বা করে । কিন্তু এখন যেটা হলো আসলে খুবই দুঃখজনক। এত বড় বড় দল তাদের কেন এসব করতে হবে। মিনোস বা আমরা করলে কী হতো জানি না। কিন্তু বাংলাদেশের কাউকে আমি দেখিনি আসলে।'

    'প্রিমিয়ার লিগে এখন সুযোগটা কম। তিনজন খেলত আগে, এখন একজন খেলে। বিপিএলে কিছু ক্ষেত্রে হচ্ছে না যে তা না। হয়তবা হচ্ছে আমরা বুঝতে পারি না। এটা যারা করে তারা অনেক কৌশলে করে, অনেক পন্থা অবলম্বন করে। এটা স্বচ্ছ না। কিন্তু অনেক কিংবদন্তিরা এটা করেছে, কাজেই এটাকে খেলার অংশই বলতে হবে এখন।'