রোমাঞ্চকর ম্যাচে রেফারিং বিতর্ক
চিলির কোচ হোর্হে সাম্পাওলি পারলে লাইন্সম্যানকে মেরে বসেন। হয়তো কিছু অশ্রাব্য গালিগালাজও করলেন। লাইন্সম্যান যে এইমাত্র অ্যালেক্সিস সানচেজের বৈধ গোলটাকে ‘অবৈধ’ বলে ঘোষণা করেছেন।
চিলি বনাম মেক্সিকোর এই ম্যাচে সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দিলো রেফারিং। সানচেজের গোলের কথা তো বলা হল আগেই। এর আগে অফসাইডের অজুহাতে বাতিল হলো জর্জ ভালদিভিয়ার গোলও। ভালদিভিয়ার গোল নিয়ে কিছুটা সন্দেহ থাকতে পারে। কিন্তু সানচেজের গোল নিয়ে কোনই সন্দেহ ছিল না। সাম্পাওলিকে তাই খুব বেশি দোষ দেওয়া যাচ্ছে না। জেতা ম্যাচ রেফারির কারণে ড্র হলে কার ভালো লাগে?
অথচ এই ম্যাচ যে এতো উত্তেজনাপূর্ণ হবে তা কে ভেবেছিলো? শুরুতে ছিল এলোমেলো, ভুল পাসের ছড়াছড়ি। চিলি বারবার এগিয়ে গিয়েও খেই হারিয়ে ফেলছিলো মেক্সিকোর ডিফেন্সের সামনে। এর মাঝেই স্রোতের বিপরীতে গোল করে বসে মেক্সিকো। গোল খেয়ে গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে চিলি। ১ মিনিটের মধ্যেই সমতা আনে ‘লা রোজা’রা। আর্তুরো ভিদালকে খুঁজে নিলো আরাঙ্গুইজের নিখুঁত প্লেসমেন্টের কর্নার। ভিদাল লাফিয়ে উঠে যে হেড করলেন তা মনে করিয়ে দিলো ১৯৯৮ বিশ্বকাপ ফাইনালের জিদানকে।
এর কিছুক্ষণ পরে আবারও মেক্সিকোর লিড। আদ্রিয়ানের কর্নারে মাথা ছুঁইয়ে ‘বাঁকানো রঙধনু’র মতো এক গোল করেন রাউল জিমিনেজ। বিরতির কিছুক্ষণ আগে ভিদালের অসাধারণ এক ক্রসে দুর্দান্ত হেডে স্কোর ২-২ করেন এদুয়ার্দো ভার্গাস। বিরতি হয় ঐ অবস্থাতেই।
ভিদাল যেন প্রতিজ্ঞা করেছেন চ্যাম্পিয়নস লীগ না জেতার দুঃখ তিনি কোপা আমেরিকা দিয়েই মেটাবেন। ভিদাল শো তাই চললো দ্বিতীয়ার্ধেও। ৫৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে প্রথমবারেরমতো ম্যাচে চিলিকে এগিয়ে নেন তিনি। কিন্তু চিলির ডিফেন্সের ভুলে ৬৬ মিনিটে সমতা আনেন মাতিয়াস ভুসো। এর আগে পরে মিলিয়ে চিলির ২টা গোল বাতিল হলে ১ পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়তে বাধ্য হয় চিলি।
ভিদাল নিজে ২ গোল করেছেন, করিয়েছেন আরও ১ গোল। খেলেছেন পুরো মাঠ জুড়ে। ম্যান অব দ্য ম্যাচ বেছে নিতে নির্বাচকদের তাই কষ্ট হয়নি মোটেও।
আজ জিতলেই চিলি কোয়ার্টার ফাইনালে চলে যেতো। কিন্তু তা না হওয়ায় তাঁদেরকে অপেক্ষা করতে হচ্ছে আগামী শনিবার পর্যন্ত। সেদিন চিলি খেলবে এখন পর্যন্ত এই টুর্নামেন্টে দারুণ খেলা বলিভিয়ার সাথে। সমীকরণ খুব সহজ। জিতলেই কোয়ার্টার ফাইনাল, তবে ড্র করলে এমনকি হারলেও সুযোগ থাকবে। সে ক্ষেত্রে নির্ভর করতে হবে অনেক যদি, কিন্তু’র উপরে।
দেশের মাটিতে এতো ‘ঝামেলা’র মধ্যে নিশ্চয়ই যেতে চাইবে না চিলি।