১৭ বছর পর পর্তুগালকে হারাল নেদারল্যান্ডস
২০১২ ইউরোতে মুখোমুখি হয়েছিল দু’দল। রাফায়েল ভ্যান ডার ভার্টের গোলে এগিয়ে গেলেও জোড়া গোলে সেদিন নেদারল্যান্ডস সমর্থকদের মুখের হাসি কেড়ে নিয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। মাঝে ২০১৪ তে একটি প্রীতি ম্যাচে ড্র করলেও পর্তুগালের কাছে সেই হারের স্মৃতি ভুলতে পারেননি ডাচ সমর্থকেরা। বছর চারেক বাদে আবারও প্রীতি ম্যাচে মুখোমুখি হল পর্তুগাল-নেদারল্যান্ডস। এবার কিছুটা হলেও ‘১২ ইউরোর হারের কষ্টটা লাঘব করল রোনাল্ড কুম্যানের দল। পর্তুগালকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে ‘ডাচ’রা। গোল তিনটি করেছেন মেম্ফিস ডিপাই, রায়ান বাবেল এবং ভার্জিল ভ্যান ডাইক। ১৯৯১ সালের পর আজ প্রথমবার পর্তুগালের বিপক্ষে জয় পেল নেদারল্যান্ডস।
মিশরের বিপক্ষে ম্যাচের মাত্র দুই দিন বাদেই আবারও মাঠে নামা। ফুটবলারদের স্বল্প বিশ্রামের কথা ভেবেই হয়ত তরুণদের ওপরই আস্থা রেখেছিলেন পর্তুগাল কোচ ফার্নান্দো সান্তোস। রোনালদো বাদে দলে ছিলেন না মূল একাদশের তেমন কেউই। স্বাভাবিকভাবেই বোঝাপড়ার অভাব ভোগা এই তরুণ পর্তুগালকে পেয়েই জ্বলে উঠে নেদারল্যান্ডস। ম্যাচের ১১ মিনিটেই লিডটাও নিয়ে নেয় রোনাল্ড কুম্যানের দল। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো থেকে পাদপ্রদীপের আলোটা কেড়ে নেন ‘ডাচ রোনালদো’ খ্যাত মেম্ফিস ডিপাই। আয়াক্স মিডফিল্ডার ডনি ভ্যান ডি বিকের থ্রু পাস থেকে পর্তুগিজ গোলরক্ষক অ্যান্থনি লোপেজকে পরাস্ত করেন এই উইঙ্গার। ‘অরেঞ্জ’দের হয়ে নিজের শেষ ৫ ম্যাচে ৪ বার লক্ষ্যভেদ করলেন ডিপাই।
গোল হজম করলেও বল দখলের লড়াই, গোলের সুযোগ তৈরিতে এগিয়ে ছিল পর্তুগালই। কিন্তু আক্রমণভাগে ব্রুনো ফার্নান্দেজ, আন্দ্রে গোমেজরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। চেষ্টা করে গেছেন রোনালদোও। ৩২ মিনিটে রাইটব্যাক মাথিয়াস ডি লিটের ক্রসে হেড করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন সাবেক লিভারপুল স্ট্রাইকার রায়ান বাবেল। দুই গোলে এগিয়ে থেকেও ক্ষান্ত দেয়নি কুম্যানের নেদারল্যান্ডস। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ডিপাইয়ের কর্ণার ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হয় পর্তুগাল। ডিবক্সে বল পেয়েই ডানপায়ের জোরাল ভলিতে গোল করেন সর্বকালের সবচেয়ে দামী ডিফেন্ডার ভার্জিল ভ্যান ডাইক।
প্রথমার্ধে অনভিজ্ঞ দল নামানোর ভুলটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন সান্তোস। দ্বিতীর্ধের শুরুতেই ব্যবধান কমানোর জন্য আন্দ্রে সিলভা, গঞ্জালো গুয়েদেস, জেলসন মার্টিন্সকে নামিয়ে দেন পর্তুগিজ কোচ। তবে এতেও লাভ হয়নি খুব একটা। উলটো ম্যাচের ৬২ মিনিটে পর্তুগিজ রাইটব্যাক জোয়াও ক্যান্সেলো দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে কাজটা আরও কঠিন হয়ে যায় পর্তুগালের জন্য। ৬৮ মিনিটে রোনালদোকে উঠিয়ে হোয়াও মুটিনিয়োকে নামিয়ে দেন সান্তোস। টানা ৯ ম্যাচ পর আজ গোল করতে ব্যর্থ হলেন পর্তুগিজ অধিনায়ক। রোনালদোকে ছাড়া ধারহীন পর্তুগিজ আক্রমণকে সামলাতে তেমন বেগ পেতে হয়নি ডাচ রক্ষণভাগকে। দ্বিতীয়ার্ধের অতিরিক্ত সময়ে মার্টিন্সের শট লাইন থেকে ফিরিয়ে দেন ডাচ ডিফেন্ডার গাস টিল। পর্যন্ত ৩-০ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে ডিপাইরা। টানা ৯ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর আজ হারের স্বাদ পেল সান্তোসের পর্তুগাল।