অপরাজিত থাকার রেকর্ডটা ব্রাজিলের কাছেই হারাল জার্মানি
২০১৪ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালটা হয়ত ভোলা হয়নি, তবুও একটা সান্ত্বনা পেতেই পারে ব্রাজিল। ২২ ম্যাচ ধরে অপরাজিত বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি, সবশেষ হারটা ইউরোতে ফ্রান্সের বিপক্ষে। হারের স্বাদটা তো একরকম ভুলেই গিয়েছিল তারা। সেটাই আজ মনে করিয়ে দিল ব্রাজিল, তাও আবার জার্মানদের মাঠেই। প্রীতি ম্যাচে জার্মানিকে ১-০ গোলে হারিয়েছে ব্রাজিল।
বার্লিনে ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন এনেছিলেন জার্মান কোচ জোয়াকিম লো। স্পেনের বিপক্ষে ম্যাচের ৭ জনই ছিলেন না আজ। অন্যদিকে তিতের দল ছিল প্রায় অপরিবর্তনীয়, ডগলাস কস্তার জায়গায় শুধু নেমেছিলেন ফার্নান্দিনহো। জার্মানির ৭ বদলের ভেতর ছিলেন গোলরক্ষক কেভিন ট্র্যাপও। ৩৭ মিনিটে নতুন নামা গোলরক্ষকের ভুলেই গোল খেয়ে বসে জার্মানি। ডান দিক থেকে আসা উলিয়ানের ক্রস থেকে হেড করেছিলেন গ্যাব্রিয়েল হেসুস। প্রথমে ঠেকিয়ে দিলেও শেষ রক্ষা করতে পারেননি ট্র্যাপ। হেসুস অবশ্য গোল করার আরও ভালো সুযোগটাই হাতছাড়া করেছিলেন এর কিছুক্ষণ আগে। গোলবার প্রায় ফাঁকা পেয়েও তখন শট করেছিলেন ওপর দিয়ে, মিনিট খানেক পরেই গোল করে সেই আফসোস ভুলেছেন। সাথে এগিয়ে দিয়েছিলেন ব্রাজিলকেও।
ম্যাচের শুরু থেকেই অবশ্য জার্মানদের চাপেই রেখেছিলেন ফিলিপ কুতিনিয়ো, উইলিয়ানরা। প্রথমার্ধে জার্মানিও গোলের সুযোগ তৈরি করছিল বেশ কয়েকবার। ডান দিক দিয়ে জশুয়া কিমিখ আর লিওন গোরেতস্কা বেশ কয়েকটি ভালো ক্রস করেছিলেন স্ট্রাইকার গোমেজকে, ড্রাক্সলারও বল বানিয়ে দিয়েছিলেন ইলকায় গুন্ডোয়ানকে- কিন্তু কেউই কাজে লাগাতে পারেননি সুযোগগুলো।
বিরতির পর আক্রমণে আরও ধার বাড়ায় ব্রাজিল। দ্বিতীয় গোলটাও মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু আক্রমণভাগে পাওয়া সুযোগগুলো গোলে পরিণত করতে পারেনি ব্রাজিল। ৫৫ মিনিটে দারুণ এক আক্রমণে ডিবক্সের ভেতর থেকে শট করেছিলেন উইলিয়ান, সেই শট ফেরত আসে অ্যান্টোনিও রুডিগারের গায়ে লেগে। সেখান থেকেই ভালো জায়গায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন পাওলিনিয়োও, কিন্তু তার নেওয়া শট চলে যায় বাইরে দিয়ে। এর কিছুক্ষণ পর কুতিনিয়োও শট করেছিলেন ডিবক্সের বাইরে থেকে, তিনিও গোলরক্ষকের পরীক্ষা নিতে ব্যর্থ হন। ব্রাজিলের আক্রমণের তুলনায় তখন পর্যন্তও নিষ্প্রভই ছিল জার্মান আক্রমণভাগ। ম্যাচের ঘন্টা খানেক পেরুতেই তাই তিনজন বদলি করে দলে পরিবর্তন আনেন জোয়াকিম লো।
অবশ্য তাতেও খুব বেশি সুবিধা করতে পারছিল না জার্মানরা। ৬৮ মিনিটে উলটো আরও একবার পিছিয়ে যেতে পারত তারা। ভুলটা করেছিলেন গোলরক্ষক ট্র্যাপই। ব্রাজিলের নেওয়া কর্নার কিক ঠেকাতে বারপোস্ট খালি রেখেই সামনের দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন। অবশ্য সে দফায় বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি, হেসুসের নেওয়া হেড চলে যায় বাইরে দিয়ে। পুরো ম্যাচেই বেশ কয়েকবার ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন হেসুস, তবে জার্মান রক্ষণ দুর্গ ভেঙে গোলের সংখ্যাটা বাড়িয়ে নিতে পারেননি। কখনও বা সঙ্গীর অভাবেই থামতে হয়েছে তাকে।
৭০ মিনিটের পর আক্রমণে ধার বাড়িয়েছিল জার্মানিও। তবে সান্দ্রো ওয়াগনারকে বিপদের কারণ হয়ে উঠতে দেননি থিয়াগো সিলভা, মিরান্ডারা। ৮১ মিনিটে টিমো ভেরনারকে নামিয়েও গোলের দেখা পাননি লো। ম্যাচের একেবারে শেষদিকে দারুণ এক শট করেছিলেন হুলিয়ান ড্রাক্সলার, কিন্তু তখন বাধা হয়ে দাঁড়ান ব্রাজিল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার।