• চ্যাম্পিয়নস লিগ
  • " />

     

    দুই আত্মঘাতী গোলে রোমার বিপক্ষে বার্সার বড় জয়

    দুই আত্মঘাতী গোলে রোমার বিপক্ষে বার্সার বড় জয়    

    কোয়ার্টার ফাইনালের ড্রয়ের পর বার্সেলোনা হয়তই খুশিই হয়েছিল রোমাকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়ে। প্রথম লেগ ন্যু ক্যাম্পে হওয়ায় জয়টাও অনুমিতই ছিল বার্সার। ন্যু ক্যাম্পে হয়নি কোনো অঘটনও।  রোমার বিপক্ষে ৪-১ গোলের বড় জয় পেয়েছে বার্সেলোনা। সঙ্গে সেমিফাইনালের টিকেটটাও প্রায় নিশ্চিতই করে ফেলল এর্নেস্তো ভালভার্দের দল। কাতালানদের হয়ে গোল করেছেন জেরার্ড পিকে এবং লুইস সুয়ারেজ, অন্য গোল দুটি আত্মঘাতী। রোমার একমাত্র গোল করেছেন এডিন জেকো।

     

    নিজেদের মাঠে শুরু থেকেই রোমাকে চেপে ধরেছিল বার্সা। ৭ মিনিটে রোমার জালে বলও পাঠিয়েছিল বার্সা। আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার পাস থেকে লুইস সুয়ারেজ লক্ষ্যভেদ করলেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয় গোলটি। সুয়ারেজের গোল বাতিলের মিনিট তিনেক পরই পেনাল্টির জোর আবেদন তুলেছিল রোমা। ১০ মিনিটে বার্সা ডিবক্সে এডিন জেকোকে স্যামুয়েল উমতিতি ফেলে দিলেও পেনাল্টির বাঁশি দেননি রেফারি। বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ডাগআউটে কোচ, বদলি ফুটবলারদের সাথে দর্শকসারি থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন রোমা কিংবদন্তী ফ্রানসেস্কো টট্টিও। ম্যাচের ১৭ মিনিটে নিজেদের মাঠে রোমা সমর্থকদের মতই অসন্তোষ প্রকাশে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বার্সা সমর্থকেরাও। তবে তাদের এই প্রতিবাদ কোনো বিতর্কিত ফুটবলীয় সিদ্ধান্তের কারণে নয়, স্প্যানিশ সরকারের কাছে কারাবন্দী কাতালান স্বাধীনতার পক্ষে থাকা নেতাদের জামিনের জন্য। প্রায় এক মিনিট জোর স্লোগানে এবং মাঠে হলুদবর্ণের বেলুন ছুঁড়ে রেফারিকে খেলা বন্ধ রাখতে রীতিমত বাধ্যই করেন বার্সা সমর্থকেরা। বিরতি দিয়ে খেলার শুরুর পর থেকেই কেমন যেন খাপছাড়া হয়ে পড়ে বার্সা। মাঝমাঠে ফিলিপ কুতিনিয়ো বা আক্রমণভাগে উসমান ডেম্বেলের অভাবটা বেশ ভালমতই টের পেয়েছে কাতালানরা। তবে একেবারে খালি হাতে প্রথমার্ধ শেষ করতে হয়নি বার্সাকে। ৩৮ মিনিটে মেসির উদ্দেশ্যে ইনিয়েস্তার পাস ক্লিয়ার করতে গিয়ে বল নিজেদের জালে ঠেলে দেন রোমা অধিনায়ক ড্যানিয়েল ডি রসি।

     

     

    লিড নেওয়ার পর আর পেছনে ফিরে তাকায়নি বার্সা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই স্বরূপে ফিরতে থাকেন মেসি-সুয়ারেজরা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে প্রথম সুযোগটা পেয়েছিল রোমাই। ৪৮ মিনিটে গোলের সামনে থেকে ডিয়েগো পেরোত্তির হেড গোলের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে গেলে সে যাত্রায় বেঁচে যায় বার্সা। এর মিনিট সাতেক পর আবারও এক আত্মঘাতী গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বার্সা। ৫৫ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে ইভান রাকিটিচের ক্রস ক্লিয়ার করতে গিয়ে বল নিজেদের জালে ঠেলে দেন ডিফেন্ডার কস্তাস মানোলাস। এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে মেসির (৬) পর বার্সার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা আত্মঘাতী গোলই (৫)! দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে রীতিমত দিশেহারাই হয়ে পড়ে রোমা। এই সুযোগে ৫৯ মিনিটে ব্যবধান ৩-০ করে বার্সা। এবার অবশ্য কোনো আত্মঘাতী গোলের সাহায্যে নয়, বরং ডিফেন্ডার পিকের গোলে উল্লাসে মাতে বার্সা। বাঁপ্রান্ত থেকে সুয়ারেজের শট দারুণভাবে ফিরিয়ে দেন রোমা গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার। ফিরতি বলে গোলের সামনে থেকে ডানপায়ের আলতো টোকায় লক্ষ্যভেদ করেন পিকে।

    ৩-০ গোলে লিড নিয়ে কিছুটা গা ছাড়া খেলা খেলতে থাকে বার্সা। এই সুযোগে আরেকটু হলেই ম্যাচে ফিরতে পারত রোমা। বল নিয়ে ডিবক্সের বাইরে বেরিয়ে আসা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টার স্টেগানের ভুলে ডানপ্রান্তে বল পান আলেসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জি। ইতালিয়ান রাইটব্যাকের ক্রসে ডিবক্সে বল পান উইঙ্গার ডেফ্রেল। গোললাইনে তখন কেবল পিকে। কিন্তু ডেফ্রেলের শট ডিবক্সে ঢুকেই ক্ষীপ্রগতিতে লাফিয়ে বাঁচিয়ে দেন টার স্টেগান। তার ভুলে প্রায় গোল খেতে বসলেও দুর্দান্ত এক সেভে পুরো ক্যাম্প ন্যুর প্রশংসায়ই ভিজেছেন এই জার্মান গোলরক্ষক। তবে এর মিনিট দুয়েক পর আর শেষরক্ষা হয়নি। ৮০ মিনিটে পেরোত্তির পাস থেকে রোমার হয়ে 'অ্যাওয়ে' গোল করেন জেকো। কিন্তু 'অ্যাওয়ে' গোল আদায়ের খুশিটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি রোমার। ৮৭ মিনিটে ডেনিস সুয়ারেজের ক্রস ফেদেরিকো ফাজিওর পায়ে লেগে আসে সুয়ারেজের পায়ে। বাঁপায়ের জোরাল শটে অ্যালিসনকে পরাস্ত করেন 'এল পিস্তোলেরো'। গত বছর পিএজির বিপক্ষে স্মরণীয় দ্বিতীয় লেগের প্রায় এক বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগে গোল করলেন সুয়ারেজ।

    আগামী মঙ্গলবার স্তাদিও অলিম্পিকোতে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় লেগ।