"শতাব্দীর সেরা ডাকাতি", নাকি "পেনাল্টি"?
জুভেন্টাসের মাদ্রিদ সফরের আগে লা গাজাত্তে দেল্লো স্পোর্ট শিরোনাম ছেপেছিল, "যদি বিশ্বাস না করো, তাহলে ভ্রমণ করারই দরকার নেই।" মাদ্রিদে জুভেন্টাস বিশ্বাস করেই গিয়েছিল, মাঠের খেলাতেই সেই প্রমাণ মিলেছে। কিন্তু শেষ মুহুর্তের পেনাল্টিতে শেষ পর্যন্ত ৪-৩ গোলে হেরেই বাদ পড়েছে জুভেন্টাস। আর ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদকে নিয়ে গেছেন সেমিফাইনালে।
কিন্তু একই ঘটনা দুইরকম মনে হয়েছে ইতালি আর স্পেনের সংবাদমাধ্যমের কাছে। দুই দেশের বহুল পঠিত সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম ছিল কেমন?
মার্কা (স্পেন) : "এটা পেনাল্টি ছিল!"
"৯২ মিনিটে লুকাস ভাসকেজকে বেনাতিয়া ফেলে দেওয়ার পর রেফারির পেনাল্টির সিদ্ধান্তে স্বস্তি ফিরে পায় মাদ্রিদ। চার মিনিট লেগেছিল রোনালদোর শটটা নিতেই। এবং সে মিস করেনি। এরকম পরিস্থিতিতে সে মিস করে না।"
"জুভের প্রতিবাদে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বুফন। পরে দেখলেন লাল কার্ড। উত্তেজনার মধ্যেও মাঠ ছাড়ার সময় মাদ্রিদ ফেইথফুলদের কাছ থেকে করতালিই পেয়েছেন তিনি। ক্রিশ্চিয়ানোর পায়ের ওপরই সব নির্ভর করছিল সব। ক্রিশ্চিয়ানো গোল দিল। জুভে বীরত্বের সঙ্গেই হারল। একটা কাজই তারা ঠিকঠাক করতে পারেনি, ইউরোপিয়ান কাপে মাদ্রিদের জালে ছয় গোল দিতে হয়!"
এএস (স্পেন) : আতঙ্কিত হয়েও সেমিফাইনালে!
"পেনাল্টির পর একেবারেই পাগল হয়ে গিয়েছিল পুরো জুভেন্টাস। অলিভার বুফনকে লাল কার্ড দেখিয়েছেন। শেষটা এর চেয়ে বাজে হতে পারত না বুফনের। ক্রিশ্চিয়ানোই সেমিফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেছেন। মাদ্রিদের আতঙ্ক শেষ হয়েছে জুভেন্টাসের স্নায়ুচাপে। বার্নাব্যুতে ম্যাচ শেষে ছিল ক্ষত আর পরের ম্যাচের জন্য শিক্ষা।"
দিয়ারিও স্পোর্ট (স্পেন, বার্সেলোনা) : শতাব্দীর সেরা ডাকাতি
"বছরের পর বছর একই ঘটনা। পেনাল্টি, লাল কার্ড, অফসাইড- আবারও। বিতর্ক আর স্ক্যান্ডাল আরও একবার ইউরোপে সঙ্গী রিয়াল মাদ্রিদের। এই মৌসুমে ভ্যালেন্সিয়া তাদের বিপক্ষে তিনবার পেনাল্টি পেতে পারত, সার্জিও রামোসের হাতে বল লাগার পরও ডর্টমুন্ডে গোলশূন্য থাকা অবস্থা থাকা ম্যাচে রেফারি পেনাল্টি দেননি, সেই ম্যাচে অফসাইডে থেকেও রোনালদোর গোলে ৩-১ এ জিতেছিল রিয়াল। মাদ্রিদ-পিএসজি ম্যাচে রোনালদোর ফাউল দেননি রেফারি। ম্যাচ তখন ১-১ এ ছিল। এভাবেই মাদ্রিদ জেতে! "
লা গাজাত্তে দেল্লো স্পোর্ট (ইতালি) : রাগান্বিত জুভে, রাগ আর গর্ব
"না, একরম হতে পারে না। মাদ্রিদের রাতটা সবসময়ই রাগ আর আফসোসের হয়ে থাকবে। আফসোসটা স্বপ্নের জন্য, যেটা হারিয়ে গেছে শেষ মুহুর্তের এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে লাল কার্ড দেখেছেন বুফন, বার্নাব্যুতে তখন ভয় চেপে বসেছিল। বাদ পড়ার ভয়, যেটা ম্যাচের আগে কেউ চিন্তাই করেনি। আফসোসটা থাকবেই, জুভেন্টাস অসম্ভবটাই সম্ভব করতে যাচ্ছিল।
টুট্টো স্পোর্ট (ইতালি) : এভাবে না! অসাধারণ জুভে বাদ!
"ফিরে আসা হলো না। রোমার মতো কিছু করা হলো না। কিন্তু মাদ্রিদে কাছাকাছিই গিয়েছিল, ৯৭ মিনিটের পেনাল্টিতে কপাল পুড়েছে তাদের। ৩-০ তে পিছিয়ে থেকেও যেভাবে খেলেছে তাতে অ্যালেগ্রির দলের একটা ধন্যবাদ প্রাপ্যই হয়ে গেল।"
কোরিয়েরে দেল্ল স্পোর্ট (ইতালি) : এ কেমন ডাকাতি!
"পেনাল্টির অস্তিত্বই ছিল না। ৯১ মিনিটে ওই সিদ্ধান্তেই ৩-১ এ জিতে গেল রিয়াল মাদ্রিদ, লাল কার্ড দেখেছন বুফন। রেফারি ছিল ভয়াবহ বাজে!"