• কোপা আমেরিকা
  • " />

     

    নেইমারকেই ছাড়াই এগিয়ে যাচ্ছে ব্রাজিল

    নেইমারকেই ছাড়াই এগিয়ে যাচ্ছে ব্রাজিল    

    জগৎ আসলেই খুব রহস্যময়।

     

    এই যেমন সেদিনও ব্রাজিল আর কলম্বিয়ার খেলায় কত কিছুই না হলো। ব্রাজিলকে হারালো কলম্বিয়া। নেইমার আর বাক্কার লাল কার্ড, মারামারি, ধাক্কাধাক্কি। অথচ আজ তাঁদেরকেই সাহায্যের জন্য হাত পাততে হল ব্রাজিলের কাছে।

     

    খেলা শুরুর আগে গ্রুপ ‘সি’র হিসাবনিকাশ ছিল অত্যন্ত জটিল। গ্রুপের চার দলেরই পয়েন্ট ছিল ৩ করে। তবে সবচেয়ে নাজুক অবস্থা ছিল বোধহয় কলম্বিয়ার। এর পিছনে তাঁদের নিজেদের দায়ও কম নয়। প্রথম ম্যাচে ভেনেজুয়েলার কাছে হেরে ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিলো তাঁরা। পরের ম্যাচে ব্রাজিলকে হারালেও গোল ব্যবধানে সবার পিছনে ছিল কলম্বিয়া। আজ পেরুর সাথে জিতলেই কোয়ার্টার নিশ্চিত হয়ে যেতো তাঁদের। কিন্তু রিকার্ডো গ্যারেকা’র শিষ্যরা জয় পেতে দেয়নি ফ্যালকাও-হামেসদের। তাই শেষ পর্যন্ত ড্র করে ব্রাজিলের দিকেই তাকিয়ে থাকতে হয় কলম্বিয়াকে।

     

    অন্যদিকে জিতলে তো বটেই, এমনকি ড্র করলেও আর চিন্তা ছিল না ব্রাজিলের। প্রতিপক্ষ ভেনেজুয়েলা এই টুর্নামেন্টের প্রথম থেকেই ছুটছিলো। মাঝে পেরুর কাছে হোঁচট খেলেও ব্রাজিলকে ছেড়ে কথা বলবে না এই পণ করেছিলো তাঁরা। তবে ব্রাজিলের আসল প্রতিপক্ষ  ছিল বোধহয় নেইমার না থাকা। নেইমারবিহীন ব্রাজিল আদৌ প্রথম রাউন্ডের বাধা পার হতে পারবে কিনা প্রশ্ন ছিল এটাই।

     

     

    খেলা শুরুর ১০ মিনিটের মধ্যে ব্রাজিলকে লিড এনে দেন ‘আনসাং হিরো’ থিয়াগো সিলভা। কর্নার থেকে গোল করার পরে তিনি গ্যালারীতে বসে থাকা নেইমারের দিকে হাত তুলে কি বোঝাতে চাইলেন? “বন্ধু, টেনশন নিও না। আমি আছি তো।” পুরো ম্যাচেই অসাধারণ খেলেছেন এই ডিফেন্ডার। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হতে তাই কষ্ট হয়নি মোটেও।

     

     

    সেকেন্ড হাফ শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন রবার্টো ফিরমিনো। ব্রাজিলের সামনে ভেনেজুয়েলাকে তখন অসহায় দেখাচ্ছে। কিন্তু খুব তাড়াতাড়িই নিজেদেরকে গুছিয়ে নেয় তাঁরা। মুহুর্মুহু আক্রমণ চালাতে থাকে ব্রাজিল ডিফেন্সে। এর ফল তাঁরা পায় ৮৪ মিনিটে। ফ্রিকিক থেকে নেওয়া শট ঠেকাতে পারলেও মিকু’র হেড ফেরাতে পারেননি জেফারসন। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে আরেকটি গোল পেয়েই যাচ্ছিলো ভেনেজুয়েলা। মিকু আরেকবার হেড করতে পারলে বদলে যেতো সি গ্রুপের সমস্ত সমীকরণই।

     

    দুঙ্গার সমস্যাটা কি বোঝা যাচ্ছে না। থিয়াগো সিলভার মতো একজন বর্ন লিডারকে বাদ দিয়ে আজ তিনি অধিনায়কের আর্মব্যান্ড তুলে দিলেন মিরান্ডার হাতে। ডেভিড লুইজকে তিনি নামালেন সেকেন্ড হাফে। এই ধরণের খামখেয়ালীর কোন মানে হয়?

     

    নকআউট পর্বের ফিক্সচার চূড়ান্ত হয়ে গেছে এরই মধ্যে। কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল খেলবে বি গ্রুপের রানার্সআপ গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনার কাছ থেকে পয়েন্ট ছিনিয়ে নেওয়া ‘গতিময়’ প্যারাগুয়ের সাথে। একটা বড় পরীক্ষাই দিতে হবে ব্রাজিলকে।

     

    অন্য ৩ কোয়ার্টারে চিলি লড়বে উরুগুয়ের বিপক্ষে, পেরু মুখোমুখি হবে বলিভিয়ার এবং আর্জেন্টিনা খেলবে কলম্বিয়ার সাথে।

     

    জমজমাট ৪টি ম্যাচ হতে যাচ্ছে। অপেক্ষা শুধু এখন নকআউট পর্বের।