শিল্পময় 'পায়ের কারুকার্য'
“একজন ব্যাটসম্যানের ‘ফুটওয়ার্ক’ হতে হবে ঠিক একজন বক্সারের মত”- নিউজিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মার্টিন ক্রোর খুব পছন্দের একটি উক্তি। ‘কাজের চেয়ে কথা বেশি’-র এই সময়ে অনেকেই অনেক কিছু বলেন বটে, ক’জনই বা কাজ করে দেখিয়ে মন্তব্য করেন? মার্টিন ক্রো এক্ষেত্রে উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। ‘ফুটওয়ার্ক’-এর কথা উঠলে এখনও ক্রিকেট বিশ্লেষকরা ফিরে যান ১৯৯২-এর বিশ্বকাপে। সেবার অসাধারণ অধিনায়কত্বে নিউজিল্যান্ডকে শুধু সেমিফাইনালেই তোলেননি ক্রো, হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও। তবে সবকিছু ছাপিয়ে মনে দাগ কেটে গিয়েছিল তাঁর যে বৈশিষ্ট্য, তা হল অনন্যসাধারণ ‘ফুটওয়ার্ক’।
অস্ট্রেলিয়ার সাথে ‘আসর উদ্বোধক’-টার কথাই ধরা যাক। সময়ের সাথে সাথে অকল্যান্ডের ইডেন পার্কের উইকেটটা সেদিন ধীর থেকে ধীরতর হচ্ছিল। বল উঠছিল না একেবারেই। ১৩ রানে ২ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর উইকেটে আসেন ক্রো। ৫৩ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর কেন রাদারফোর্ডকে নিয়ে দাঁড়িয়ে যান তিনি। ১১৮ রানের এ জুটির সুবাদেই ২৪৮ রানের বড় সংগ্রহ পায় কিউইরা, যেটার উপর ভিত্তি করে হারিয়ে দেয় আগের আসরের চ্যাম্পিয়নদের।
ঠিক ১০০ রানের হার না মানা ইনিংসে ক্রো খেলেন দর্শনীয় কিছু শট। ব্যাকফুটে গিয়ে অনায়াস দক্ষতায় ‘শর্ট অব লেংথ’ বলগুলোকে যেমন অন-সাইড দিয়ে সীমানাছাড়া করছিলেন, ফুলারগুলোকে খেলছিলেন ‘ডাউন দ্য উইকেট’-এ এসে। তবে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে তাঁর পুলগুলো। পেসার কিংবা স্পিনার- সবাইকেই খেলছিলেন কোন প্রভাব বিস্তার করতে না দিয়ে। বরং পায়ের ক্ষিপ্র কারুকার্যে কিছুক্ষণ পরপরই বোকা বানাচ্ছিলেন অসি বোলারদের। সে আসরে এরপর আরও চারটি অর্ধশত রানের ইনিংস আসে তাঁর ব্যাট থেকে। টুর্নামেন্ট শেষে ক্রোর রানের গড় কত ছিল জানেন? ১১৪!