• লা লিগা
  • " />

     

    প্লেয়ার রেটিং : এল ক্লাসিকোতে কে কত?

    প্লেয়ার রেটিং : এল ক্লাসিকোতে কে কত?    

    ন্যু ক্যাম্পের এল ক্লাসিকোতে ২-২ গোলে ড্র করেছে বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ। দশ জনের দলের বিপক্ষে আর শেষ পর্যন্ত জেতা হয়নি জিনেদিন জিদানের দলের। রেফারিও অবশ্য কেড়ে নিয়েছেন ম্যাচের শিরোনাম। তবে ঘরের মাঠে হার এড়িয়ে বার্সেলোনা এগিয়ে যাচ্ছে অপরাজিত হয়ে মৌসুম শেষ করার পথেই।

    বার্সেলোনা

    মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগান, ৭

    ২৬ মিনিটে গুরুত্বপুর্ণ সেভটা করতে হয়েছিল। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে ওয়ান অন ওয়ানে নিজের শরীর ছড়িয়ে দিয়ে দারুণ এক সেভ করে দলকে ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছিলেন। রিয়ালের প্রথম আর দ্বিতীয় গোলে তার করার মতো তেমন কিছুই ছিল না। গোলকিক থেকে নিজের খেলোয়াড়দের পাস দিয়ে বিল্ড আপ করার সুযোগ কমই পেয়েছেন আজ। লং বলে তেমন স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলেন না। 

    সার্জি রবার্তো, ৫

    লাল কার্ড দেখে বার্সেলোনাকে বিপদে ফেলে না গেলে হয়ত প্রথমার্ধের বিচারে ৯  পেতেন বার্সা রাইটব্যাক। প্রথমার্ধে বেশ কয়েকবার উইং ধরে আক্রমণে উঠেছিলেন। বার্সার প্রথম গোলে তার অবদানটাই বেশি। এরপরেও ক্রস করেছিলেন, কিন্তু সেগুলো গোলের মুখ দেখেনি। বিরতির ঠিক আগেই মার্সেলোকে আঘাত করে লাল কার্ড দেখেন। সেটা নিয়ে অবশ্য বিতর্ক থাকতে পারে।  তবে পরিস্থিতি আরও শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করার সুযোগ ছিল তার কাছে।

    জেরার্ড পিকে, ৭
    খেলার শেষদিকে শুন্যে লাফিয়ে দারুণ এক ক্লিয়ার করেছিলেন। বলটা এগুচ্ছিলেন ফাঁকায় দাঁড়ানো বেনজেমার দিকেই। দশ জনের দলকে রক্ষা করেছেন নিখুঁত রক্ষণ করে। বেশ কয়েকবার ওপরে উঠে গিয়ে দলকে আক্রমণেও সাহায্য করেছেন।

    স্যামুয়েল উমতিতি, ৬
    প্রথমার্ধে রোনালদোকে সামলাতে হিমশিম খেয়েছেন। পিকের সঙ্গে ছন্দ ধরেও রাখতে পারেননি নিজের খেলায়।

    জর্দি আলবা, ৪
    পুরো ম্যাচে নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন। আক্রমণে বলের দখল পাননি তেমন, তাই সাহায্যও করতে পারেননি দলকে। রক্ষণে বেশ কয়েকবার ভুল করেছেন। গ্যারেথ বেলের দ্বিতীয় গোলে তার সঙ্গে গতি আর শক্তির কাছে হেরেছেন। তবে আরও বড় বিপদের কারণ হতে পারতেন দলের জন্য। সেদিক দিয়ে আলবা আজ ছিলেন ভাগ্যবান। প্রথমার্ধে মদ্রিচের গলা ধরে বসার অপরাধে দেখতে পারতেন লাল কার্ড। পরের অর্ধে মার্সেলোকে ফাউল করেছিলেন ডিবক্সের ভেতর। রিপ্লে দেখে পেনাল্টি মনে হলেও, সে যাত্রাও বেঁচে গেছেন আলবা।

    ইভান রাকিটিচ, ৭
    বার্সার মাঝমাঠ আর আক্রমণে সেতুবন্ধনের কাজটা করেছেন ভালোভাবেই। দশজনের দলে পরিণত হওয়ার পর মাঝমাঠে বেশকিছু বলও জিতেছিলেন রিয়ালের কাছ থেকে। 



    সার্জিও বুস্কেটস, ৬
    নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি আজ। রিয়ালের প্রথম গোলেও তার দায় আছে কিছুটা। মাঝমাঠ খালি রেখে অনেকদূর ওপরে উঠে গিয়েছিলেন বল প্রেস করতে। পরে ফাঁকা জায়গা কাজে লাগিয়ে আক্রমণে উঠেছিল রিয়াল। নিজের পজেশনে আর ফেরতই আসার সুযোগ পাননি বুস্কেটস। 

    আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা, ৬

    নিজের শেষ এল ক্লাসিকো খেলে ফেলেছেন আজ। ৫৮ মিনিটে বদলি হওয়ার আগ পর্যন্ত মাঝমাঠে বলের দখল বজায় রাখতে লড়াই করতে হয়েছে তাকে। শুরুতে স্বভাবসুলভ খেলাটা খেললেও সময়ের সঙ্গেই মিলিয়ে গেছে সেটা। 

    ফিলিপ কুতিনিয়ো, ৫

    রাইট মিডফিল্ডে সুবিধা করতে পারেননি একেবারেই। সমন্বয়ের অভাবও ছিল খেলায়। অবশ্য নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ অল্প সময়ের জন্যই পেয়েছিলেন। দশ জনের দলে পরিণত হওয়ায় তাকে বদলি করেই একজন ডিফেন্ডার নামিয়েছিলেন এর্নেস্তো ভালভার্দে। 

    লুইস সুয়ারেজ, ৮
    রিয়ালের রক্ষণে সবরকম অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়িছিলেন। এল ক্লাসিকোতে গোল পেয়েছেন আবারও। বার্সার দ্বিতীয় গোলের অ্যাসিস্টও তার করা।

    লিওনেল মেসি, ৮ 
    দ্বিতীয়ার্ধে বার্সার হয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোলটা করেছেন। মাঝমাঠ থেকে ড্রিবলিং আর ভালোকিছু পাস দিয়ে বেশ কয়েকবারই রিয়ালের রক্ষণে ভীতি ছড়িয়েছিলেন। তবে কেইলর নাভাসের সঙ্গে ওয়ান অন ওয়ানে দুইবারই ব্যর্থ হয়েছেন।  

    বদলি

    নেলসন সেমেদো, ৭
    দ্বিতীয়ার্ধে রবার্তোর জায়গায় নেমে দলের রক্ষণের হাল ধরেছেন। ডানদিক দিয়ে বেশ কয়েকবার আক্রমণেও দলকে সাহায্য করেছেন। দলের হার এড়ানোয় তার অবদানও কম নয়।

    পলিনিয়ো, ৬
    মাঠে নেমেই গোল করতে পারতেন। কিন্তু ডানদিক থেকে আসা ক্রসে অল্পের জন্য পা ছোঁয়াতে পারেননি। বল ধরে রাখার দায়িত্বটা পালন করেছেন, তবে সেই কাজে তাকে ভঙ্গুর মনে হয়েছে বেশ কয়েকবার।

    পাকো আলকাসের
    ইনজুরি সময়ে নেমেছিলেন। করার মতো তেমন কিছুই ছিল না তার।

     





    রিয়াল মাদ্রিদ

    কেইলর নাভাস, ৮
    আরও একবার দুর্গ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রিয়ালের গোলবারের নিচে। দুইবার মেসিকে গোলবঞ্চিত করেছেন। আরেকবার নেয়ারপোস্টে মেসির নেওয়া জোরালো শট ঠেকিয়েছেন।

    নাচো ফার্নান্দেজ, ৫
    রক্ষণে নিজের কাজটা ভালোমতোই করেছেন। কিন্তু রাইটব্যাক না হওয়ায় দলকে আক্রমণে সাহায্য করতে পারেননি। প্রথমার্ধে হলুদ কার্ডও দেখেছেন। দশজনের দলের বিপক্ষেও আক্রমণে দলকে সাহায্য করতে না পারায় পরে বদলিও হয়েছেন ৬৮ মিনিটে।

    সার্জিও রামোস, ৬
    মাথা ঠান্ডা রেখেই খেলেছেন পুরো ম্যাচ। রক্ষণে তেমন কোনো ভুল করেননি।

    রাফায়েল ভারান, ৭
    দুই দলের সেরা ডিফেন্ডার ছিলেন ভারানই। খেলার শুরুতেই সুয়ারেজের শটে গুরুত্বপুর্ণ এক ব্লক করেছিলেন। বার্সার দ্বিতীয় গোলে অবশ্য তার কপালটা মন্দই বলতে হবে। সুয়ারেজের কাছেই ফাউলের শিকার হয়েছিলেন। তবে অবিশ্বাস্যভাবে রেফারির চোখ এড়িয়ে গেছে সেইই ঘটনা! 

    মার্সেলো, ৬
    বাঁ প্রান্ত দিয়ে আজ নিখুঁত ক্রসগুলো করতে পারেননি। বিশেষ করে প্রথমার্ধে বেশ কয়েকবার সুযোগ ছিল, নিজের খেলায় দিনশেষে হতাশই হবেন মার্সেলো।

    লুকা মদ্রিচ, ৭
    শুরুর ধাক্কা সামলে নিতে লুকা মদ্রিচের অবদান ছিল অনেকটাই। রিয়ালের পায়ে বল থাকা অবস্থায় খেলার নিয়ন্ত্রণ করেছেন। মাঝমাঠ থেকে আক্রমণে পাস ডিস্ট্রিবিউশনও ছিল দারুণ। 


    টনি ক্রু্‌স, ৬.৫ 
    প্রথমে কিছুটা নীরবই ছিলেন। পরে রিয়াল মাদ্রিদকে ম্যাচে ফেরানোর দায়িত্বটা অবশ্য ভালোভাবেই পালন করেছিলেন। ১৪ মিনিটে রিয়ালের প্রথম গোলে ডিবক্সের ভেতর ক্রসটা জার্মান মিডফিল্ডারেরই করা ছিল। তবে পুরো ম্যাচ একই তালে খেলতে পারেননি। ছন্দপতন হয়েছে বেশকয়েকবার। 

    কাসেমিরো, ৭
    বার্সেলোনার পাস আটকে দেওয়ার কাজটা ভালোভাবেই করেছেন। লুজ বলে নিজের কর্তৃত্বও বিস্তার করেছেন। আর দশটা দিনের মতোই ভালো একটা ম্যাচই কেটেছে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডারের!



    গ্যারেথ বেল, ৬.
    দলকে সমতায় ফেরানোর কাজটা করেছেন ঠিকই, কিন্তু সেটা বাদে তেমন সুবিধা করতে পারেননি। শুরুটা করেছিলেন বাঁ দিকে। দ্বিতীয়ার্ধে রোনালদো বদলি হওয়ার পর তার জায়গায় খেলেছিলেন। কিন্তু ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পেরেছেন কম সময়েই। তবে প্রথমার্ধে রক্ষণে নেমে এসে দলকে সাহায্য করার কাজটা করেছিলেন ভালো মতোই। অবশ্য শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকতে পারায় তিনিও নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতে পারেন। প্রথমার্ধে উমতিতিকে লাথি মেরেছিলেন, লাল কার্ডই দেখার কথা ছিল তার! তিনিও বেঁচে গেছেন রেফারির সিদ্ধান্তে।

    ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো, ৭.৫
    খেলতে পেরেছেন মাত্র প্রথমার্ধটা। এরপরই বদলি হতে হয়েছে চোট নিয়ে। প্রথম গোলের সময়ই আঘাত পেয়েছিলেন। আজ শুরু থেকেই বার্সার রক্ষণে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন। প্রথমার্ধে আরও অন্তত দুইবার গোল করতে পারতেন। প্রথমবার স্টেগানের কাছে হার মেনেছিলেন। পরেরবার তার শট অল্পের জন্য চলে গেছে বাইরে দিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধে রোনালদো আর মাঠে না নামায় মনে মনে খুশিই হওয়ার কথা বার্সার ডিফেন্ডারদের। 

    করিম বেনজেমা, ৭
    ক্রুসের ক্রসে হেড করে রোনালদোকে গোল করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন বেনজেমাই। নিজে অবশ্য গোলে শট নিতে পারেননি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে বেলের চেয়ে বরং তিনিই ভুগিয়েছেন পিকে, উমতিতিদের।

    বদলি

    আসেনসিও, ৫
    দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রোনালদোর জায়গায় নেমেছিলেন। বাঁ প্রান্ত দিয়ে মার্সেলোর সঙ্গে বোঝাপড়াটা ভালো ছিল না মোটেই। উলটো মাঝে এসে বেলকে গোলের জন্য পাসটা বাড়িয়েছিলেন।

     

    লুকাস ভাজকেজ, ৫.৫ 
    ভাজকেজ নামার পরই দ্বিতীয়ার্ধে বলের দখল ফিরে পায় রিয়াল। ডানদিক দিয়ে এরপরে কয়েকবার আক্রমণেও উঠেছিল তারা।

    মাতেও কোভাসিচ, ৬ 
    মাঠে নেমেছিলেন ৮৪ মিনিটে, তবে দায়িত্বটা পালন করেছেন বাকি সময়ে। মাঝমাঠে সুয়ারেজের কাছ থেকে শেষদিকে বল ছিনিয়ে নিয়ে দলকে আক্রমণে উঠতেও সাহায্য করেছিলেন। শেষদিকে রক্ষণেও দলকে স্বস্তি যুগিয়েছেন।